টেলিভিশন প্রতিবেদন ঘিরে বিতর্ক
মায়ের বুকে রিপন মিয়া: কান্নায় ভেসে গেল বিতর্ক

- প্রকাশঃ ০২:১৮:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
- / 18
রিপন মিয়া মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন | ছবি: ভিডিও থেকে
আবারও আলোচনায় জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়া। মঙ্গলবার সারাদিন তাঁকে ঘিরে সরব ছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। একদিকে একটি টেলিভিশন প্রতিবেদনে তাঁর বিরুদ্ধে পারিবারিক দায় এড়ানোর অভিযোগ, অন্যদিকে বিকেলে প্রকাশিত মায়ের কাছে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়া রিপনের ভিডিও—এই দুই বিপরীত দৃশ্য একসঙ্গে নাড়া দিয়েছে নেটদুনিয়াকে।
দুপুরে দেশের একটি টেলিভিশন চ্যানেল প্রচার করে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন। সেখানে রিপনের মা অভিযোগ করেন, খুব কষ্ট করে মানুষ করছি। কিন্তু এখন পরিচয় দেয় না। আমরা গরিব। পরিচয় দিলে যদি ওর মানসম্মান না থাকে!
প্রতিবেদনে বলা হয়, জনপ্রিয়তার চূড়ায় থাকা রিপন এখন মা–বাবার সঙ্গে থাকেন না; আলাদা পাকা বাড়িতে স্ত্রী–সন্তান নিয়ে থাকেন, কিন্তু বাবা–মায়ের ভরণপোষণ দেন না।
সংবাদটি প্রচারের পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা। কেউ লিখেছেন, “খ্যাতি মানুষকে মানুষ থাকতে দেয় না।
আবার কেউ মন্তব্য করেন, মায়ের কান্না দেখলে রিপনের ভিডিও দেখা যায় না।
‘তোমারে দেহি না আমি?’—ছেলের কান্নায় কেঁদে উঠলেন মা
তবে মঙ্গলবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে নতুন এক ভিডিও। সেখানে দেখা যায়, রিপন মিয়া মাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছেন। আঞ্চলিক টানে বলতে শোনা যায়, তোমারে দেহি না আমি? আব্বারে দেহি না আমি? তুমি ইড্ডা কী করলা? আমার জীবনডা শেষ করলা!
এ সময় মাকেও দেখা যায় ছেলেকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে। ভিডিওটি প্রকাশের পর অনেকে মত বদলান—যাঁরা আগেই সমালোচনা করছিলেন, তাঁদের অনেকে লিখেছেন, “মা-ছেলের সম্পর্ক সবচেয়ে পবিত্র। সাময়িক ভুল–বোঝাবুঝি মিটে যাক।
এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রিপন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, এই ঘটনা নিয়ে কথা বলার মানসিক অবস্থায় আমি নেই। তবে খুব তাড়াতাড়ি সব প্রশ্নের উত্তর আমি দেব। আমি আমার পরিবারকে সব সময় দেখে এসেছি, ভবিষ্যতেও দেখে যাব। আমার যদি কোনো ঘাটতি থাকে, তা পূরণ করব। কিন্তু আমার সরল বাবা–মাকে নিয়ে যারা ব্যবসা করেছে, তাদের বিচার একদিন হবে।
এর আগের দিন (সোমবার) নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে রিপন দাবি করেন, কয়েকজন টেলিভিশন সাংবাদিক কোনো অনুমতি ছাড়াই আমার বাড়িতে ঢুকে পড়ে। ঘরে নারী সদস্য থাকার পরও ভিডিও করে, পরিবারকে হেনস্তা করেছে তারা।
নেত্রকোনার সদর উপজেলার এক সাধারণ পরিবার থেকে উঠে আসা রিপন মিয়া আলোচনায় আসেন ২০১৬ সালে। তাঁর তৈরি একটি ভিডিও— বন্ধু তুমি একা হলে আমায় দিয়ো ডাক,/ তোমার সাথে গল্প করব আমি সারা রাত
সহজ-সরল আবেগে ভরপুর এই ভিডিওটি লাখো মানুষের মন ছুঁয়ে দেয়।
এরপর থেকে আঞ্চলিক ভাষায় হাস্যরসাত্মক ও মানবিক কনটেন্ট তৈরি করে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। বর্তমানে তাঁর ফেসবুক অনুসারী প্রায় ১৯ লাখ। বিজ্ঞাপন, সিনেমা প্রচারণা এবং নাটকেও অভিনয় করেছেন তিনি।
রিপন মিয়া–কে ঘিরে সাম্প্রতিক এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন করে আলোচনা তুলেছে—খ্যাতি ও পারিবারিক সম্পর্কের ভারসাম্য কোথায়?
একদিকে জনপ্রিয়তার আলো, অন্যদিকে মায়ের অশ্রু—এই দুই বাস্তবতার মাঝখানে দাঁড়িয়ে এখন রিপন মিয়া আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।