মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই শহিদদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও প্রত্যয়

- প্রকাশঃ ০৪:০৪:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
- / 15
টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) ‘জুলাই শহিদ দিবস’ উপলক্ষে এক স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (১৬ জুলাই ২০২৫) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় একাডেমিক ভবনের সেমিনার কক্ষে এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ। তিনি বলেন, আমরা আজ গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি সেইসব শহীদদের, যারা অন্যায়-অবিচার আর দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। তাঁদের আত্মত্যাগ আমাদের জাতীয় বিবেককে নাড়া দেয়, আমাদের দায়িত্ববোধ জাগ্রত করে। শিক্ষাঙ্গন বরাবরই ছিল প্রতিবাদ-প্রতিরোধ আর মুক্তচিন্তার উৎসভূমি। আমাদের তরুণরাই প্রমাণ করেছে, অন্যায়ের কাছে মাথা নত নয় , সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে সোচ্চার থাকাই তাঁদের চেতনা। ২০২৫ সালের সেই আন্দোলনে মাভাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের বলিষ্ঠ ভূমিকা ছিল, যা আমাদের গৌরবময় ইতিহাসের অংশ।
মুখ্য আলোচক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন বলেন, “বিগত সরকার শিক্ষাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক মিছিলে নিয়ে যাওয়া হতো, সারারাত গেস্ট রুমে দাঁড় করিয়ে রাখা হতো। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মানসম্মত শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে না — কারণ সরকার তাদের পছন্দের ভাইস-চ্যান্সেলর ও প্রো-ভিসির মাধ্যমে পছন্দের শিক্ষক নিয়োগ দেন। যোগ্যতা এখানে উপেক্ষিত হয়। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আদর্শ তখনই বাস্তবায়িত হবে, যখন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ্য ও স্বপ্নবাজ শিক্ষক নিয়োগ হবে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন জুলাই শহিদ দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল করিম এবং সদস্য সচিব ছিলেন অধ্যাপক ড. মো. দেলোয়ার জাহান মলয়।
বিশেষ অতিথি হিসেবে শহিদ মারুফের মা উপস্থিত থেকে বলেন, আমার সন্তান যে উদ্দেশ্যে প্রাণ দিয়েছে, সে উদ্দেশ্য যেন বাস্তবায়িত হয় , সরকারের কাছে আমি এই দাবি জানাচ্ছি।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মতিউর রহমান, বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. মহিউদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. ইমাম হোসেন এবং আন্দোলনকারীদের পক্ষে মনিরুল ইসলাম ও আশরাফুল আলম হৃদয়।
আলোচনা শেষে শহীদ মারুফের মায়ের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয়।
আয়োজক কমিটি জানিয়েছে, এই স্মরণসভার মূল উদ্দেশ্য হলো জুলাই শহিদদের আত্মত্যাগকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা এবং তাঁদের আদর্শে অনুপ্রাণিত করা।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।