সামুদ্রিক রোবোটিক্সে নতুন অধ্যায়: একসাথে মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি ও ডুবোটেক

- প্রকাশঃ ০১:২৫:০৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫
- / 23
রিমোট ভেহিকল, স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম ও বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক সামুদ্রিক প্রযুক্তি উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগ | ছবি: প্রজন্ম কথা
বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি (বিএমইউ) ও দেশীয় রোবোটিক্স প্রতিষ্ঠান ডুবোটেক ডিজিটাল লিমিটেড দেশের সামুদ্রিক প্রযুক্তি খাতে উদ্ভাবন, গবেষণা ও উন্নয়নের নতুন যুগ সূচনার লক্ষ্যে পার্টনারশিপে যুক্ত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির কনফারেন্স রুমে এই পার্টনারশিপ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড অফশোর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কমান্ডার মোহাম্মদ ইরফান মাহদী, ডুবোটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. নাঈম হোসেন সৈকত ও প্রধান কার্যনির্বাহী কর্মকর্তা (সিওও) মো. মাহফুজুল হক।
এই সহযোগিতার মাধ্যমে উভয় প্রতিষ্ঠান রিমোটলি অপারেটেড ভেহিকল (ROV), স্বয়ংক্রিয় রোবোটিক সিস্টেম এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক সামুদ্রিক প্রযুক্তি উন্নয়নে একসাথে কাজ করবে। এর লক্ষ্য বাংলাদেশের ব্লু ইকোনমিকে আরও শক্তিশালী ও টেকসই করে তোলা।
বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি দেশের একমাত্র সরকারি মেরিটাইম উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে সামুদ্রিক খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি, গবেষণা পরিচালনা ও নীতি সহায়তা প্রদানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন সহযোগিতা কার্যক্রমের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়টি ইতোমধ্যে সামুদ্রিক শিল্পের প্রযুক্তিগত রূপান্তরে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।
এই পার্টনারশিপের মূল লক্ষ্য হলো মেরিটাইম প্রযুক্তি খাতে গবেষণা, উদ্ভাবন ও মানবসম্পদ উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা। যৌথ উদ্যোগের অংশ হিসেবে উভয় প্রতিষ্ঠান আন্ডারওয়াটার রোবোটিক্স ও স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণা প্রকল্পে কাজ করবে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ডুবোটেকের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত থেকে বাস্তব প্রকল্পে কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে।
ডুবোটেক ডিজিটাল লিমিটেড গত আট বছর ধরে বাংলাদেশের আন্ডারওয়াটার ও সামুদ্রিক রোবোটিক্স খাতে গবেষণা ও উন্নয়নে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি শিল্প, পরিবেশ ও প্রতিরক্ষা খাতে প্রযোজ্য রোবোটিক সিস্টেম তৈরিতে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
ডুবোটেকের সিওও মো. মাহফুজুল হক বলেন, ‘এই সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জনের এক অনন্য সুযোগ পাবে। তারা আমাদের চলমান আন্ডারওয়াটার রোবট প্রকল্পে যুক্ত হয়ে সরাসরি দক্ষতা অর্জন করতে পারবে। আমাদের লক্ষ্য এমন এক প্রজন্ম তৈরি করা, যারা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মেরিটাইম প্রযুক্তি শিল্পে নেতৃত্ব দেবে।’
সংশ্লিষ্টদের মতে, এই উদ্যোগ বাংলাদেশের নীল অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। দেশীয়ভাবে তৈরি রোবোটিক্স ও প্রযুক্তির মাধ্যমে সমুদ্রসম্পদ অনুসন্ধান, তলদেশ পর্যবেক্ষণ ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা আরও জোরদার হবে। একই সঙ্গে স্থানীয় গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়নের ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও শিল্পখাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।
দীর্ঘমেয়াদে এই উদ্যোগ বাংলাদেশের সমুদ্রকেন্দ্রিক অর্থনীতিকে প্রযুক্তিনির্ভর ও টেকসই করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।