ঢাকা ০৬:৩৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কোরবানির প্রকৃত অর্থ ভুলে যাচ্ছি কি আমরা?

  • প্রকাশঃ ০৬:৩৯:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
  • / 48

বছর ঘুরে মুসলিম উম্মাহর দরজায় আবার কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল আজহা, যা মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। ঈদুল আজহার মূল ভিত্তি হল কোরবানি, যা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত তাকওয়ার প্রকাশ।

ইসলামী বিধান অনুযায়ী, সামর্থ্যবান প্রতিটি মুসলিমের জন্য কোরবানি করা ওয়াজিবকোরবানির জন্য গরু, ছাগল, দুম্বা, উট ইত্যাদি নির্দিষ্ট বয়স স্বাস্থ্যসম্পন্ন পশু নির্ধারিত রয়েছে। আরবি ‘কোরবান’ শব্দের অর্থ হল ত্যাগ আল্লাহর নৈকট্য লাভকোরবানির মূল উদ্দেশ্য মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং মানব কল্যাণের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়া।

প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে আল্লাহর এক কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন হযরত ইবরাহিম (আঃ)তিনি নিজের প্রাণপ্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ)কে আল্লাহর নির্দেশে কোরবানি দিতে প্রস্তুত হন। সেই আত্মত্যাগ ঈমানের পরীক্ষার স্মৃতিকে কেন্দ্র করেই গোটা মুসলিম বিশ্বে প্রতিবছর ঈদুল আজহার সময় কোরবানি পালন করা হয়।

তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, আজকাল অনেক ক্ষেত্রেই কোরবানি যেন লোক দেখানো আয়োজনে পরিণত হয়েছেকে কত বড় পশু কোরবানি দিলো, কার আয়োজন কত দামি—এগুলোই যেন মুখ্য হয়ে উঠছে। অথচ কোরবানির মূল শিক্ষা হল আত্মত্যাগ, খালিস নিয়ত এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। কোরবানির মাধ্যমে সমাজে দরিদ্র, অনাহারী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই হচ্ছে এর অন্যতম উদ্দেশ্য।

শরিয়তের দৃষ্টিতে, কোরবানির মাংস তিন ভাগে বিভক্ত করা উচিতএক ভাগ নিজের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়দের জন্য এবং এক ভাগ গরিব-দুঃখীদের জন্য। কিন্তু অনেকেই এখন কোরবানির এই মানবিক দিকটি ভুলে গিয়ে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ভোগ-বিলাসে মশগুল হয়ে পড়ছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সমাজে কোরবানির প্রকৃত শিক্ষা গুরুত্ব ছড়িয়ে দিতে আলেম সমাজ, ইমাম, খতিব গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবেতা না হলে ঈদুল আজহার মত একটি পবিত্র ধর্মীয় উৎসব শুধুই আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ থেকে যাবে।

এবার ঈদুল আজহা হোক কেবল উৎসবের নয়, আত্মিক পরিশুদ্ধি মানবিক মূল্যবোধ জাগরণের উৎসবএই হোক আমাদের অঙ্গীকার।

প্রতিবেদক:মো: রাইয়ান ইসলাম ( তানজীম)

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা

প্রাসঙ্গিক

শেয়ার করুন

কোরবানির প্রকৃত অর্থ ভুলে যাচ্ছি কি আমরা?

প্রকাশঃ ০৬:৩৯:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

বছর ঘুরে মুসলিম উম্মাহর দরজায় আবার কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল আজহা, যা মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব। ঈদুল আজহার মূল ভিত্তি হল কোরবানি, যা ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত তাকওয়ার প্রকাশ।

ইসলামী বিধান অনুযায়ী, সামর্থ্যবান প্রতিটি মুসলিমের জন্য কোরবানি করা ওয়াজিবকোরবানির জন্য গরু, ছাগল, দুম্বা, উট ইত্যাদি নির্দিষ্ট বয়স স্বাস্থ্যসম্পন্ন পশু নির্ধারিত রয়েছে। আরবি ‘কোরবান’ শব্দের অর্থ হল ত্যাগ আল্লাহর নৈকট্য লাভকোরবানির মূল উদ্দেশ্য মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং মানব কল্যাণের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হওয়া।

প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে আল্লাহর এক কঠিন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন হযরত ইবরাহিম (আঃ)তিনি নিজের প্রাণপ্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইল (আঃ)কে আল্লাহর নির্দেশে কোরবানি দিতে প্রস্তুত হন। সেই আত্মত্যাগ ঈমানের পরীক্ষার স্মৃতিকে কেন্দ্র করেই গোটা মুসলিম বিশ্বে প্রতিবছর ঈদুল আজহার সময় কোরবানি পালন করা হয়।

তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, আজকাল অনেক ক্ষেত্রেই কোরবানি যেন লোক দেখানো আয়োজনে পরিণত হয়েছেকে কত বড় পশু কোরবানি দিলো, কার আয়োজন কত দামি—এগুলোই যেন মুখ্য হয়ে উঠছে। অথচ কোরবানির মূল শিক্ষা হল আত্মত্যাগ, খালিস নিয়ত এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। কোরবানির মাধ্যমে সমাজে দরিদ্র, অনাহারী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই হচ্ছে এর অন্যতম উদ্দেশ্য।

শরিয়তের দৃষ্টিতে, কোরবানির মাংস তিন ভাগে বিভক্ত করা উচিতএক ভাগ নিজের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়দের জন্য এবং এক ভাগ গরিব-দুঃখীদের জন্য। কিন্তু অনেকেই এখন কোরবানির এই মানবিক দিকটি ভুলে গিয়ে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ভোগ-বিলাসে মশগুল হয়ে পড়ছেন।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সমাজে কোরবানির প্রকৃত শিক্ষা গুরুত্ব ছড়িয়ে দিতে আলেম সমাজ, ইমাম, খতিব গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবেতা না হলে ঈদুল আজহার মত একটি পবিত্র ধর্মীয় উৎসব শুধুই আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ থেকে যাবে।

এবার ঈদুল আজহা হোক কেবল উৎসবের নয়, আত্মিক পরিশুদ্ধি মানবিক মূল্যবোধ জাগরণের উৎসবএই হোক আমাদের অঙ্গীকার।

প্রতিবেদক:মো: রাইয়ান ইসলাম ( তানজীম)

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা