আফগানিস্তানে সম্প্রসারিত হচ্ছে সিপিইসি: ত্রিপাক্ষিক চুক্তিতে চীন-পাকিস্তান-আফগানিস্তান

- প্রকাশঃ ০৬:১৫:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
- / 16
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার আঞ্চলিক সংযোগে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে চীন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান একত্রে সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (CPEC) আফগানিস্তানে সম্প্রসারণের। এই ত্রিপাক্ষিক চুক্তিটি চীনের বেইজিংয়ে তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে চূড়ান্ত হয়।
এই উদ্যোগের ফলে স্থলবেষ্টিত আফগানিস্তান পাকিস্তানের সমুদ্রবন্দরগুলোর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। ২০২৩ সালের বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণা অনুযায়ী, এই সংযোগ আফগানিস্তানের বাণিজ্য খরচ প্রায় ৩০% পর্যন্ত কমাতে পারে।
সিপিইসি, যা চীনের বহুল আলোচিত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (BRI) একটি প্রধান প্রকল্প, এবার আফগানিস্তানে সম্প্রসারিত হওয়ায় দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রভাবকে ভারসাম্য করার কৌশল হিসেবেও দেখা হচ্ছে। ভারত দীর্ঘদিন ধরে এই প্রকল্পের বিরোধিতা করে আসছে, কারণ করিডোরটি পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে একটি অঞ্চল যা ভারত তার নিজস্ব ভূখণ্ড হিসেবে দাবি করে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, যদিও এই চুক্তি অর্থনৈতিক দিক থেকে ইতিবাচক, কিন্তু এর বাস্তবায়ন নিয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে। বিশেষ করে আফগানিস্তানে পাকিস্তান-বিরোধী জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (TTP)-এর সক্রিয়তা অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হচ্ছে। পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর পিস স্টাডিজ অনুযায়ী, ২০২৪ সালে TTP দেশটিতে ৬০০-রও বেশি হামলার দায় স্বীকার করে।
এই নিরাপত্তা ঝুঁকিগুলো প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ সফলতাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে তিন দেশকেই তাদের জটিল ভূরাজনৈতিক সম্পর্ক দক্ষতার সাথে পরিচালনা করতে হবে।
সিপিইসি সম্প্রসারণ কেবল অর্থনৈতিক দিক থেকেই নয়, বরং আঞ্চলিক কূটনীতিতেও একটি বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে যেখানে চীন কেন্দ্রীয় ভূমিকায়, আর আফগানিস্তান নতুন করে বিশ্ব অর্থনীতির সাথে যুক্ত হওয়ার দ্বারপ্রান্তে।