পর্দা কর্ণারের নামে আমরা পেয়েছি বাঁশের বেড়া — মাভাবিপ্রবির নারী শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

- প্রকাশঃ ০৭:৪৫:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
- / 6
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় নারী শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক, নিরাপদ ও পর্দাবেষ্টিত একটি কর্ণার স্থাপনের দাবিতে দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি অস্থায়ী ‘পর্দা কর্ণার’ স্থাপন করেছে। তবে এই কর্ণারের গঠনতত্ত্ব ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
নারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দাবি ছিল একটি সুরক্ষিত ও সম্মানজনক পর্দা কর্ণারের, কিন্তু বাস্তবে তারা পেয়েছেন বাঁশের তৈরি একটি বেড়া, যা সহজেই সরানো সম্ভব এবং যার ফাঁক গলে বাইরে থেকে ভেতরের দৃশ্য অবলীলায় দেখা যায়। অনেকেই একে প্রহসন ও লোকদেখানো উদ্যোগ বলে মন্তব্য করছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ক্যাফেটেরিয়ার এক পাশে আনুমানিক সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় ফুট উচ্চতার একটি বাঁশের বেড়া ঘিরে ‘পর্দা কর্ণার’ তৈরি করা হয়েছে। তবে এর ভেতরে নেই পর্যাপ্ত জায়গা, নেই ফ্যান বা বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা। নিরাপত্তা ও গোপনীয়তার বিষয়েও রয়েছে প্রশ্ন।
আইসিটি বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজা আরেফীন মিম বলেন,
“আমরা প্রশাসনের কাছে পর্দাশীল নারী শিক্ষার্থীদের জন্য একটি মর্যাদাপূর্ণ, নিরাপদ ও স্থায়ী কর্ণারের দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু যা স্থাপন করা হয়েছে, তা একটি অস্থায়ী কাঠামো মাত্র। ফাঁক গলে সহজেই ভেতরে দেখা যায়, যা আমাদের পর্দার পরিবেশ নিশ্চিত করে না। এটি কার্যকর কোনো সমাধান নয়।”
আরেক শিক্ষার্থী বলেন,
বেসিনে যাওয়ার পথ এমনভাবে রাখা হয়েছে, যে কেউ হেঁটে যাবার সময় সহজেই ভেতরে থাকা কাউকে দেখে ফেলতে পারে। উচ্চতাও এমন, যেকোনো ছেলে দাঁড়িয়ে ভিতরের পুরোটা দেখে ফেলতে পারে। এটা প্রহসন ছাড়া কিছুই না। সাত মাস ধরে চলছে এই প্রহসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ আলী বলেন,
আমার অফিস কেবল জায়গা নির্ধারণ করে। বাস্তবায়ন প্রশাসনের অনুমতির পরেই হয়। আগে এটি ভিসি স্যারের রুমের সামনে ব্যবহৃত হতো, সেখান থেকেই নিয়ে আসা হয়েছে।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ফজলুল করিম জানান,
ফাঁকা জায়গাগুলো আমরা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেবো। নাম নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।
নারী শিক্ষার্থীরা জানান, তারা প্রশাসনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বিষয়টির পূনর্বিবেচনা চান। দাবি বাস্তবায়নে দায়িত্বশীলতা ও সংবেদনশীলতার সঙ্গে একটি নিরাপদ, স্থায়ী, এবং সম্মানজনক ‘পর্দা কর্ণার’ নির্মাণে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তারা।