ঢাকা ১০:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চীনের ভেটোতে জাতিসংঘে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী প্রস্তাব খারিজ

  • প্রকাশঃ ০২:৪১:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
  • / 19

নিউইয়র্ক — পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে ভারতের জাতিসংঘে আনা প্রস্তাব চীন ভেটো দেওয়ায় বাতিল হয়ে গেছে। সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক গোপন ভোটাভুটিতে চীন এই বিরোধিতা করে, যা দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

ভারতের প্রস্তাবে বলা হয়, পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তইয়েবা (LeT) ও জইশ-ই-মোহাম্মদ (JeM)-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পাঁচ ব্যক্তিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হোক। ভারতের দাবি, এদের মধ্যে অনেকে সম্প্রতি এপ্রিল ২০২৫-এ জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাম অঞ্চলে সংঘটিত ভয়াবহ হামলায় জড়িত ছিলেন। ওই হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন নিরীহ মানুষ, যার দায় স্বীকার করে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF)’—যেটি LeT-এর একটি উপদল হিসেবে পরিচিত।

চীনের এই ভেটো ভারতের জন্য কূটনৈতিকভাবে এক বড় ধাক্কা। বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের দীর্ঘদিনের কৌশলগত অংশীদারিত্ব—যাকে often “অল ওয়েদার ফ্রেন্ডশিপ” বলা হয়—তা এই সিদ্ধান্তের মূল প্রভাবক।

চীন অতীতেও ভারতের অনুরূপ উদ্যোগে বাধা দিয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৯ সালে JeM প্রধান মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী ঘোষণার প্রস্তাবে চীন প্রথমে ভেটো দিলেও, আন্তর্জাতিক চাপে পরে মত বদলায়।

চীনের ভেটোকে কেউ কেউ পাকিস্তানের প্রতি যৌক্তিক কূটনৈতিক সমর্থন হিসেবে দেখছেন, তবে অনেকেই এটিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টার অন্তরায় বলে উল্লেখ করছেন।

ভারত এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, “সীমান্তপারের সন্ত্রাস অব্যাহত থাকলে ভারত কঠোর জবাব দিতে বাধ্য হবে।”

বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে ভারতের কাশ্মীর নীতিকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব এবং চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠছে।

চীনের এই ভেটো জাতিসংঘে ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগকে ব্যর্থ করল। তবে এই ঘটনাই শেষ নয়। দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত ভারসাম্য ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়, যা আগামীর ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

প্রতিবেদক: আলী আজগর ইসতিয়া

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা

শেয়ার করুন

চীনের ভেটোতে জাতিসংঘে ভারতের সন্ত্রাসবিরোধী প্রস্তাব খারিজ

প্রকাশঃ ০২:৪১:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫

নিউইয়র্ক — পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ এনে ভারতের জাতিসংঘে আনা প্রস্তাব চীন ভেটো দেওয়ায় বাতিল হয়ে গেছে। সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক গোপন ভোটাভুটিতে চীন এই বিরোধিতা করে, যা দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে।

ভারতের প্রস্তাবে বলা হয়, পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তইয়েবা (LeT) ও জইশ-ই-মোহাম্মদ (JeM)-এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পাঁচ ব্যক্তিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হোক। ভারতের দাবি, এদের মধ্যে অনেকে সম্প্রতি এপ্রিল ২০২৫-এ জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাম অঞ্চলে সংঘটিত ভয়াবহ হামলায় জড়িত ছিলেন। ওই হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন নিরীহ মানুষ, যার দায় স্বীকার করে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF)’—যেটি LeT-এর একটি উপদল হিসেবে পরিচিত।

চীনের এই ভেটো ভারতের জন্য কূটনৈতিকভাবে এক বড় ধাক্কা। বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে চীনের দীর্ঘদিনের কৌশলগত অংশীদারিত্ব—যাকে often “অল ওয়েদার ফ্রেন্ডশিপ” বলা হয়—তা এই সিদ্ধান্তের মূল প্রভাবক।

চীন অতীতেও ভারতের অনুরূপ উদ্যোগে বাধা দিয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৯ সালে JeM প্রধান মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী ঘোষণার প্রস্তাবে চীন প্রথমে ভেটো দিলেও, আন্তর্জাতিক চাপে পরে মত বদলায়।

চীনের ভেটোকে কেউ কেউ পাকিস্তানের প্রতি যৌক্তিক কূটনৈতিক সমর্থন হিসেবে দেখছেন, তবে অনেকেই এটিকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টার অন্তরায় বলে উল্লেখ করছেন।

ভারত এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, “সীমান্তপারের সন্ত্রাস অব্যাহত থাকলে ভারত কঠোর জবাব দিতে বাধ্য হবে।”

বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। বিশেষ করে ভারতের কাশ্মীর নীতিকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব এবং চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠছে।

চীনের এই ভেটো জাতিসংঘে ভারতের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগকে ব্যর্থ করল। তবে এই ঘটনাই শেষ নয়। দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত ভারসাম্য ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়, যা আগামীর ভূরাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।

প্রতিবেদক: আলী আজগর ইসতিয়া

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা