স্ত্রী ও মায়ের সঙ্গে রিপন মিয়া | ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়া মঙ্গলবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদন নিয়ে বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলেন। সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে বাবা-মায়ের খোঁজ না রাখা এবং স্ত্রী–সন্তানদের অস্বীকার করার অভিযোগ ওঠে। প্রতিবেদনটি প্রচারের পর থেকেই অনলাইন দুনিয়ায় শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা–সমালোচনা।

বুধবার দুপুরে ঢাকায় হাজির হন রিপন মিয়া, সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা, স্ত্রী ও দুই সন্তান। গণমাধ্যমের সামনে তিনি জানালেন, সেদিন যা ঘটেছিল—আর কীভাবে ঘটনাটি তাঁর জীবনে ঝড় তোলে।

রিপন বলেন, ঘুম থেকে উঠে চা খাইতে গেছিলাম, হঠাৎ কয়েকজন সাংবাদিক আইসা ক্যামেরা ধরল। মজা করতে বলল, আমি ছন্দ বলে মজা করছিলাম। কিন্তু ওরা আমার পরিবার নিয়ে নানা প্রশ্ন করতে থাকে। আগে জানায়নি, তারা আমার বাড়ি গিয়েছিল। পরে টিভিতে দেখি, কথাগুলো কেটে কেটে দেখানো হয়েছে। আমি তো সব বলছিলাম, কিন্তু ভিডিওতে সবটা রাখে নাই।

তিনি আরও বলেন, প্রতিবেদনে তাঁকে স্ত্রী–সন্তান অস্বীকার করার অভিযোগ আনা হয়েছে, যা তিনি ভুল বোঝাবুঝি বলে দাবি করেন। দেড় বছর আগে ভাইসাবের এক ভিডিওতে আমি বিয়া–বউ নিয়ে কথা কইছিলাম। কিন্তু ওই সাংবাদিকরা যখন বারবার একই প্রশ্ন করছিল, তখন আমি তেড়ামি করে বলছিলাম, ‘আমি বিয়া করিনি।’ কে জানত, এটা এমন ঝড় তুলবে!

বাবা–মাকে না দেখার অভিযোগের বিষয়ে রিপনের বক্তব্য, আমি নিজেই তাদের জন্য ঘর বানাচ্ছি। তিনটা রুম করছি—একটায় আমি বউ–বাচ্চা নিয়া থাকব, আরেকটায় আব্বু–আম্মু থাকবেন। আমি কেমনে দেখি না উনাদের? কোন মাসে টাকা দিই নাই, এইটা জিজ্ঞেস করলে ভালো হইত।

পেশায় কাঠমিস্ত্রি রিপন বলেন, ভিডিও বানানো তাঁর নেশা, পেশা নয়। ভাই, আমি কাঠমিস্ত্রি মানুষ। আল্লাহর রহমতে সব পারি। কনটেন্ট না বানাইলেও আমার সংসার চলবে। প্রয়োজনে ভিডিও আর বানামু না।

রিপনের মা ফাতেমা বেগমও বলেন, প্রতিবেশীদের প্ররোচনাতেই ভুল বোঝাবুঝির সূত্রপাত। অনেকে কয়, ‘তোমার ছেলে লাখ লাখ টাকা কামায়, তোমারে কী দিছে।’ আমি ভাবছিলাম সাংবাদিকরা আইছে সাহায্য করতে। বুঝি নাই, তারা উল্টো আমাদের বিপদে ফেলবে। লোভে পড়ে আমার ছেলেরে কষ্ট দিছি।”

তিনি আরও জানান, রিপন একা নন—তাঁর অন্য ছেলেরাও নিয়মিত বাবা–মায়ের খোঁজখবর রাখেন। আমরা গরিব মানুষ। হের (রিপন) বাপ কাজ করতে পারে না। তিন ছেলে না দেখলে আমরা চলব কেমনে?”

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুপুরে একটি টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদনে রিপনের মায়ের বক্তব্য তুলে ধরা হয়, যেখানে তিনি বলেন, “আমরা গরিব, তাই হয়তো ও এখন পরিচয় দিতে চায় না।” প্রতিবেদনের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্ক।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”