ঢাকা ০৫:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫, ৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রায় ৭ কোটি টাকার প্রকল্পে সংশয় প্রকাশ করলেন জেলা প্রশাসক

তুর্য দাস। সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
  • প্রকাশঃ ১০:১৮:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
  • / 8

ছবি: সংগৃহীত

‘ধর্ম ও মানবতার সেবা’ প্রতিপাদ্যে সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমনের লক্ষ্যে বাস্তবায়িত হতে যাওয়া প্রায় সাত কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া।

বুধবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় হাওর সহনশীলতা ও প্রস্তুতি উদ্যোগ (HaRPI)  শীর্ষক প্রকল্পের উপস্থাপন ও পর্যালোচনা সভা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা আহসানিয়া মিশন (DAM), যার বাজেট ৪,৮৪,০৬০.৮৩ ইউরো—বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬ কোটি ২৯ লাখ ২৯ হাজার টাকা (প্রায় ৭ কোটি টাকা)। সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ।

সভায় সভাপতিত্ব করেন DAM-এর নির্বাহী পরিচালক মো. শাহেদুল কাইয়ুম দুলাল। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের সিনিয়র ম্যানেজার কাজল আলফোন্স দ্রং।

জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে প্রকল্পের ব্যয় ও উপকারভোগী নির্ধারণের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন,

প্রকল্পে বলা হয়েছে ৭৭ হাজার মানুষ সরাসরি এবং ৪১ হাজার পরোক্ষভাবে উপকৃত হবেন। কিন্তু পরোক্ষ উপকারভোগীদের ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা নেই, কোনো মেকানিজম দেখানো হয়নি।

তিনি আরও বলেন,

হাওরাঞ্চলে অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতা শাকসবজি উৎপাদনে বড় বাধা। কিন্তু প্রকল্পে সে বাস্তবতা অনুপস্থিত। বজ্রপাত, আগাম বন্যা ও অতিবৃষ্টির মতো সমস্যাগুলো নিয়ে তো অন্যান্য প্রকল্প ইতোমধ্যে কাজ করছে—তাহলে এই প্রকল্পে নতুনত্ব কোথায়?

জবাবে ঢাকা আহসানিয়া মিশনের নির্বাহী পরিচালক মো. শাহেদুল কাইয়ুম দুলাল বলেন,

এই প্রকল্প হাওরের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর দুর্যোগ সহনশীলতা বৃদ্ধিতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। জেলা প্রশাসকের পর্যবেক্ষণ আমরাও গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি।

সভায় জানানো হয়, সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলার সাতটি ঝুঁকিপূর্ণ ইউনিয়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ইউনিয়নগুলো হলো—উত্তর শ্রীপুর, দক্ষিণ শ্রীপুর, উত্তর বড়দল (তাহিরপুর) এবং শেলবরষ, জয়শ্রী ও ধর্মপাশা সদর (ধর্মপাশা)।

প্রকল্পের আওতায় মূল কার্যক্রমসমূহ:

  • জলবায়ু অভিযোজন ও দুর্যোগ প্রস্তুতি

  • ক্ষয়ক্ষতি প্রশমন ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ

  • জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ সংরক্ষণ

  • জরুরি সাড়া ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রম

  • ৩ হাজার জলবায়ু-সহনশীল বাড়ির বাগান স্থাপন

  • ১ হাজার পরিবারকে হাইজিন ও মর্যাদাকর কিট বিতরণ

  • ১ হাজার পরিবারকে বহুমুখী নগদ সহায়তা

  • ৩ হাজার বৃক্ষরোপণ

প্রকল্পটির বাস্তবতা ও সম্ভাব্য কার্যকারিতা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে এখনও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

প্রাসঙ্গিক

শেয়ার করুন

প্রায় ৭ কোটি টাকার প্রকল্পে সংশয় প্রকাশ করলেন জেলা প্রশাসক

প্রকাশঃ ১০:১৮:৩৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫

‘ধর্ম ও মানবতার সেবা’ প্রতিপাদ্যে সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ঝুঁকি প্রশমনের লক্ষ্যে বাস্তবায়িত হতে যাওয়া প্রায় সাত কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া।

বুধবার বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয় হাওর সহনশীলতা ও প্রস্তুতি উদ্যোগ (HaRPI)  শীর্ষক প্রকল্পের উপস্থাপন ও পর্যালোচনা সভা।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা আহসানিয়া মিশন (DAM), যার বাজেট ৪,৮৪,০৬০.৮৩ ইউরো—বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৬ কোটি ২৯ লাখ ২৯ হাজার টাকা (প্রায় ৭ কোটি টাকা)। সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ।

সভায় সভাপতিত্ব করেন DAM-এর নির্বাহী পরিচালক মো. শাহেদুল কাইয়ুম দুলাল। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের সিনিয়র ম্যানেজার কাজল আলফোন্স দ্রং।

জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে প্রকল্পের ব্যয় ও উপকারভোগী নির্ধারণের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন,

প্রকল্পে বলা হয়েছে ৭৭ হাজার মানুষ সরাসরি এবং ৪১ হাজার পরোক্ষভাবে উপকৃত হবেন। কিন্তু পরোক্ষ উপকারভোগীদের ক্ষেত্রে ব্যাখ্যা নেই, কোনো মেকানিজম দেখানো হয়নি।

তিনি আরও বলেন,

হাওরাঞ্চলে অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতা শাকসবজি উৎপাদনে বড় বাধা। কিন্তু প্রকল্পে সে বাস্তবতা অনুপস্থিত। বজ্রপাত, আগাম বন্যা ও অতিবৃষ্টির মতো সমস্যাগুলো নিয়ে তো অন্যান্য প্রকল্প ইতোমধ্যে কাজ করছে—তাহলে এই প্রকল্পে নতুনত্ব কোথায়?

জবাবে ঢাকা আহসানিয়া মিশনের নির্বাহী পরিচালক মো. শাহেদুল কাইয়ুম দুলাল বলেন,

এই প্রকল্প হাওরের ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর দুর্যোগ সহনশীলতা বৃদ্ধিতে যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে। জেলা প্রশাসকের পর্যবেক্ষণ আমরাও গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছি।

সভায় জানানো হয়, সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলার সাতটি ঝুঁকিপূর্ণ ইউনিয়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ইউনিয়নগুলো হলো—উত্তর শ্রীপুর, দক্ষিণ শ্রীপুর, উত্তর বড়দল (তাহিরপুর) এবং শেলবরষ, জয়শ্রী ও ধর্মপাশা সদর (ধর্মপাশা)।

প্রকল্পের আওতায় মূল কার্যক্রমসমূহ:

  • জলবায়ু অভিযোজন ও দুর্যোগ প্রস্তুতি

  • ক্ষয়ক্ষতি প্রশমন ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ

  • জীববৈচিত্র্য ও প্রতিবেশ সংরক্ষণ

  • জরুরি সাড়া ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রম

  • ৩ হাজার জলবায়ু-সহনশীল বাড়ির বাগান স্থাপন

  • ১ হাজার পরিবারকে হাইজিন ও মর্যাদাকর কিট বিতরণ

  • ১ হাজার পরিবারকে বহুমুখী নগদ সহায়তা

  • ৩ হাজার বৃক্ষরোপণ

প্রকল্পটির বাস্তবতা ও সম্ভাব্য কার্যকারিতা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলে এখনও আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”