ঢাকা ০৯:২১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ৯ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জাবির চারুকলা বিভাগে র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় ৬ শিক্ষার্থীকে শোকজ, অভিযুক্তের হুমকি—আরও র‍্যাগিং দরকার

আমির ফয়সাল | জাবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশঃ ০২:১৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫
  • / 3

ছবি: প্রজন্ম কথা


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) চারুকলা বিভাগে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগে ছয় শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে নোটিশ পাওয়ার পরও অভিযুক্ত এক শিক্ষার্থী প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন, ‘ওদের আরও র‍্যাগিং দেওয়া দরকার।’

লিখিত অভিযোগ দায়েরের প্রায় এক মাস পর এবং অভিযোগ পুনর্বহালের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বুধবার (২২ অক্টোবর) প্রক্টর অফিস থেকে এই শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে পূর্বের পাঁচজনের সঙ্গে নতুন করে ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাফিন আরা পর্ণার নাম উঠে আসে। পরবর্তীতে তাকেও শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়।

তবে নোটিশ পাওয়ার পর তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। যেখানে র‍্যাগিংয়ের কোনো ঘটনা ঘটেইনি, সেখানে আমাদের দোষ দেওয়া হচ্ছে। আমি চাই, তাদের (জুনিয়রদের) আরও র‍্যাগিং দেওয়া হোক।

অভিযোগকারী প্রান্ত রায়, চারুকলা বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী, বলেন, পর্ণা আপু আগেও বলেছিলেন ‘তোরা র‍্যাগিংয়ের কী দেখেছিস! তোদের ভালোভাবে র‍্যাগিং দিলে বুঝতিস।’ আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে ছয় শিক্ষার্থীকে শোকজ করেছে, তারা হলেন- ৪৯তম ব্যাচের ঐশী সরকার ও সাফিন আরা পর্ণা, ৫০তম ব্যাচের প্রমা রাহা, এবং ৫১তম ব্যাচের ওয়াদুদ আহমেদ সিজান, এ এম হাবিব উসমান ও আবদুল্লাহ আল নোমান।
অভিযুক্তদের মধ্যে ঐশী সরকার বর্তমানে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) এবং প্রমা রাহা সহ–সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।

গত ২৭ আগস্ট চারুকলা বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলাকালে গ্যালারিতে এই র‍্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে। অনুষদের এক কর্মচারীর সঙ্গে ৫৩তম ব্যাচের দুই ছাত্রী কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়লে সিনিয়র শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হন।

অভিযোগে বলা হয়, ৫১তম ব্যাচের দুই শিক্ষার্থী প্রান্ত রায় ও তার সহপাঠীদের জোর করে জয়নুল গ্যালারিতে নিয়ে যান। সেখানে ৪৯তম ব্যাচের ঐশী সরকার প্রান্তের চেহারা নিয়ে ব্যঙ্গ করেন এবং অপর এক অভিযুক্ত তাকে “লাথি মেরে ডিপার্টমেন্ট থেকে বের করে দেব” বলে হুমকি দেন।

ঘটনার পর প্রান্ত রায় ৮ সেপ্টেম্বর প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দেন। পরে বিভাগীয় সমাধানের আশ্বাসে তিনি অভিযোগ প্রত্যাহার করেন। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি ১৫ অক্টোবর অভিযোগটি পুনর্বহালের আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছয় শিক্ষার্থীকে শোকজ নোটিশ পাঠায়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, র‍্যাগিংয়ের মতো ঘটনায় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি–র‍্যাগিং নীতিমালা অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

জাবির চারুকলা বিভাগে র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় ৬ শিক্ষার্থীকে শোকজ, অভিযুক্তের হুমকি—আরও র‍্যাগিং দরকার

প্রকাশঃ ০২:১৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫

ছবি: প্রজন্ম কথা


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) চারুকলা বিভাগে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগে ছয় শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে নোটিশ পাওয়ার পরও অভিযুক্ত এক শিক্ষার্থী প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন, ‘ওদের আরও র‍্যাগিং দেওয়া দরকার।’

লিখিত অভিযোগ দায়েরের প্রায় এক মাস পর এবং অভিযোগ পুনর্বহালের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বুধবার (২২ অক্টোবর) প্রক্টর অফিস থেকে এই শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে পূর্বের পাঁচজনের সঙ্গে নতুন করে ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সাফিন আরা পর্ণার নাম উঠে আসে। পরবর্তীতে তাকেও শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়।

তবে নোটিশ পাওয়ার পর তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। যেখানে র‍্যাগিংয়ের কোনো ঘটনা ঘটেইনি, সেখানে আমাদের দোষ দেওয়া হচ্ছে। আমি চাই, তাদের (জুনিয়রদের) আরও র‍্যাগিং দেওয়া হোক।

অভিযোগকারী প্রান্ত রায়, চারুকলা বিভাগের ৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী, বলেন, পর্ণা আপু আগেও বলেছিলেন ‘তোরা র‍্যাগিংয়ের কী দেখেছিস! তোদের ভালোভাবে র‍্যাগিং দিলে বুঝতিস।’ আমরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে ছয় শিক্ষার্থীকে শোকজ করেছে, তারা হলেন- ৪৯তম ব্যাচের ঐশী সরকার ও সাফিন আরা পর্ণা, ৫০তম ব্যাচের প্রমা রাহা, এবং ৫১তম ব্যাচের ওয়াদুদ আহমেদ সিজান, এ এম হাবিব উসমান ও আবদুল্লাহ আল নোমান।
অভিযুক্তদের মধ্যে ঐশী সরকার বর্তমানে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল সংসদের সহসভাপতি (ভিপি) এবং প্রমা রাহা সহ–সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন।

গত ২৭ আগস্ট চারুকলা বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলাকালে গ্যালারিতে এই র‍্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে। অনুষদের এক কর্মচারীর সঙ্গে ৫৩তম ব্যাচের দুই ছাত্রী কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়লে সিনিয়র শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হন।

অভিযোগে বলা হয়, ৫১তম ব্যাচের দুই শিক্ষার্থী প্রান্ত রায় ও তার সহপাঠীদের জোর করে জয়নুল গ্যালারিতে নিয়ে যান। সেখানে ৪৯তম ব্যাচের ঐশী সরকার প্রান্তের চেহারা নিয়ে ব্যঙ্গ করেন এবং অপর এক অভিযুক্ত তাকে “লাথি মেরে ডিপার্টমেন্ট থেকে বের করে দেব” বলে হুমকি দেন।

ঘটনার পর প্রান্ত রায় ৮ সেপ্টেম্বর প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দেন। পরে বিভাগীয় সমাধানের আশ্বাসে তিনি অভিযোগ প্রত্যাহার করেন। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি ১৫ অক্টোবর অভিযোগটি পুনর্বহালের আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছয় শিক্ষার্থীকে শোকজ নোটিশ পাঠায়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, র‍্যাগিংয়ের মতো ঘটনায় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি–র‍্যাগিং নীতিমালা অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”