ঢাকা ১০:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাদা পতাকার গুজব: ভারতীয় সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ দাবি কতটা সত্য?

  • প্রকাশঃ ০১:০১:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
  • / 28

 

সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে একটি বিতর্কিত দাবি—ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানি বাহিনীর সামনে সাদা পতাকা উড়িয়েছে, যা আন্তর্জাতিকভাবে আত্মসমর্পণের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। তবে এই দাবির সত্যতা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক বিভ্রান্তি প্রশ্ন।

উল্লেখ্য, জম্মু কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। ভারত সরকার এই হামলার জন্য পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করে সীমান্ত পেরিয়ে “অপারেশন সিন্দুর” চালায়, যেখানে নয়টি টার্গেট ধ্বংসের দাবি করে ভারতীয় সামরিক বাহিনী।

পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান দাবি করে যে, তাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ সামরিক প্রতিশোধের অনুমোদন দেন এবং এই অভিযানের অংশ হিসেবে পাকিস্তানি বাহিনী কাশ্মীর সীমান্তে সক্রিয় ভূমিকা নেয়।

এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই ফেসবুক, টুইটার (এক্স) এবং অন্যান্য মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে একটি ভিডিও একাধিক পোস্ট—যেখানে দাবি করা হয়, ভারতীয় সেনারা ‘সাদা পতাকা’ উড়িয়েছে। কিছু অনলাইন ব্লগ অপ্রতিষ্ঠিত নিউজ পোর্টালও এই খবর প্রকাশ করে।

তবে বিশ্বস্ত কোনো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম যেমন BBC, Al Jazeera, The Guardian কিংবা Reuters এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেনি। বরং একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা—যেমন Alt News (ভারত), Geo Fact Check (পাকিস্তান), এবং AFP Fact Check—দাবিকে ভুয়া ভিত্তিহীন” বলে অভিহিত করেছে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও এই দাবিকে সরাসরি ‘অপপ্রচার’ বলে নাকচ করা হয়েছে। পাকিস্তানও আনুষ্ঠানিকভাবে সাদা পতাকা দেখানোর কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি, যা এই দাবির বিশ্বাসযোগ্যতা আরও প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।

আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধ বা সীমান্ত সংঘর্ষে সাদা পতাকা কখনো কখনো আলোচনার বা হতাহতদের উদ্ধারপূর্বক নিরাপদ সংক্রমণের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে, যা আত্মসমর্পণ নয়। তবে এমন পরিস্থিতিতেও বিষয়টি প্রচলিতভাবে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার আওতায় হয়, এবং তা সুনির্দিষ্টভাবে দালিলিক প্রমাণসহ পরিচালিত হয়ে থাকে।

প্রতিবেদক: আলী আজগর ইসতিয়াক

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

সাদা পতাকার গুজব: ভারতীয় সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ দাবি কতটা সত্য?

প্রকাশঃ ০১:০১:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

 

সাম্প্রতিক ভারত-পাকিস্তান সামরিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে একটি বিতর্কিত দাবি—ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানি বাহিনীর সামনে সাদা পতাকা উড়িয়েছে, যা আন্তর্জাতিকভাবে আত্মসমর্পণের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত। তবে এই দাবির সত্যতা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক বিভ্রান্তি প্রশ্ন।

উল্লেখ্য, জম্মু কাশ্মীরের পাহেলগাঁওয়ে এক ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। ভারত সরকার এই হামলার জন্য পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করে সীমান্ত পেরিয়ে “অপারেশন সিন্দুর” চালায়, যেখানে নয়টি টার্গেট ধ্বংসের দাবি করে ভারতীয় সামরিক বাহিনী।

পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান দাবি করে যে, তাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ সামরিক প্রতিশোধের অনুমোদন দেন এবং এই অভিযানের অংশ হিসেবে পাকিস্তানি বাহিনী কাশ্মীর সীমান্তে সক্রিয় ভূমিকা নেয়।

এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই ফেসবুক, টুইটার (এক্স) এবং অন্যান্য মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে একটি ভিডিও একাধিক পোস্ট—যেখানে দাবি করা হয়, ভারতীয় সেনারা ‘সাদা পতাকা’ উড়িয়েছে। কিছু অনলাইন ব্লগ অপ্রতিষ্ঠিত নিউজ পোর্টালও এই খবর প্রকাশ করে।

তবে বিশ্বস্ত কোনো আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম যেমন BBC, Al Jazeera, The Guardian কিংবা Reuters এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেনি। বরং একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা—যেমন Alt News (ভারত), Geo Fact Check (পাকিস্তান), এবং AFP Fact Check—দাবিকে ভুয়া ভিত্তিহীন” বলে অভিহিত করেছে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকেও এই দাবিকে সরাসরি ‘অপপ্রচার’ বলে নাকচ করা হয়েছে। পাকিস্তানও আনুষ্ঠানিকভাবে সাদা পতাকা দেখানোর কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেনি, যা এই দাবির বিশ্বাসযোগ্যতা আরও প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।

আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, যুদ্ধ বা সীমান্ত সংঘর্ষে সাদা পতাকা কখনো কখনো আলোচনার বা হতাহতদের উদ্ধারপূর্বক নিরাপদ সংক্রমণের জন্য ব্যবহৃত হতে পারে, যা আত্মসমর্পণ নয়। তবে এমন পরিস্থিতিতেও বিষয়টি প্রচলিতভাবে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতার আওতায় হয়, এবং তা সুনির্দিষ্টভাবে দালিলিক প্রমাণসহ পরিচালিত হয়ে থাকে।

প্রতিবেদক: আলী আজগর ইসতিয়াক

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা”