মাভাবিপ্রবিতে ফাঁকা ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য, শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা

ক্যাম্পাস

ঈদের ছুটির ফাঁকা ক্যাম্পাসে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) দিন দিন বাড়ছে বহিরাগতদের অবাধ বিচরণ। এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি চুরি, নিরাপত্তা হুমকি ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রশাসনের নজরদারির অভাব ও অনিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে তারা উদ্বিগ্ন ও অসন্তুষ্ট।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ১ম গেট দিয়ে বাইকসহ বহিরাগতদের বাধাহীন প্রবেশ ঘটছে। শহীদ মিনার, বিজয় অঙ্গণ, হাতির কবর, পুরাতন ছাত্রলীগ কার্যালয়, বুদ্ধিজীবী চত্বর, ক্যাফেটেরিয়া, মুক্তমঞ্চের পেছন এবং সেন্ট্রাল ফিল্ডসহ বিভিন্ন এলাকায় তারা জড়ো হয়ে আড্ডা, টিকটক ভিডিও ধারণ এবং কখনো কখনো মাদকসেবনের মতো কর্মকাণ্ডে জড়াচ্ছেন। ছেলেদের আবাসিক হলসংলগ্ন এলাকাতেও দেখা গেছে অশোভন আচরণ।

গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী সাইদুল হাসান সোহাগ বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মানেই জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র। কিন্তু বহিরাগতদের কারণে এখন ক্যাম্পাস সামাজিক বিশৃঙ্খলার রূপ নিচ্ছে।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাকিব আল হাসান রাব্বি বলেন, এটা যেন বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বরং বহিরাগতদের টিকটক স্টুডিও! নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলতে গেলে অদৃশ্য।

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান রাকিব বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটিতে বহিরাগতদের প্রবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকে, কিন্তু আমাদের এখানে তেমন কিছু নেই। এফটিএনএস বিভাগের শিক্ষার্থী সমাপ্তি খান জানান, নিরাপত্তা কর্মী থাকলেও তাদের নজরদারির অভাবে বহিরাগতদের কর্মকাণ্ড বেড়েই চলেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. ইমাম হোসেন বলেন, আমরা নিয়মিত টহল দিচ্ছি। কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের সহযোগিতাও প্রয়োজন।

নিরাপত্তা শাখার উপ-রেজিস্ট্রার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, আমাদের দিক থেকে দায়িত্বে অবহেলা নেই। বাইক নিয়ে প্রবেশকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তবে আনসার সদস্য সীমিত হওয়ায় সব জায়গায় নজরদারি সম্ভব হচ্ছে না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষক এবং সচেতন মহল উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিরাপদ ও শৃঙ্খল রাখতে প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপ জরুরি। বিশেষ করে ছুটির সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সংখ্যা বাড়ানো এবং গেট নিয়ন্ত্রণ জোরদারের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন তারা।

প্রতিবেদক:মো. জিসান রহমান

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা