এই প্রথম বাংলাদেশ থেকে চীনে রপ্তানি — ইতিহাসে নতুন এক অধ্যায়

- প্রকাশঃ ০২:০০:২৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
- / 45
বাংলাদেশ-চীন বাণিজ্য সম্পর্কে আজ যুক্ত হলো এক গর্বময় নতুন পালক। ইতিহাসে এই প্রথম বাংলাদেশ থেকে একদম ভিন্নধর্মী একটি পণ্য রপ্তানি হলো চীনের বাজারে, যা দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে পৌঁছে দিল এক নতুন উচ্চতায়।
দীর্ঘ প্রস্তুতি ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে সম্প্রতি চীনের কুনমিং বন্দরে পৌঁছেছে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল থেকে সংগৃহীত হিমায়িত কাঁকড়া ও সুস্বাদু শুঁটকি মাছ। এমন পণ্য যা এতদিন কেবল দেশীয় বাজারেই জনপ্রিয় ছিল, এবার তার স্বাদ নেবে চীনের ভোজনরসিক জনগণ। এটা শুধু পণ্যের রপ্তানি নয়, বরং বাংলাদেশের সম্ভাবনার এক নতুন দুয়ার উন্মোচন।
এই রপ্তানিকে কেন্দ্র করে চলেছে প্রায় এক বছরের পরিকল্পনা, গবেষণা ও প্রস্তুতি। মান নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্য সনদ, আন্তর্জাতিক মানের প্যাকেজিং—সবই হয়েছে নিখুঁতভাবে। এই উদ্যোগে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো এবং চীনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস। দুই দেশের যৌথ প্রচেষ্টায় একটি সাহসী ও সার্থক পদক্ষেপ বাস্তবতায় রূপ নিয়েছে।
এই সফলতা সম্ভব হয়েছে দেশের কিছু উদ্যমী উদ্যোক্তার হাত ধরে। বরগুনা, খুলনা ও চট্টগ্রামের মৎস্যজীবীরা বছরের পর বছর ধরে সংগ্রহ করে আসা ঐতিহ্যবাহী শুঁটকি ও কাঁকড়াকে রপ্তানিযোগ্য মানে রূপান্তর করেছেন। তাঁদের এক জন বলেন, “আমরা কখনো ভাবিনি আমাদের গ্রামীণ পণ্য একদিন চীনের বাজারে জায়গা করে নেবে। আজ আমরা সত্যিই গর্বিত।”
চীনের বাজারে সামুদ্রিক খাদ্যপণ্যের বিপুল চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশি কাঁকড়া ও শুঁটকি স্বাদ, পুষ্টিগুণ এবং মূল্যে প্রতিযোগিতামূলক হওয়ায় চীনা আমদানিকারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে সহজেই। ইতোমধ্যে প্রাথমিক চালান নিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়াও বেশ ইতিবাচক।
এই ঐতিহাসিক রপ্তানির সাফল্য ভবিষ্যতের পথ নির্দেশ করে দিচ্ছে। সরকার আশা করছে, এ সাফল্যের ধারায় কৃষিপণ্য, হস্তশিল্প, এমনকি তৈরি পোশাক খাতেও নতুন বাজার তৈরি হবে চীনে। ইতোমধ্যে কয়েকটি নতুন পণ্যের পরীক্ষামূলক অনুমোদনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ আজ কেবল একটি পণ্য নয়, রপ্তানি করেছে নিজের সম্ভাবনা, নিজের আত্মবিশ্বাস। আর চীন পেয়েছে এক নতুন বাণিজ্যিক অংশীদার, যার গুণ, মান ও আত্মার সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে প্রতিটি পণ্যে।
প্রতিবেদকঃওমর ফারুক