ঢাকা ০৩:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সৌদি আরবের মরুভূমিতে ১০ বিলিয়ন গাছ লাগানোর পরিকল্পনা

  • প্রকাশঃ ১০:৩৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
  • / 40

জলবায়ু পরিবর্তন, মরুকরণ ও পরিবেশগত অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সৌদি আরব হাতে নিয়েছে এক উচ্চাভিলাষী উদ্যোগ নিজ দেশের মরুভূমিতে ১০ বিলিয়ন গাছ রোপণের প্রকল্প। ২০২১ সালে ঘোষিত ‘সৌদি গ্রিন ইনিশিয়েটিভ’-এর অংশ হিসেবে এই প্রকল্পের লক্ষ্য ৪০ মিলিয়ন হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি পুনরুদ্ধার এবং দেশের ৩০ শতাংশ ভূখণ্ডকে সংরক্ষিত প্রাকৃতিক অঞ্চলে রূপান্তর করা।

এই উদ্যোগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। প্রকল্পটিতে স্থানীয় খেজুর গাছের মতো খরা সহনশীল প্রজাতি বেছে নেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য রক্ষা, ভূমি ক্ষয় রোধ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব প্রশমিত করার চেষ্টা চলছে।

এটি শুধু সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ পরিকল্পনা নয় এই প্রকল্প মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে আরও ৪০ বিলিয়ন গাছ রোপণের আঞ্চলিক লক্ষ্যের অংশ। এর মাধ্যমে বৈশ্বিকভাবে ২০০ মিলিয়ন হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি পুনরুদ্ধার এবং কার্বন নিঃসরণ উল্লেখযোগ্য হারে কমানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই উদ্যোগ অঞ্চলটির দীর্ঘদিনের পরিবেশগত সংকট মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। বালুঝড় ও অতিরিক্ত চারণভূমির কারণে প্রতিবছর যে বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয় (প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার), সেই চাপও হ্রাস পাবে। একই সঙ্গে, বায়ু দূষণ থেকে সৃষ্ট স্বাস্থ্যের ঝুঁকি ও জীবন প্রত্যাশার ওপর নেতিবাচক প্রভাবও কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সৌদি সরকার আশা করছে, গাছপালার আচ্ছাদন বাড়ানোর মাধ্যমে বছরে প্রায় ২৭০ মিলিয়ন টন কার্বন নিঃসরণ কমানো যাবে। এতে করে চক্রাকার কার্বন অর্থনীতিতে ৭০০ বিলিয়ন সৌদি রিয়ালের (প্রায় ১৮৬ বিলিয়ন ডলার) বেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে।

তবে বিশাল এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মরু অঞ্চলে এত বৃহৎ পরিসরে বনায়ন টেকসইভাবে করতে হলে প্রয়োজন উন্নত সেচ ব্যবস্থা, পানির টেকসই ব্যবস্থাপনা এবং পৃষ্ঠের পানি সংরক্ষণের নতুন কৌশল। ইতোমধ্যে থাদিক ন্যাশনাল পার্কসহ দেশের বিভিন্ন নার্সারিতে চারা উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

এই উদ্যোগ শুধু সৌদি আরবের নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত। এটি জি-২০ এবং জাতিসংঘের মরুকরণ প্রতিরোধ সনদের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। ২০৪০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক ভূমি অবক্ষয় ৫০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য অর্জনে সৌদি আরবের এই ভূমিকা বিশ্বে পরিবেশ সংরক্ষণের নতুন মানদণ্ড স্থাপন করতে পারে।

প্রতিবেদক: আলী আজগর ইসতিয়া

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা

শেয়ার করুন

সৌদি আরবের মরুভূমিতে ১০ বিলিয়ন গাছ লাগানোর পরিকল্পনা

প্রকাশঃ ১০:৩৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫

জলবায়ু পরিবর্তন, মরুকরণ ও পরিবেশগত অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সৌদি আরব হাতে নিয়েছে এক উচ্চাভিলাষী উদ্যোগ নিজ দেশের মরুভূমিতে ১০ বিলিয়ন গাছ রোপণের প্রকল্প। ২০২১ সালে ঘোষিত ‘সৌদি গ্রিন ইনিশিয়েটিভ’-এর অংশ হিসেবে এই প্রকল্পের লক্ষ্য ৪০ মিলিয়ন হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি পুনরুদ্ধার এবং দেশের ৩০ শতাংশ ভূখণ্ডকে সংরক্ষিত প্রাকৃতিক অঞ্চলে রূপান্তর করা।

এই উদ্যোগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। প্রকল্পটিতে স্থানীয় খেজুর গাছের মতো খরা সহনশীল প্রজাতি বেছে নেওয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে জীববৈচিত্র্য রক্ষা, ভূমি ক্ষয় রোধ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব প্রশমিত করার চেষ্টা চলছে।

এটি শুধু সৌদি আরবের অভ্যন্তরীণ পরিকল্পনা নয় এই প্রকল্প মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে আরও ৪০ বিলিয়ন গাছ রোপণের আঞ্চলিক লক্ষ্যের অংশ। এর মাধ্যমে বৈশ্বিকভাবে ২০০ মিলিয়ন হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি পুনরুদ্ধার এবং কার্বন নিঃসরণ উল্লেখযোগ্য হারে কমানো সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই উদ্যোগ অঞ্চলটির দীর্ঘদিনের পরিবেশগত সংকট মোকাবেলায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। বালুঝড় ও অতিরিক্ত চারণভূমির কারণে প্রতিবছর যে বিপুল আর্থিক ক্ষতি হয় (প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার), সেই চাপও হ্রাস পাবে। একই সঙ্গে, বায়ু দূষণ থেকে সৃষ্ট স্বাস্থ্যের ঝুঁকি ও জীবন প্রত্যাশার ওপর নেতিবাচক প্রভাবও কমবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সৌদি সরকার আশা করছে, গাছপালার আচ্ছাদন বাড়ানোর মাধ্যমে বছরে প্রায় ২৭০ মিলিয়ন টন কার্বন নিঃসরণ কমানো যাবে। এতে করে চক্রাকার কার্বন অর্থনীতিতে ৭০০ বিলিয়ন সৌদি রিয়ালের (প্রায় ১৮৬ বিলিয়ন ডলার) বেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে।

তবে বিশাল এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন নিয়ে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মরু অঞ্চলে এত বৃহৎ পরিসরে বনায়ন টেকসইভাবে করতে হলে প্রয়োজন উন্নত সেচ ব্যবস্থা, পানির টেকসই ব্যবস্থাপনা এবং পৃষ্ঠের পানি সংরক্ষণের নতুন কৌশল। ইতোমধ্যে থাদিক ন্যাশনাল পার্কসহ দেশের বিভিন্ন নার্সারিতে চারা উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

এই উদ্যোগ শুধু সৌদি আরবের নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত। এটি জি-২০ এবং জাতিসংঘের মরুকরণ প্রতিরোধ সনদের সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। ২০৪০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক ভূমি অবক্ষয় ৫০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্য অর্জনে সৌদি আরবের এই ভূমিকা বিশ্বে পরিবেশ সংরক্ষণের নতুন মানদণ্ড স্থাপন করতে পারে।

প্রতিবেদক: আলী আজগর ইসতিয়া

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা