জুলাইয়ের গ্রাফিতি থেকে সরকারের নিরাপত্তা দুর্বলতা আড়াল করতে চাইছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন

- প্রকাশঃ ০৪:৩১:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫
- / 3
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্রাফিতি মুছে ফেলার নির্দেশে ক্ষোভ | ছবি: প্রজন্ম কথা
জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন টিএসসি ভবনের দেয়ালে আঁকা গ্রাফিতি থেকে মাইলস্টোন স্কুলে বিমান দুর্ঘটনা এবং মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যার অংশ মুছে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অভিযোগ উঠেছে, এসব ঘটনায় বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা ফুটে ওঠায় নীতিনির্ধারক শিক্ষক-কর্মকর্তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিষয়টি ঘিরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য সরকার বলেন, গ্রাফিতি শিল্প প্রতিবাদের শক্তিশালী মাধ্যম। জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালেও আমাদের ক্যাম্পাসে আঁকতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। এখন আবার নিরাপত্তা দুর্বলতা আড়াল করতে অংশবিশেষ মুছে ফেলার নির্দেশ এসেছে। এটি শিক্ষার্থীরা মেনে নেবে না। তিনি সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
গ্রাফিতি আঁকন বিষয়ক উপকমিটির আহ্বায়ক ও ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রায়হানা আক্তার জানান, জুলাইকে কেন্দ্র করে গ্রাফিতি আঁকার সিদ্ধান্ত হলেও নির্দিষ্ট বিষয় বাদ দেওয়ার কোনো নির্দেশনা ছিল না। উদ্বোধনের দিন (৫ আগস্ট) উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব মৌখিকভাবে মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড ও মাইলস্টোন দুর্ঘটনার অংশ মুছে ফেলতে বলেন।
তিনি আরও বলেন, অনুমতির শর্ত থাকলে হয়তো দায়িত্ব নিতাম না। তাহলে তো গত এক বছরে ঘটে যাওয়া অসংখ্য ধর্ষণ ও আত্মহত্যার চিত্রও বাদ দিতে হতো।
এ প্রসঙ্গে উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব মো. অলি উল্লাহ বলেন, যেহেতু গ্রাফিতি জুলাই অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে, তাই প্রশাসন ওই সম্পর্কিত বিষয় রাখার পরামর্শ দিয়েছে। আহ্বায়ক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইমদাদুল হুদা বলেন, মূল বিষয়বস্তু হওয়া উচিত জুলাই অভ্যুত্থান। এর বাইরে অন্য ঘটনা সংযোজন অপ্রাসঙ্গিক হতে পারে, হয়তো সেই কারণেই কিছু অংশ মুছে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এদিকে রবিবার শিক্ষার্থীরা গ্রাফিতি মুছে ফেলার উদ্যোগের প্রতিবাদে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। এতে মুছে ফেলার প্রক্রিয়া বন্ধ করা, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া এবং ভবিষ্যতে বাকস্বাধীনতাবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে প্রশাসনকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়।