ঢাকা ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০২ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মা দিবসে মায়ের জন্য মন কাঁদে, মাভাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ

  • প্রকাশঃ ০৯:৫৬:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
  • / 44

 

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানে, মা দিবস এসে যায়, কিন্তু এটি মা ছাড়া এক শূন্যতা, যা পূর্ণ হতে পারে না।আজ মা দিবস। বিশ্বজুড়ে সন্তানরা নানা উপায়ে মাকে ভালোবাসা জানাচ্ছে, সময় কাটাচ্ছে মায়ের সঙ্গে। কিন্তু মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের কাছে দিনটা যেন একটু অন্যরকম। এখানকার শিক্ষার্থীদের অনেকেই পরিবার থেকে বহু দূরে। সকালটা শুরু হয়েছে অন্যান্য দিনের মতোই ক্লাস, ল্যাব, অ্যাসাইনমেন্ট কিংবা ক্লাস টেস্ট নিয়ে ব্যস্ততায়। কিন্তু হৃদয়ের ভেতরে আজ যেন এক অদ্ভুত শূন্যতা, নিঃশব্দে একরাশ মায়া।

মা দিবসে অনেকেই খুব সকালেই ফোন করেছে বাড়িতে। মায়ের গলা শোনার পর কেউ হেসেছে, কেউ কেঁদেছে কেউবা বারান্দায় চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকেছে অনেকক্ষণ, যেন মায়ের উপস্থিতি অনুভব করার চেষ্টা করছে। এমনকি কিছু ডিপার্টমেন্টে শিক্ষার্থীরা একসাথে বসে নিজেদের অনুভূতি ভাগাভাগি করেছে, মাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছে। কেউ লিখেছে ফেসবুকে ছোট্ট আবেগঘন পোস্ট, কেউ পাঠিয়েছে মায়ের জন্য একটি কবিতা।

ফুড টেকনোলজি অ্যান্ড নিউট্রিশনাল সায়েন্স বিভাগের মো আবু রায়হান শিকদার বলেন,
মা দিবসে সকল মায়ের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।
মা, মা, মা!!

তুমি আছো বলেই পৃথিবীটা গোছানো মনে হয়। তোমার আঁচলটাই আমার একমাত্র নিরাপদ আশ্রয়। পৃথিবীর সবচেয়ে সুখকর মুহূর্ত তোমার মুখের মৃদু হাসি।

ছোটবেলায় ফুটবল খেলতে গিয়ে যখন হাত ভেঙেছিল, তখন তোমার অগোছালো কান্না প্রথমবার দেখেছিলাম। শেষ রাতে ঘুম ভেঙে দেখতাম—তুমি একরাশ দুশ্চিন্তা নিয়ে পাশে শুয়ে আছো।

মা, যখন কোনো বিপদে পড়ি, তখন তোমার সান্ত্বনাই সবচেয়ে বড় সাহস। আর যখন বলো, ‘তুমি পারবে রায়হান’, তখন সত্যিই বিশ্বাস হয়—আমি পারব।

তোমার সেই নির্ভরতা, বিশ্বাস আর নিঃশব্দ ত্যাগেই আমি আজকের আমি।
সবচেয়ে বড় চাওয়া দিন শেষে যেন তোমার মুখে শুনতে পাই,
‘আমার আদরের কালো মানিক আসছে, আমার আর কোনো অভিযোগ নেই।

শুধু এটাই চাই, তুমি ভালো থেকো মা, সুস্থ থেকো।
শুভ মা দিবস, মা!

অর্থনীতি বিভাগের অরুপা সরকার বলেন মা বলতেন, তাঁর সব সন্তানদের মধ্যে আমার ঘুম ছিল সবচেয়ে গভীর। অনেক ডাকেও সাড়া পাওয়া যেত না শেষে দেখা যেত, আমি বাগানে কোনো গাছের নিচে বসে একা খেলায় মগ্ন। মাঝে মাঝে কাজের লোক পাঠিয়ে মাঝিপাড়ার জিতেন মাঝির ঘর থেকে আনতে হতো ওখানেই ছিল আমার খেলার সাথী মিনু।
আমি নাকি একটু নিরিবিলি স্বভাবের, বাড়তি জ্বালাতন করতাম না।

এরপর হঠাৎ আয়নায় দেখি বড় হয়ে গেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছি! আর বাড়ির পেছনের আমগাছে বাঁধা দোলনায় বসি না। মা অসাক্ষাতে বলতেন, ‘এঁড়ে টাইপের এই মেয়ে একদিন নিজেই চলতে শিখবে!’ ঠিক তাই হয়েছে মা—আজ আমি একা থাকি, একা গুছাই সব।

তবে চলতে গিয়ে কাঁটা বিঁধলে মনে হয় তোমার কাছ থেকে জীবনটা আরেকটু ভালোভাবে শিখলে ভালো হতো।
মা, তুমি ছিলে আমাদের বাড়ির দশভূজা সব অসাধ্য একাই সাধন করতে। এখন তুমি নেই, তাই আমাদের আর কোনো ইতিবৃত্ত নেই।

ভালোবাসা নিও, মা।

ফুড টেকনোলজি অ্যান্ড নিউট্রিশনাল সায়েন্স বিভাগের সমাপ্তী খান বলেন, মাকে নিয়ে আসলে যেভাবে কিছু বলা যায় না। মাকে কতটা ভালোবাসি, সেটাও বলা হয় না কারণ এই ভালোবাসাটা কোনো শব্দের মাধ্যমেই পুরোপুরি প্রকাশ করা সম্ভব নয়। বড় হয়েছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছি, কিন্তু মায়ের কাছে এখনো সেই ছোট্ট মেয়েটাই আছি। নিজে সব করতে পারি, কিন্তু কোনো কিছুই মার মতো সুন্দর হয় না। মা ছাড়া সবকিছুই অপূর্ণ লাগে। মাঝে মাঝেই ভাবি, ‘মা না থাকলে কী হতো!’ মা দিবসে একটা কথাই বলব ‘ভালোবাসি, আম্মা।

অর্থনীতি বিভাগের নুসরাত জাহান জান্নাত বলেন, আজ মা দিবস। সবাই আজ মাকে নিয়ে ছবি দিচ্ছে, স্ট্যাটাস দিচ্ছে, মায়ের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে। আর আমি ক্যাম্পাসে মায়ের থেকে অনেক দূরে। ফোনে কথা হয় ঠিকই, কিন্তু মনটা কিছুতেই ভরছে না। ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, এক্সাম আর হাজারো কাজের ভিড়ে আজ মায়ের মুখটা একটু বেশিই মনে পড়ে যাচ্ছে। মাকে জড়িয়ে ধরার সাধ আজ স্মৃতিতেই সীমাবদ্ধ। মা, দূরে থেকেও তুমি সব সময় সবচেয়ে কাছের। খুব মিস করছি তোমায় আজ।

হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সুবর্ণ স্বর্ণা বলেন এটি একটি খুবই আবেগপূর্ণ অনুভূতি। মা দিবস একটি বিশেষ দিন, যেদিন আমরা আমাদের মায়েদের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। কিন্তু ক্যাম্পাসে থাকার কারণে মাকে কাছে না পাওয়ার যে তীব্র অনুভূতি—তা কেবল দূরে থাকা সন্তানরাই বোঝে। তবুও দূর থেকেই বলি, ‘অনেক ভালোবাসি মা।’ শুভ মা দিবস!

কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ইমরান হোসেন(নাদভী) বলেন,আজ মা দিবস। তবে আমার কাছে মা কোনো দিবসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। মা-ছেলের সম্পর্ক, ভালোবাসা, মায়া, মমতা এগুলো প্রতিটি মুহূর্তেই বর্তমান। মা হচ্ছেন ভরসার আরেক নাম। পড়াশোনার কারণে টাঙ্গাইলে থাকি, প্রতিদিনই মায়ের অভাবটা অনুভব করি—মায়ের হাতের রান্না, সকালে ঘুম থেকে তোলার ডাকটা খুব মিস করি। বাসায় থাকলে মা না ডাকলে দুপুর ১২টাও বাজে, কারণ মায়ের ডাকের ভরসাতেই ঘুমাই।

মা এমন এক জাতি, যিনি সন্তানের জন্য নিঃস্বার্থ। তাঁর ঋণ কোনো সন্তানই শোধ করতে পারে না। আমি যদি আমার শরীরের চামড়া দিয়ে জুতা বানিয়ে দিই, আর মা তা পরে হাজার বছর হাঁটেনতবুও এক ফোঁটা দুধের ঋণ শোধ হবে না। মায়ের কাছ থেকে ধার নিলে মা হাসতে হাসতে দেন, আমি কখনো শোধ করতে পারি, আবার অনেক সময় পারি না।

ঝড়ে যাওয়া পাতাগুলো কি
হেমন্তের ঋণ শোধ করতে পারে কখনো?
মায়ের ঋণ কি কোনোদিন শোধ করা সম্ভব?

মা দিবসের বিশেষ শুভেচ্ছা নয়, শুধু একটাই দোয়া—সব মা যেন ভালো থাকেন, সুস্থ থাকেন।
“রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বায়ানী সাগীরা।”

ক্যাম্পাসে থাকা শিক্ষার্থীদের অনেকেই জানায়, মা দিবসে তারা নতুন করে উপলব্ধি করে, মায়ের ভালোবাসার কোনো বিকল্প নেই। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ব্যস্ততা মাঝে মাঝে মাকে সময় না দেওয়ার উপলক্ষ তৈরি করলেও, এই একটি দিন মনে করিয়ে দেয়—সবকিছুর ওপরে একজনই, তিনি মা।

আজ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশে যেমন ছায়া-মেঘের আনাগোনা, তেমনি শিক্ষার্থীদের মনেও চলছে স্মৃতির হালকা ঝড়। কিন্তু সব অনুভূতির কেন্দ্রে শুধুই একজন মা।

লেখা: মো. জিসান রহমান

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা

 

শেয়ার করুন

মা দিবসে মায়ের জন্য মন কাঁদে, মাভাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ

প্রকাশঃ ০৯:৫৬:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

 

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানে, মা দিবস এসে যায়, কিন্তু এটি মা ছাড়া এক শূন্যতা, যা পূর্ণ হতে পারে না।আজ মা দিবস। বিশ্বজুড়ে সন্তানরা নানা উপায়ে মাকে ভালোবাসা জানাচ্ছে, সময় কাটাচ্ছে মায়ের সঙ্গে। কিন্তু মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষার্থীদের কাছে দিনটা যেন একটু অন্যরকম। এখানকার শিক্ষার্থীদের অনেকেই পরিবার থেকে বহু দূরে। সকালটা শুরু হয়েছে অন্যান্য দিনের মতোই ক্লাস, ল্যাব, অ্যাসাইনমেন্ট কিংবা ক্লাস টেস্ট নিয়ে ব্যস্ততায়। কিন্তু হৃদয়ের ভেতরে আজ যেন এক অদ্ভুত শূন্যতা, নিঃশব্দে একরাশ মায়া।

মা দিবসে অনেকেই খুব সকালেই ফোন করেছে বাড়িতে। মায়ের গলা শোনার পর কেউ হেসেছে, কেউ কেঁদেছে কেউবা বারান্দায় চুপ করে দাঁড়িয়ে থেকেছে অনেকক্ষণ, যেন মায়ের উপস্থিতি অনুভব করার চেষ্টা করছে। এমনকি কিছু ডিপার্টমেন্টে শিক্ষার্থীরা একসাথে বসে নিজেদের অনুভূতি ভাগাভাগি করেছে, মাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছে। কেউ লিখেছে ফেসবুকে ছোট্ট আবেগঘন পোস্ট, কেউ পাঠিয়েছে মায়ের জন্য একটি কবিতা।

ফুড টেকনোলজি অ্যান্ড নিউট্রিশনাল সায়েন্স বিভাগের মো আবু রায়হান শিকদার বলেন,
মা দিবসে সকল মায়ের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা।
মা, মা, মা!!

তুমি আছো বলেই পৃথিবীটা গোছানো মনে হয়। তোমার আঁচলটাই আমার একমাত্র নিরাপদ আশ্রয়। পৃথিবীর সবচেয়ে সুখকর মুহূর্ত তোমার মুখের মৃদু হাসি।

ছোটবেলায় ফুটবল খেলতে গিয়ে যখন হাত ভেঙেছিল, তখন তোমার অগোছালো কান্না প্রথমবার দেখেছিলাম। শেষ রাতে ঘুম ভেঙে দেখতাম—তুমি একরাশ দুশ্চিন্তা নিয়ে পাশে শুয়ে আছো।

মা, যখন কোনো বিপদে পড়ি, তখন তোমার সান্ত্বনাই সবচেয়ে বড় সাহস। আর যখন বলো, ‘তুমি পারবে রায়হান’, তখন সত্যিই বিশ্বাস হয়—আমি পারব।

তোমার সেই নির্ভরতা, বিশ্বাস আর নিঃশব্দ ত্যাগেই আমি আজকের আমি।
সবচেয়ে বড় চাওয়া দিন শেষে যেন তোমার মুখে শুনতে পাই,
‘আমার আদরের কালো মানিক আসছে, আমার আর কোনো অভিযোগ নেই।

শুধু এটাই চাই, তুমি ভালো থেকো মা, সুস্থ থেকো।
শুভ মা দিবস, মা!

অর্থনীতি বিভাগের অরুপা সরকার বলেন মা বলতেন, তাঁর সব সন্তানদের মধ্যে আমার ঘুম ছিল সবচেয়ে গভীর। অনেক ডাকেও সাড়া পাওয়া যেত না শেষে দেখা যেত, আমি বাগানে কোনো গাছের নিচে বসে একা খেলায় মগ্ন। মাঝে মাঝে কাজের লোক পাঠিয়ে মাঝিপাড়ার জিতেন মাঝির ঘর থেকে আনতে হতো ওখানেই ছিল আমার খেলার সাথী মিনু।
আমি নাকি একটু নিরিবিলি স্বভাবের, বাড়তি জ্বালাতন করতাম না।

এরপর হঠাৎ আয়নায় দেখি বড় হয়ে গেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছি! আর বাড়ির পেছনের আমগাছে বাঁধা দোলনায় বসি না। মা অসাক্ষাতে বলতেন, ‘এঁড়ে টাইপের এই মেয়ে একদিন নিজেই চলতে শিখবে!’ ঠিক তাই হয়েছে মা—আজ আমি একা থাকি, একা গুছাই সব।

তবে চলতে গিয়ে কাঁটা বিঁধলে মনে হয় তোমার কাছ থেকে জীবনটা আরেকটু ভালোভাবে শিখলে ভালো হতো।
মা, তুমি ছিলে আমাদের বাড়ির দশভূজা সব অসাধ্য একাই সাধন করতে। এখন তুমি নেই, তাই আমাদের আর কোনো ইতিবৃত্ত নেই।

ভালোবাসা নিও, মা।

ফুড টেকনোলজি অ্যান্ড নিউট্রিশনাল সায়েন্স বিভাগের সমাপ্তী খান বলেন, মাকে নিয়ে আসলে যেভাবে কিছু বলা যায় না। মাকে কতটা ভালোবাসি, সেটাও বলা হয় না কারণ এই ভালোবাসাটা কোনো শব্দের মাধ্যমেই পুরোপুরি প্রকাশ করা সম্ভব নয়। বড় হয়েছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছি, কিন্তু মায়ের কাছে এখনো সেই ছোট্ট মেয়েটাই আছি। নিজে সব করতে পারি, কিন্তু কোনো কিছুই মার মতো সুন্দর হয় না। মা ছাড়া সবকিছুই অপূর্ণ লাগে। মাঝে মাঝেই ভাবি, ‘মা না থাকলে কী হতো!’ মা দিবসে একটা কথাই বলব ‘ভালোবাসি, আম্মা।

অর্থনীতি বিভাগের নুসরাত জাহান জান্নাত বলেন, আজ মা দিবস। সবাই আজ মাকে নিয়ে ছবি দিচ্ছে, স্ট্যাটাস দিচ্ছে, মায়ের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে। আর আমি ক্যাম্পাসে মায়ের থেকে অনেক দূরে। ফোনে কথা হয় ঠিকই, কিন্তু মনটা কিছুতেই ভরছে না। ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, এক্সাম আর হাজারো কাজের ভিড়ে আজ মায়ের মুখটা একটু বেশিই মনে পড়ে যাচ্ছে। মাকে জড়িয়ে ধরার সাধ আজ স্মৃতিতেই সীমাবদ্ধ। মা, দূরে থেকেও তুমি সব সময় সবচেয়ে কাছের। খুব মিস করছি তোমায় আজ।

হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সুবর্ণ স্বর্ণা বলেন এটি একটি খুবই আবেগপূর্ণ অনুভূতি। মা দিবস একটি বিশেষ দিন, যেদিন আমরা আমাদের মায়েদের প্রতি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। কিন্তু ক্যাম্পাসে থাকার কারণে মাকে কাছে না পাওয়ার যে তীব্র অনুভূতি—তা কেবল দূরে থাকা সন্তানরাই বোঝে। তবুও দূর থেকেই বলি, ‘অনেক ভালোবাসি মা।’ শুভ মা দিবস!

কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ইমরান হোসেন(নাদভী) বলেন,আজ মা দিবস। তবে আমার কাছে মা কোনো দিবসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। মা-ছেলের সম্পর্ক, ভালোবাসা, মায়া, মমতা এগুলো প্রতিটি মুহূর্তেই বর্তমান। মা হচ্ছেন ভরসার আরেক নাম। পড়াশোনার কারণে টাঙ্গাইলে থাকি, প্রতিদিনই মায়ের অভাবটা অনুভব করি—মায়ের হাতের রান্না, সকালে ঘুম থেকে তোলার ডাকটা খুব মিস করি। বাসায় থাকলে মা না ডাকলে দুপুর ১২টাও বাজে, কারণ মায়ের ডাকের ভরসাতেই ঘুমাই।

মা এমন এক জাতি, যিনি সন্তানের জন্য নিঃস্বার্থ। তাঁর ঋণ কোনো সন্তানই শোধ করতে পারে না। আমি যদি আমার শরীরের চামড়া দিয়ে জুতা বানিয়ে দিই, আর মা তা পরে হাজার বছর হাঁটেনতবুও এক ফোঁটা দুধের ঋণ শোধ হবে না। মায়ের কাছ থেকে ধার নিলে মা হাসতে হাসতে দেন, আমি কখনো শোধ করতে পারি, আবার অনেক সময় পারি না।

ঝড়ে যাওয়া পাতাগুলো কি
হেমন্তের ঋণ শোধ করতে পারে কখনো?
মায়ের ঋণ কি কোনোদিন শোধ করা সম্ভব?

মা দিবসের বিশেষ শুভেচ্ছা নয়, শুধু একটাই দোয়া—সব মা যেন ভালো থাকেন, সুস্থ থাকেন।
“রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বায়ানী সাগীরা।”

ক্যাম্পাসে থাকা শিক্ষার্থীদের অনেকেই জানায়, মা দিবসে তারা নতুন করে উপলব্ধি করে, মায়ের ভালোবাসার কোনো বিকল্প নেই। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ব্যস্ততা মাঝে মাঝে মাকে সময় না দেওয়ার উপলক্ষ তৈরি করলেও, এই একটি দিন মনে করিয়ে দেয়—সবকিছুর ওপরে একজনই, তিনি মা।

আজ মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আকাশে যেমন ছায়া-মেঘের আনাগোনা, তেমনি শিক্ষার্থীদের মনেও চলছে স্মৃতির হালকা ঝড়। কিন্তু সব অনুভূতির কেন্দ্রে শুধুই একজন মা।

লেখা: মো. জিসান রহমান

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা