ঢাকা ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কাতারে ইসরায়েলি হামলায় হামাস নেতা খলিল আল-হাইয়ার ছেলে নিহত

প্রজন্ম কথা ডেস্ক
  • প্রকাশঃ ১২:২০:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • / 3

হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে দোহায় আবাসিক ভবনে হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভবন দেখা যাচ্ছে। কাতারের দোহায়, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ছবি: রয়টার্স


কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর ডেপুটি চেয়ারম্যান খলিল আল-হাইয়ার ছেলে হুমাম নিহত হয়েছেন। হামলার মূল লক্ষ্য ছিলেন খলিল আল-হাইয়া ও অন্যান্য শীর্ষ নেতারা, যারা অক্ষত রয়েছেন। হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য সুহাইল আল-হিন্দি আল জাজিরাকে জানান, খলিল আল-হাইয়ার তিন দেহরক্ষীর সঙ্গে হামলার পর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তিনি বলেন, যেকোনো প্রাণহানিই দুঃখজনক। আন্দোলনের নেতৃত্বের রক্ত যেকোনো ফিলিস্তিনি শিশুর রক্তের মতোই মূল্যবান।

কাতারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্য নিহত হয়েছেন এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। হামলার সময় দোহায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং কালো ধোঁয়া দেখা গেছে। স্থানীয় এক আবাসিক মহল্লায়ও বিস্ফোরণের প্রভাব পড়েছে।

ইসরায়েল হামলার কথা স্বীকার করেছে। তবে হামলার সময় হামাসের শীর্ষ নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করছিলেন। হামাসের দুটি সূত্র জানিয়েছে, এই সময় হানিয়ার পাশাপাশি খালিদ আল-হাইয়া উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্লেষকেরা এই হামলাকে নজিরবিহীন হিসেবে বর্ণনা করছেন, কারণ এটি জিসিসি (GCC) সদস্য কোনো দেশে ইসরায়েলের প্রথম হামলা। কাতারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম আঞ্চলিক বিমান ঘাঁটি অবস্থিত। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্রকে কিছুটা জানানো হয়েছিল। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “আমরা স্বাধীনভাবে হামলা চালিয়েছি।”

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই হামলাকে কাতারের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতার জঘন্য লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেছেন। সৌদি আরব, কুয়েত, জর্ডান, মিসর, ইরান, তুরস্ক, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং মালদ্বীপসহ আরও কয়েকটি দেশ কাতারে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ফলে গত দুই বছরে ৬৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যার ৮৩ শতাংশই সাধারণ মানুষ। তবুও ইসরায়েল নতুন করে হামলা চালিয়ে গাজা নগরী সম্পূর্ণ দখল করার চেষ্টা করছে। কাতারও মিসরের সঙ্গে সমন্বয় করে এই সঙ্কট মোকাবিলায় মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছে।

এবারের হামলা কাতারে হামাসের সদর দপ্তরের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক কার্যক্রমকে সরাসরি প্রভাবিত করেছে এবং দোহায় উত্তেজনা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগও বাড়িয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

কাতারে ইসরায়েলি হামলায় হামাস নেতা খলিল আল-হাইয়ার ছেলে নিহত

প্রকাশঃ ১২:২০:৩৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে দোহায় আবাসিক ভবনে হামলা চালায় ইসরায়েল। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি ভবন দেখা যাচ্ছে। কাতারের দোহায়, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ছবি: রয়টার্স


কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরায়েলের বিমান হামলায় হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর ডেপুটি চেয়ারম্যান খলিল আল-হাইয়ার ছেলে হুমাম নিহত হয়েছেন। হামলার মূল লক্ষ্য ছিলেন খলিল আল-হাইয়া ও অন্যান্য শীর্ষ নেতারা, যারা অক্ষত রয়েছেন। হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য সুহাইল আল-হিন্দি আল জাজিরাকে জানান, খলিল আল-হাইয়ার তিন দেহরক্ষীর সঙ্গে হামলার পর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তিনি বলেন, যেকোনো প্রাণহানিই দুঃখজনক। আন্দোলনের নেতৃত্বের রক্ত যেকোনো ফিলিস্তিনি শিশুর রক্তের মতোই মূল্যবান।

কাতারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্য নিহত হয়েছেন এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন। হামলার সময় দোহায় একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং কালো ধোঁয়া দেখা গেছে। স্থানীয় এক আবাসিক মহল্লায়ও বিস্ফোরণের প্রভাব পড়েছে।

ইসরায়েল হামলার কথা স্বীকার করেছে। তবে হামলার সময় হামাসের শীর্ষ নেতারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করছিলেন। হামাসের দুটি সূত্র জানিয়েছে, এই সময় হানিয়ার পাশাপাশি খালিদ আল-হাইয়া উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্লেষকেরা এই হামলাকে নজিরবিহীন হিসেবে বর্ণনা করছেন, কারণ এটি জিসিসি (GCC) সদস্য কোনো দেশে ইসরায়েলের প্রথম হামলা। কাতারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম আঞ্চলিক বিমান ঘাঁটি অবস্থিত। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামলার আগে যুক্তরাষ্ট্রকে কিছুটা জানানো হয়েছিল। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “আমরা স্বাধীনভাবে হামলা চালিয়েছি।”

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এই হামলাকে কাতারের সার্বভৌমত্ব ও ভূখণ্ডের অখণ্ডতার জঘন্য লঙ্ঘন হিসেবে অভিহিত করেছেন। সৌদি আরব, কুয়েত, জর্ডান, মিসর, ইরান, তুরস্ক, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং মালদ্বীপসহ আরও কয়েকটি দেশ কাতারে হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ফলে গত দুই বছরে ৬৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যার ৮৩ শতাংশই সাধারণ মানুষ। তবুও ইসরায়েল নতুন করে হামলা চালিয়ে গাজা নগরী সম্পূর্ণ দখল করার চেষ্টা করছে। কাতারও মিসরের সঙ্গে সমন্বয় করে এই সঙ্কট মোকাবিলায় মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছে।

এবারের হামলা কাতারে হামাসের সদর দপ্তরের নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক কার্যক্রমকে সরাসরি প্রভাবিত করেছে এবং দোহায় উত্তেজনা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগও বাড়িয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”