চলমান হামলা-পাল্টা হামলার মধ্যে এবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাসভবন লক্ষ্য করে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ইরান। দেশটির ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলীয় শহর সিজারিয়ায় অবস্থিত এই সরকারি বাসভবনের দিকে অন্তত ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম দি ইকোনোমিক টাইমস।
রোববার (১৫ জুন) সন্ধ্যার দিকে শুরু হওয়া এই আক্রমণে ইরান একযোগে ইসরায়েলের একাধিক স্থানে হামলা চালায়। আলজাজিরা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানায়, এসব হামলার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জরুরি সতর্কতা জারি করে এবং নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়।
হামলার কারণে হাদেরার একটি বিদ্যুৎকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তেল আবিব, হাইফা এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় নেগেভ মরুভূমিতে অবস্থিত বেশ কয়েকটি বিমানঘাঁটি এবং সামরিক স্থাপনাকেও লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়।
আলজাজিরা-র তথ্য অনুযায়ী, হাইফা শহরে চালানো হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। তবে নেতানিয়াহুর বাসভবনে সরাসরি কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিনা, সে বিষয়ে নিশ্চিত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, ক্ষেপণাস্ত্রের কিছু অংশ হাইফা ছাড়াও আশপাশের শহরে আছড়ে পড়তে পারে এবং আরও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। জনগণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে, ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনা এবং এএফপি-র বরাতে জানা যায়, ইরান ‘নতুন ক্ষেপণাস্ত্র অভিযান’ শুরু করার ঘোষণা দিয়েছে। তেহরানের দাবি, এই আক্রমণটি ইসরায়েলের ১৩ জুনের হামলার পাল্টা জবাব, যেটিতে ইরানের সামরিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কারখানাগুলো লক্ষ্যবস্তু ছিল।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়, “ইরান থেকে নতুন ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে। জনগণকে সুরক্ষিত বাংকারে থাকতে বলা হচ্ছে এবং পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত নিরাপদ স্থানে অবস্থান করতে বলা হয়েছে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, সরাসরি একে অপরের ভূখণ্ডে হামলার ঘটনা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনাকে আরও তীব্র করে তুলেছে এবং দুই দেশের মধ্যে পূর্ণমাত্রার সামরিক সংঘর্ষের ঝুঁকি এখন বাস্তব হয়ে উঠেছে।
