ঢাকা ১২:৪২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পানি নিতে গিয়ে ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ নিহত ৭০০ ফিলিস্তিনি

প্রজন্ম কথা ডেস্ক
  • প্রকাশঃ ১২:৩৮:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
  • / 1

রাফাতে পানির জন্য অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিরা | ফাইল ছবি


ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় পানি সংগ্রহের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষজনের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় শিশুসহ অন্তত ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া অফিস এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর আল–জাজিরার।

গাজার মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘পরিকল্পিত তৃষ্ণা যুদ্ধের’ অংশ হিসেবে ইসরায়েলি বাহিনী এ ধরনের হামলা অব্যাহত রেখেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী ইতিমধ্যে উপত্যকার ১১২টি মিষ্টি জলের ভরাট কেন্দ্র ও ৭২০টি জলকূপ ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করেছে। এর ফলে গাজায় ১২.৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ বিশুদ্ধ পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

আল–জাজিরার গাজা প্রতিনিধি হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, গাজা জুড়ে ভয়াবহ পানি সংকট চলছে। উপত্যকায় যে সামান্য পানি মিলছে, তার বেশিরভাগই দূষিত ও লবণাক্ত। তৃষ্ণার্ত মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সেই পানি সংগ্রহে বাধ্য হচ্ছেন। গত কয়েক মাসে অন্তত ১০ বার পানি সংগ্রহের লাইনে থাকা সাধারণ মানুষের ওপর সরাসরি হামলা চালানো হয়েছে।

মধ্য গাজায় একটি পানি সংগ্রহ কেন্দ্রে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ছয়জনই শিশু। শুধু শনিবার ও রোববার গাজার বিভিন্ন এলাকায় পৃথক ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২০২ জনে পৌঁছেছে। স্থানীয় সময় রোববার গাজা সিটির আবাসিক এলাকা ও শরণার্থীশিবিরে একের পর এক বিমান হামলা চালানো হয়। শুধু গাজা সিটিতেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫২ জন। নুসেইরাহ শরণার্থীশিবিরে একটি পানি বিতরণ কেন্দ্র লক্ষ্য করে চালানো হামলায় নিহত হয়েছেন ১০ জন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১৬ জন।

গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, চলমান অবরোধ ও হামলার কারণে অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অপুষ্টিজনিত কারণে অন্তত ৬৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ত্রাণ সহায়তা নিয়েও চরম বাধার মুখে পড়ছে ফিলিস্তিনিরা। মিডিয়া অফিসের দাবি, ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তার নামে মানুষকে বাঁচতে দিচ্ছে না, বরং প্রতিদিন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করছে।

মানবিক সহায়তা নিয়ে বারবার আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করলেও এখনো কোনো কার্যকর সমাধান আসেনি। পানি, খাদ্য, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের মারাত্মক সংকটে ২১ মাসেরও বেশি সময় ধরে টিকে থাকতে হচ্ছে গাজার লাখো মানুষকে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

পানি নিতে গিয়ে ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ নিহত ৭০০ ফিলিস্তিনি

প্রকাশঃ ১২:৩৮:২২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

রাফাতে পানির জন্য অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিরা | ফাইল ছবি


ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় পানি সংগ্রহের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষজনের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় শিশুসহ অন্তত ৭০০ জনের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া অফিস এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর আল–জাজিরার।

গাজার মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘পরিকল্পিত তৃষ্ণা যুদ্ধের’ অংশ হিসেবে ইসরায়েলি বাহিনী এ ধরনের হামলা অব্যাহত রেখেছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী ইতিমধ্যে উপত্যকার ১১২টি মিষ্টি জলের ভরাট কেন্দ্র ও ৭২০টি জলকূপ ইচ্ছাকৃতভাবে ধ্বংস করেছে। এর ফলে গাজায় ১২.৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ বিশুদ্ধ পানির সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

আল–জাজিরার গাজা প্রতিনিধি হানি মাহমুদ জানিয়েছেন, গাজা জুড়ে ভয়াবহ পানি সংকট চলছে। উপত্যকায় যে সামান্য পানি মিলছে, তার বেশিরভাগই দূষিত ও লবণাক্ত। তৃষ্ণার্ত মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সেই পানি সংগ্রহে বাধ্য হচ্ছেন। গত কয়েক মাসে অন্তত ১০ বার পানি সংগ্রহের লাইনে থাকা সাধারণ মানুষের ওপর সরাসরি হামলা চালানো হয়েছে।

মধ্য গাজায় একটি পানি সংগ্রহ কেন্দ্রে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ছয়জনই শিশু। শুধু শনিবার ও রোববার গাজার বিভিন্ন এলাকায় পৃথক ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা কমপক্ষে ২০২ জনে পৌঁছেছে। স্থানীয় সময় রোববার গাজা সিটির আবাসিক এলাকা ও শরণার্থীশিবিরে একের পর এক বিমান হামলা চালানো হয়। শুধু গাজা সিটিতেই প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫২ জন। নুসেইরাহ শরণার্থীশিবিরে একটি পানি বিতরণ কেন্দ্র লক্ষ্য করে চালানো হামলায় নিহত হয়েছেন ১০ জন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১৬ জন।

গাজার মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, চলমান অবরোধ ও হামলার কারণে অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত অপুষ্টিজনিত কারণে অন্তত ৬৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ত্রাণ সহায়তা নিয়েও চরম বাধার মুখে পড়ছে ফিলিস্তিনিরা। মিডিয়া অফিসের দাবি, ইসরায়েল ত্রাণ সহায়তার নামে মানুষকে বাঁচতে দিচ্ছে না, বরং প্রতিদিন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করছে।

মানবিক সহায়তা নিয়ে বারবার আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করলেও এখনো কোনো কার্যকর সমাধান আসেনি। পানি, খাদ্য, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের মারাত্মক সংকটে ২১ মাসেরও বেশি সময় ধরে টিকে থাকতে হচ্ছে গাজার লাখো মানুষকে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”