ঢাকা ১১:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
হিন্দু নারীর ঘরে ঢুকে নির্যাতন, দায় শুধু অপরাধীর নয়, সমাজেরও

ধর্ষণের চেয়ে বড় অপরাধ, ধর্ষিতাকে দোষারোপ করা

তুর্য দাস । জেলা প্রতিনিধি
  • প্রকাশঃ ০৩:৫৫:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
  • / 5

প্রতীকী ছবি


গত বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লার মুরাদনগরের এক হিন্দু পরিবারের ঘরে জোরপূর্বক প্রবেশ করে এক নারীর প্রতি বর্বরতা চালানো হয়। ফজর আলী দরজা ভেঙে সেই নারীকে ধর্ষণ করে। আরও ভয়াবহ হচ্ছে, ঘটনার পর এলাকার কিছু মানুষ সেই নারীকেই দোষারোপ করে, শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং ঘটনাটির ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।

এটি শুধু অপরাধ নয়-এটি আমাদের সামাজিক ব্যর্থতার নগ্ন প্রতিচ্ছবি। মূল অভিযুক্ত ফজর আলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই নারী বাড়িতে একা ছিলেন। দরজা খুলতে না চাওয়ায় অভিযুক্ত ব্যক্তি জোরপূর্বক ঘরে ঢুকে ধর্ষণ ও শারিরক নির্যাতন চালায়। পরে স্থানীয় কিছু মানুষ ঘটনাস্থলে এসে উল্টো ওই নারীকে দোষারোপ করে মারধর করে।

শুক্রবার বিষয়টি প্রকাশ না পেলেও শনিবার রাতে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তখন পুলিশের নজরে আসে। আজ সকালে পুলিশ ফজর আলীকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন।

ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা করেছেন। ভুক্তভোগী একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী। ধর্মীয় পরিচয় হওয়ায় অনেক সময়ই এসব পরিবার বিচারপ্রক্রিয়ায় যেতে ভয় পায়। ভয়ের কারণ-নিরাপত্তাহীনতা, সামাজিক অপবাদ, ও প্রতিশোধের আশঙ্কা। এটাই বাংলাদেশে অধিকাংশ ধর্ষনের ক্ষেত্রে বাস্তবচিত্র। একারনে অনেক ধর্ষন চাপা পরে যায়।

করণীয় কী? ধর্ষণ বা শারীরিক সহিংসতার অভিযোগে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করতে হবে। ভুক্তভোগীর মর্যাদা রক্ষায় গণমাধ্যম ও জনগণকে সচেতন হতে হবে। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ ও প্রচার যেন কঠোর শাস্তির আওতায় পড়ে, সে বিষয়ে আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। নারীসহ সকল সংখ্যালঘুদের জন্য বিশেষ সুরক্ষা ও সহায়তা ব্যবস্থা চালু করা দরকার।

একটা প্রশ্নটা এই সমাজে কাছে রইলো? একটি নারী নিজ ঘরের দরজা বন্ধ করে থাকতেও যদি নিরাপদে না থাকে, তাহলে নারীদের নিরাপদ কোথায়..? আর আমরাইবা কী ধরনের সমাজে বাস করছি?

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

প্রাসঙ্গিক

শেয়ার করুন

হিন্দু নারীর ঘরে ঢুকে নির্যাতন, দায় শুধু অপরাধীর নয়, সমাজেরও

ধর্ষণের চেয়ে বড় অপরাধ, ধর্ষিতাকে দোষারোপ করা

প্রকাশঃ ০৩:৫৫:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

প্রতীকী ছবি


গত বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লার মুরাদনগরের এক হিন্দু পরিবারের ঘরে জোরপূর্বক প্রবেশ করে এক নারীর প্রতি বর্বরতা চালানো হয়। ফজর আলী দরজা ভেঙে সেই নারীকে ধর্ষণ করে। আরও ভয়াবহ হচ্ছে, ঘটনার পর এলাকার কিছু মানুষ সেই নারীকেই দোষারোপ করে, শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং ঘটনাটির ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।

এটি শুধু অপরাধ নয়-এটি আমাদের সামাজিক ব্যর্থতার নগ্ন প্রতিচ্ছবি। মূল অভিযুক্ত ফজর আলীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ওই নারী বাড়িতে একা ছিলেন। দরজা খুলতে না চাওয়ায় অভিযুক্ত ব্যক্তি জোরপূর্বক ঘরে ঢুকে ধর্ষণ ও শারিরক নির্যাতন চালায়। পরে স্থানীয় কিছু মানুষ ঘটনাস্থলে এসে উল্টো ওই নারীকে দোষারোপ করে মারধর করে।

শুক্রবার বিষয়টি প্রকাশ না পেলেও শনিবার রাতে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তখন পুলিশের নজরে আসে। আজ সকালে পুলিশ ফজর আলীকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন।

ভুক্তভোগী নারী থানায় মামলা করেছেন। ভুক্তভোগী একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারী। ধর্মীয় পরিচয় হওয়ায় অনেক সময়ই এসব পরিবার বিচারপ্রক্রিয়ায় যেতে ভয় পায়। ভয়ের কারণ-নিরাপত্তাহীনতা, সামাজিক অপবাদ, ও প্রতিশোধের আশঙ্কা। এটাই বাংলাদেশে অধিকাংশ ধর্ষনের ক্ষেত্রে বাস্তবচিত্র। একারনে অনেক ধর্ষন চাপা পরে যায়।

করণীয় কী? ধর্ষণ বা শারীরিক সহিংসতার অভিযোগে দ্রুত বিচার সম্পন্ন করতে হবে। ভুক্তভোগীর মর্যাদা রক্ষায় গণমাধ্যম ও জনগণকে সচেতন হতে হবে। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ ও প্রচার যেন কঠোর শাস্তির আওতায় পড়ে, সে বিষয়ে আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। নারীসহ সকল সংখ্যালঘুদের জন্য বিশেষ সুরক্ষা ও সহায়তা ব্যবস্থা চালু করা দরকার।

একটা প্রশ্নটা এই সমাজে কাছে রইলো? একটি নারী নিজ ঘরের দরজা বন্ধ করে থাকতেও যদি নিরাপদে না থাকে, তাহলে নারীদের নিরাপদ কোথায়..? আর আমরাইবা কী ধরনের সমাজে বাস করছি?

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”