বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করে শিক্ষক সমাজ

- প্রকাশঃ ০৯:৩১:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
- / 57
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের চলমান আন্দোলনের মধ্যে এবার শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে একাত্মতা পোষণ করে বিবৃতি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকদের একাংশ।
শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান দুরবস্থায় উদ্বিগ্ন শিক্ষক সমাজের এই বিবৃতিতে ৪৬ জন শিক্ষকের স্বাক্ষর দেখা যায়। বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান অস্থিরতা ও উপাচার্যের বিভিন্ন ব্যর্থতার উপর আলোকপাত করে শিক্ষার্থীদের দাবিনামার সাথে একাত্মতা প্রকাশের ঘোষণা দেন বিবৃতিতে স্বাক্ষর করা ঐ শিক্ষকরা।
বিবৃতিতে গত বছরের অক্টোবর থেকে এই পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংকট ও স্থবিরত সহ নানা অভিযোগ উত্থাপন করে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা, ২০২৪ সালের গৌরবজনক জুলাই বিপ্লবের পরে বড় আশায় বুক বেঁধেছিলাম, একটি নতুন বাংলাদেশের বিনির্মাণ কার্যক্রমের সাথে তাল রেখে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ও একটি শিক্ষার্থী ও শিক্ষক বান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে শনৈ-শনৈ উন্নতির পথে অগ্রসর হবে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে গত অক্টোবর ২০২৪ থেকে এযাবৎ আমরা লক্ষ্য করছি—
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক বিভাগে মাত্র দুজন/তিনজন শিক্ষক কর্মরত এবং সেগুলোসহ অনেক বিভাগে অনেক শূন্যপদে নিয়োগের বিজ্ঞাপন থাকা সত্ত্বেও এই আট মাসে সেই সকল বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় বিভাগসমূহের পাঠদান ও একাডেমিক কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ছে। অথচ ভিসি মহোদয়া এদিকে কোনো ভ্রূক্ষেপ না করে ঢাকায় নির্বিকার দিনযাপন করছেন। আরও মর্মান্তিক হলো, তিনি শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো উদ্যোগ না নিয়ে বরং একের পর এক বেআইনি ও অবৈধভাবে নিম্ন গ্রেডের বিভিন্ন কর্মচারী পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে যাচ্ছেন। এসব নিয়োগ অবৈধ হওয়ায় তাদের বেতন-ভাতাদি সংক্রান্ত নথি ট্রেজারার মহোদয় অনুমোদন না করায় তাঁর অনুমোদন ছাড়াই ভিসি একক স্বাক্ষরে তা অনুমোদন করছেন এবং তাদেরকে অবৈধভাবে বেতন-ভাতাদি দিচ্ছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. শুচিতা শরমিনের নিয়োগপত্রে তাঁকে সার্বক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে হবে মর্মে বলা হলেও তিনি সপ্তাহে দুয়েকদিন কয়েক ঘণ্টা মাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থান করেন আর বাকি সময় ঢাকায় অবস্থান করেন। তাঁর এই অনুপস্থিতিতে আইনানুযায়ী উপ-উপাচার্যকে দায়িত্ব পালনের সুযোগও তিনি দেন না। বিভাগ থেকে প্রেরিত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা-ভর্তি ইত্যাদি বিষয়ক বিভিন্ন একাডেমিক প্রস্তাব তাঁর দপ্তরে তিন-চার মাস পড়ে থাকে এবং তিনি দেখারও সময় পান না। ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের এক ক্যান্সার আক্রান্ত শিক্ষার্থীর একটি সাহায্যের আবেদন ডিসেম্বর মাস থেকে এপ্রিল মাসে তার মৃত্যুর তারিখ পর্যন্ত ভিসির দপ্তরে পড়ে ছিল, অথচ তিনি খুলেও দেখেননি। এভাবে দাপ্তরিক কর্মকাণ্ডে মারাত্মক জট ও বিপর্যয় দিন দিন বেড়েই চলছে।
প্রতিবেদক: আবদুল্লাহ আল শাহিদ খান