বর্তমানে দেশের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ জনগণের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, ডিম, মুরগি, সবজি—প্রতিটি পণ্যের দাম গত কয়েক মাসে কয়েক দফা বেড়েছে। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষ এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮০ টাকা, ডাল ১৪০ টাকা, আর সয়াবিন তেল 200 টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে অনেক পরিবারকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য একাধিক কারণ দায়ী। এর মধ্যে রয়েছে মজুদদারি, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধি, উৎপাদন খরচের ঊর্ধ্বগতি এবং আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব। এছাড়া সরকারি তদারকির অভাব ও বাজার মনিটরিং ব্যবস্থার দুর্বলতাও দায়ী।
ব্যবসায়ীদের একাংশ বলছে, ডলারের উচ্চমূল্য, আমদানিতে বিলম্ব এবং উৎপাদন সংকটের কারণে মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে। অন্যদিকে সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, এসব অজুহাত দেখিয়ে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা করছে।
বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তবে বাস্তবে তার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। একাধিক অভিযান ও মূল্য তালিকা প্রদর্শনের নির্দেশনা থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে তার বাস্তবায়ন নেই বললেই চলে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার পাশাপাশি কঠোর বাজার তদারকি, গুদামজাত পণ্যের তথ্যপ্রকাশ এবং সরবরাহ চেইন শক্তিশালী করতে হবে। এছাড়া ভর্তুকিনির্ভর ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিতরণ কার্যক্রম আরও বিস্তৃত করা জরুরি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতি সামাজিক ও অর্থনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।