ঢাকা ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘আমরা ব্যর্থ’ — আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল সেক্রেটারির পদত্যাগ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশঃ ০২:২৪:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
  • / 3

লিসানুল আলম লিসান ছবি সংগৃহীত


আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (এইউএসটি) শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন লিসানুল আলম লিসান। শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক আবেগঘন পোস্টের মাধ্যমে তিনি এ পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত লিসান ফেসবুকে লেখেন, “ব্যক্তিগত কারণে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। জন্মলগ্ন থেকে পারিবারিক রাজনীতির সূত্র ধরে দীর্ঘ ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এ দলের রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলাম। বিএনপির দুঃসময়েও পাশে থেকেছি।”

নিজের রাজনীতির অভিজ্ঞতা তুলে ধরে লিসান লিখেছেন, “২০১৮ সালের নির্বাচনে বাবা জেলে থাকাকালীন দুই মাসের বেশি বাড়িছাড়া ছিলাম। ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ, হরতাল-অবরোধ, জুলাই আন্দোলন সবখানেই সামনের সারিতে ছিলাম। সবই ছিল একটি স্বপ্নকে ঘিরে নতুন বাংলাদেশের বিনির্মাণ আর সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ।”

কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ না হওয়ার হতাশা স্পষ্ট তাঁর লেখায়। তিনি বলেন, “৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর অনেক আশা ছিল, দেশ নতুন করে গড়ে উঠবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ঠিক উল্টোটা। সবাই যে যার মতো করে নিজের স্বার্থ আর ভোগের রাজনীতি করেছে। এই অন্যায়-ভোগের রাজনীতিতে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি—সবাই দণ্ডিত। সবাই নতুন বন্দোবস্তের কথা বললেও কেউ কথা রাখেনি, কেউ জুলাইকে মনে রাখেনি, শহীদদের রক্তের সঙ্গেও গাদ্দারি হয়েছে।”

লিসানুল আলম লিসান নিজের এলাকায় চাঁদাবাজি ও পুনর্বাসনের অভিযোগও আনেন। আমার নিজ উপজেলা হাতিয়ায় ৫ আগস্টের পর বিএনপি-এনসিপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করেছে, চাঁদাবাজি করেছে যা অতীতে কখনো দেখিনি। কতজন রাতারাতি শতকোটি টাকার মালিক হয়েছে। তরুণ নেতারা চাইলেই রাজনীতির চিত্র বদলে দিতে পারতেন, কিন্তু বদলাননি, যোগ করেন তিনি।

পদত্যাগপত্রে লিসান গভীর হতাশার পাশাপাশি আক্ষেপও প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, সব দলেই ভালো মানুষের দেখা পেয়েছি, তাদের জন্য সমবেদনা। আমরা যারা সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ আর প্রকৃত দেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছি, আমরা ব্যর্থ। আমি কারও কোনো ক্ষতি করিনি, যদি কখনো হয়ে থাকে, ক্ষমা করবেন। যেদিন স্বচ্ছ বাংলাদেশ গড়ার ডাক আসবে, সেদিন আমি আবার আপনাদের সাথে থাকবো, মিছিলের অগ্রভাগে, প্রথম গুলির শিকার হতে প্রস্তুত।

পোস্টের শেষ লাইনে লিসান লেখেন- “বাংলাদেশ জিন্দাবাদ!”

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

‘আমরা ব্যর্থ’ — আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল সেক্রেটারির পদত্যাগ

প্রকাশঃ ০২:২৪:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

লিসানুল আলম লিসান ছবি সংগৃহীত


আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (এইউএসটি) শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন লিসানুল আলম লিসান। শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক আবেগঘন পোস্টের মাধ্যমে তিনি এ পদত্যাগের ঘোষণা দেন।

দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত লিসান ফেসবুকে লেখেন, “ব্যক্তিগত কারণে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি। জন্মলগ্ন থেকে পারিবারিক রাজনীতির সূত্র ধরে দীর্ঘ ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এ দলের রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলাম। বিএনপির দুঃসময়েও পাশে থেকেছি।”

নিজের রাজনীতির অভিজ্ঞতা তুলে ধরে লিসান লিখেছেন, “২০১৮ সালের নির্বাচনে বাবা জেলে থাকাকালীন দুই মাসের বেশি বাড়িছাড়া ছিলাম। ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ, হরতাল-অবরোধ, জুলাই আন্দোলন সবখানেই সামনের সারিতে ছিলাম। সবই ছিল একটি স্বপ্নকে ঘিরে নতুন বাংলাদেশের বিনির্মাণ আর সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ।”

কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ না হওয়ার হতাশা স্পষ্ট তাঁর লেখায়। তিনি বলেন, “৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর অনেক আশা ছিল, দেশ নতুন করে গড়ে উঠবে। কিন্তু বাস্তবে হয়েছে ঠিক উল্টোটা। সবাই যে যার মতো করে নিজের স্বার্থ আর ভোগের রাজনীতি করেছে। এই অন্যায়-ভোগের রাজনীতিতে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি—সবাই দণ্ডিত। সবাই নতুন বন্দোবস্তের কথা বললেও কেউ কথা রাখেনি, কেউ জুলাইকে মনে রাখেনি, শহীদদের রক্তের সঙ্গেও গাদ্দারি হয়েছে।”

লিসানুল আলম লিসান নিজের এলাকায় চাঁদাবাজি ও পুনর্বাসনের অভিযোগও আনেন। আমার নিজ উপজেলা হাতিয়ায় ৫ আগস্টের পর বিএনপি-এনসিপির নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করেছে, চাঁদাবাজি করেছে যা অতীতে কখনো দেখিনি। কতজন রাতারাতি শতকোটি টাকার মালিক হয়েছে। তরুণ নেতারা চাইলেই রাজনীতির চিত্র বদলে দিতে পারতেন, কিন্তু বদলাননি, যোগ করেন তিনি।

পদত্যাগপত্রে লিসান গভীর হতাশার পাশাপাশি আক্ষেপও প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, সব দলেই ভালো মানুষের দেখা পেয়েছি, তাদের জন্য সমবেদনা। আমরা যারা সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ আর প্রকৃত দেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছি, আমরা ব্যর্থ। আমি কারও কোনো ক্ষতি করিনি, যদি কখনো হয়ে থাকে, ক্ষমা করবেন। যেদিন স্বচ্ছ বাংলাদেশ গড়ার ডাক আসবে, সেদিন আমি আবার আপনাদের সাথে থাকবো, মিছিলের অগ্রভাগে, প্রথম গুলির শিকার হতে প্রস্তুত।

পোস্টের শেষ লাইনে লিসান লেখেন- “বাংলাদেশ জিন্দাবাদ!”

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”