ঢাকা ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের ঐতিহাসিক সমাবেশ: আসছে ১০ হাজার বাস-৮ ট্রেন-লঞ্চ, লক্ষ ১০ লাখ মানুষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশঃ ১০:৫১:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫
  • / 9

১০ লাখ অংশগ্রহণকারীর লক্ষ্যে জামায়াতের ‘ঐতিহাসিক’ সমাবেশ শনিবার | ছবি: সংগৃহীত  


সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামীকাল শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দুপুর ২টায় শুরু হতে যাওয়া এই কর্মসূচিকে ঘিরে ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দলটি। আয়োজকদের দাবি, এটি হতে যাচ্ছে দলের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক সমাবেশ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সমাবেশস্থলে মঞ্চ নির্মাণসহ যাবতীয় প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। চলছে ভ্রাম্যমাণ টয়লেট স্থাপন, ব্যানার-ফেস্টুন টানানো, দিকনির্দেশনামূলক সাইনবোর্ড বসানোসহ নানা কার্যক্রম। বিশুদ্ধ পানির রিজার্ভসহ করা হয়েছে ওজু ও প্রার্থনার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা।

জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রায় ৬০০ জনের একযোগে ওজুর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, মঞ্চে ৩০০ জনের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং ভিআইপি ও সাধারণ অংশগ্রহণকারীদের জন্য আলাদা ভ্রাম্যমাণ টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, সমাবেশস্থলে থাকবে তিন শতাধিক সাউন্ড সিস্টেম ও ৩৪টি এলইডি মনিটর, যা দিয়ে মঞ্চের কার্যক্রম মাঠের বাইরেও সরাসরি দেখা যাবে। পানি সরবরাহের জন্য মাঠজুড়ে ৬০ হাজার লিটারের পানির রিজার্ভ রাখা হচ্ছে এবং ইউনিটভিত্তিক কর্মীদের জন্য রয়েছে আলাদা সরবরাহ ব্যবস্থা।

সমাবেশে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ১০ হাজারের বেশি বাস, ৮টি বিশেষ ট্রেন এবং লঞ্চযোগে নেতাকর্মীরা রাজধানীতে আসছেন। আয়োজকদের টার্গেট, কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষ সমাবেশে অংশ নেবেন।

জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের প্রচার বিভাগের দায়িত্বশীল আব্দুস সাত্তার সুমন জানান, “আমরা সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য, সাত দফা দাবি আদায়ের জন্য সকল ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করা।”

সমাবেশ সুশৃঙ্খল রাখতে দায়িত্ব পালন করবেন ৬ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক। তারা মাঠ ব্যবস্থাপনা, প্রবেশপথ নিয়ন্ত্রণ, জরুরি সেবা ও অংশগ্রহণকারীদের সহায়তা প্রদান করবেন।

নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেছে জামায়াত। দলটির দাবি, আইনগত কাঠামোর মধ্যে থেকেই শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকালে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ড. মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “সাত দফা দাবিতে কালকের সমাবেশ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণজমায়েতে রূপ নিতে যাচ্ছে। প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে আমরা রয়েছি। রাজধানীবাসির সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত।”

তিনি আরও জানান, সমাবেশে কোনো প্রধান অতিথি থাকবে না। মঞ্চে উপস্থিত সবাইকে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

জামায়াতের সাত দফা দাবি ১. ২০২৪ সালের ৫ আগস্টসহ সব গণহত্যার বিচার। ২. রাষ্ট্রের সব স্তরে প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার। ৩. ঐতিহাসিক জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্রের পূর্ণ বাস্তবায়ন। ৪. জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন। ৫. প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (PR) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন। ৬. প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ। ৭. রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য সমান সুযোগ ও ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিতকরণ।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের ঐতিহাসিক সমাবেশ: আসছে ১০ হাজার বাস-৮ ট্রেন-লঞ্চ, লক্ষ ১০ লাখ মানুষ

প্রকাশঃ ১০:৫১:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫

১০ লাখ অংশগ্রহণকারীর লক্ষ্যে জামায়াতের ‘ঐতিহাসিক’ সমাবেশ শনিবার | ছবি: সংগৃহীত  


সাত দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামীকাল শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ আয়োজন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দুপুর ২টায় শুরু হতে যাওয়া এই কর্মসূচিকে ঘিরে ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দলটি। আয়োজকদের দাবি, এটি হতে যাচ্ছে দলের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক সমাবেশ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সমাবেশস্থলে মঞ্চ নির্মাণসহ যাবতীয় প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। চলছে ভ্রাম্যমাণ টয়লেট স্থাপন, ব্যানার-ফেস্টুন টানানো, দিকনির্দেশনামূলক সাইনবোর্ড বসানোসহ নানা কার্যক্রম। বিশুদ্ধ পানির রিজার্ভসহ করা হয়েছে ওজু ও প্রার্থনার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা।

জামায়াতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রায় ৬০০ জনের একযোগে ওজুর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, মঞ্চে ৩০০ জনের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং ভিআইপি ও সাধারণ অংশগ্রহণকারীদের জন্য আলাদা ভ্রাম্যমাণ টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে।

তথ্য অনুযায়ী, সমাবেশস্থলে থাকবে তিন শতাধিক সাউন্ড সিস্টেম ও ৩৪টি এলইডি মনিটর, যা দিয়ে মঞ্চের কার্যক্রম মাঠের বাইরেও সরাসরি দেখা যাবে। পানি সরবরাহের জন্য মাঠজুড়ে ৬০ হাজার লিটারের পানির রিজার্ভ রাখা হচ্ছে এবং ইউনিটভিত্তিক কর্মীদের জন্য রয়েছে আলাদা সরবরাহ ব্যবস্থা।

সমাবেশে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ১০ হাজারের বেশি বাস, ৮টি বিশেষ ট্রেন এবং লঞ্চযোগে নেতাকর্মীরা রাজধানীতে আসছেন। আয়োজকদের টার্গেট, কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষ সমাবেশে অংশ নেবেন।

জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের প্রচার বিভাগের দায়িত্বশীল আব্দুস সাত্তার সুমন জানান, “আমরা সব রাজনৈতিক দলের প্রতি আমন্ত্রণ জানিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য, সাত দফা দাবি আদায়ের জন্য সকল ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করা।”

সমাবেশ সুশৃঙ্খল রাখতে দায়িত্ব পালন করবেন ৬ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবক। তারা মাঠ ব্যবস্থাপনা, প্রবেশপথ নিয়ন্ত্রণ, জরুরি সেবা ও অংশগ্রহণকারীদের সহায়তা প্রদান করবেন।

নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেছে জামায়াত। দলটির দাবি, আইনগত কাঠামোর মধ্যে থেকেই শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।

শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকালে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতারা সমাবেশস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে দলের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ড. মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, “সাত দফা দাবিতে কালকের সমাবেশ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণজমায়েতে রূপ নিতে যাচ্ছে। প্রস্তুতির শেষ পর্যায়ে আমরা রয়েছি। রাজধানীবাসির সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত।”

তিনি আরও জানান, সমাবেশে কোনো প্রধান অতিথি থাকবে না। মঞ্চে উপস্থিত সবাইকে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

জামায়াতের সাত দফা দাবি ১. ২০২৪ সালের ৫ আগস্টসহ সব গণহত্যার বিচার। ২. রাষ্ট্রের সব স্তরে প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কার। ৩. ঐতিহাসিক জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্রের পূর্ণ বাস্তবায়ন। ৪. জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের পুনর্বাসন। ৫. প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (PR) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন। ৬. প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ। ৭. রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের জন্য সমান সুযোগ ও ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিতকরণ।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”