বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) সুলতানা রাজিয়া হলে প্রাণী উচ্ছেদ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (৫ মে) বিকেল সাড়ে ৪টায় ‘অ্যানিমেল স্যাভিয়ার্স অব বাংলাদেশ’ নামক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের প্রধান ফটকে এই সমাবেশ হয়।
‘ভয়েসলেস, নট ওয়ার্থলেস সেভ ক্যাম্পাস অ্যানিম্যালস!’ এই স্লোগানে মুখর ছিল পুরো সমাবেশ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং প্রাণিপ্রেমী সচেতন নাগরিকরা অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশের প্রেক্ষাপট তৈরি হয় যখন সুলতানা রাজিয়া হল কর্তৃপক্ষ ৪ মে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, “হলের পরিবেশ দূষণ রোধে কুকুর, বিড়াল ও অন্যান্য হিংস্র প্রাণী উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।” আবাসিক শিক্ষার্থীদের এ বিষয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ও ক্যাম্পাসজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। শিক্ষার্থীরা প্রাণীর প্রতি এমন আচরণকে অমানবিক ও আইনবিরোধী হিসেবে আখ্যা দেন।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রস্তাবিত কমিটির আহ্বায়ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাহবুব আলম। তিনি বলেন,
“প্রাণী কল্যাণ আইন ২০১৯ অনুযায়ী কোনো প্রাণীকে অবৈধভাবে উচ্ছেদ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। এমন আচরণ শুধু অমানবিকই নয়, পরিবেশের জন্যও ক্ষতিকর। উচ্ছেদের পরিবর্তে জন্ম নিয়ন্ত্রণ ও টিকাদানের মাধ্যমে কার্যকর ও টেকসই সমাধান সম্ভব।”
কমিটির সদস্য সচিব ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী আল ফারুক বলেন,
“যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেটেরিনারি ও পশুপালন অনুষদ রয়েছে, সেখানে এমন প্রাণীবিরোধী পদক্ষেপ আমাদের জন্য অত্যন্ত লজ্জাজনক।”
বিষয়টি নিয়ে সুলতানা রাজিয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন বলেন,
“প্রকৃতপক্ষে, হলের কোনো একটি ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। আমার অনুপস্থিতিতে হয়তো হলের কোনো দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ওই বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। আমি নিজে নোটিশটির ব্যাপারে জানতাম না। এখন পর্যন্ত প্রাণী উচ্ছেদের কোনো পরিকল্পনা নেই এবং এমন কোনো অভিযান পরিচালিত হবে না।”
তিনি আরও জানান, হলের অভ্যন্তরে শিক্ষার্থীদের মধ্যেই বিভাজন রয়েছে—কেউ কেউ প্রাণীকে আশ্রয় দেয়, কেউ আবার বিরূপ মনোভাব পোষণ করে। এতে সমস্যার উদ্ভব হচ্ছে।