ছাত্রলীগ পরিচয়ে নির্যাতনে অংশ নিতেন শিবির সংশ্লিষ্টরা, ফেসবুক পোস্টে জানালেন আবদুল কাদের

- প্রকাশঃ ১২:২৬:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ অগাস্ট ২০২৫
- / 4
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতিতে ছাত্রলীগের ব্যানারে সংগঠিত নির্যাতন- নিপীড়নে ইসলামী ছাত্রশিবির সংশ্লিষ্টদের অংশগ্রহণের অভিযোগ তুলেছেন গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের।
রোববার (৩ আগস্ট) দিবাগত রাতে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে যারা ছাত্রলীগের পরিচয়ে সহিংসতা চালিয়েছেন, তাদের একটি অংশ পূর্বে ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
আবদুল কাদের লেখেন, হলে থাকার কারণে ছাত্রশিবিরের যে ছেলেগুলো ছাত্রলীগে যোগ দেয়, তারা নিজের পরিচয় লুকিয়ে ছাত্রলীগের হয়ে অতি উৎসাহে নিপীড়নে অংশ নিত। নিজেদের ‘লীগার’ প্রমাণ করতে তারা হয়ে ওঠে আরও উগ্র।
তিনি দাবি করেন, এসব ব্যক্তিদের বিষয়ে শিবিরের তৎকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সাদিক কায়েম সরাসরি তদবির করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ফেসবুক পোস্টে আবদুল কাদের কয়েকজনের নাম-পরিচয়ও উল্লেখ করেন। এর মধ্যে রয়েছেন বিজয় একাত্তর হলের মাজেদুর রহমান, ঢাবি ছাত্রলীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক মুসাদ্দিক বিল্লাহ, জসীম উদ্দীন হলের আফজালুন নাঈম, মুজিব হলের ইলিয়াস হোসাইন, মুহসীন হলের শাহাদাত হোসেন সোহেল, জহুরুল হক হলের হাসানুল বান্না এবং এ এফ রহমান হলের রায়হান উদ্দিন।
আবদুল কাদেরের দাবি, এদের অনেকেই ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে যুক্ত থেকে নিপীড়নের নেতৃত্ব দিয়েছেন, পরে ৫ আগস্টের ঘটনার পর আবার শিবিরের রাজনীতিতে ফিরে যান বা নিজেদের পরিচয় প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ৫ আগস্টের ঘটনার পর হলে হলে যে শৃঙ্খলা কমিটি ও ব্যাচ প্রতিনিধি নির্বাচন হয়, সেখানে অনলাইনে ভোটের মাধ্যমে শিবির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদেরই বসানো হয়। পরে তারাই ছাত্রলীগের হয়ে তালিকা তৈরি করে, যাতে নিজেদের সাথিদের নাম বাদ পড়ে যায়।
পোস্টে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২৪ সালে দুই ব্যবসায়ী অপহরণ, গেস্টরুমে শিক্ষার্থী নির্যাতন, এবং মেডিকেলে আহত শিক্ষার্থীদের ওপর ফের হামলার মতো ঘটনায়ও এই ‘গুপ্ত শিবির’ সদস্যদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। আবদুল কাদের অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যের সহযোগিতায় এসব ব্যক্তিরা বিচার এড়িয়ে চলেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক ও ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি আবু সাদিক কায়েম প্রথম আলোকে বলেন, কাদেরের সঙ্গে এসব বিষয়ে আমার কোনো কথা হয়নি। তিনি যা লিখেছেন, তা সত্য নয়। আমি শুধু মামলার বিষয়ে জানতে চেয়ে আরমানকে মেসেজ দিয়েছিলাম, যেন কোনো নির্দোষ শিক্ষার্থী হয়রানির শিকার না হন।
তবে আবদুল কাদেরের দাবি, শুধু নির্দোষ নয়, রাজনৈতিক স্বার্থেই প্রকৃত অপরাধীদের বাঁচাতে তদবির করা হয়েছে। শিবির তাদের পূর্বের ও বর্তমান কমিটি প্রকাশ করলেই সব স্পষ্ট হবে।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ৫ আগস্টের পর শিবির যদি সত্যিই নিরপেক্ষ থাকত, তাহলে তাদের কমিটি প্রকাশে এত দ্বিধা কেন? হলে হলে এখন যারা ছাত্রলীগ পরিচয়ে মাদবরি করছে, তাদের আগের চেহারা সামনে এলেই আসল সত্য জানা যাবে।