টাইব্রেকারে একসময় এগিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত হার মানতে হলো বাংলাদেশকে। নাটকীয়তায় ভরপুর সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভারতের কাছে ৪-৩ গোলে পরাজিত হয়ে শিরোপা স্বপ্ন ভেঙেছে তরুণ লাল-সবুজ প্রতিনিধিদের।
বাংলাদেশের জন্য শুরুটা ছিল চমৎকার। নির্ধারিত সময় শেষে ১-১ সমতায় থাকা ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। টাইব্রেকারে প্রথম শটে সফল হন মিঠু চৌধুরি, পরে মুর্শেদ আলী ও জয় আহমেদ গোল করলে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৩-১। ভারত তখন পর্যন্ত দুটি শটে একটি গোল করতে পেরেছে, অন্যটি সেভ করেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক মাহিন হোসেন। ফাইনালের প্রথম মিনিটে গোল হজম করলেও টাইব্রেকারে সেই ভুল পুষিয়ে দেন মাহিন।
তবে এরপর ঘটে দৃশ্যপট পরিবর্তনের শুরু। চতুর্থ শটে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হুদা ফয়সাল বল পাঠান পোস্টের ওপর দিয়ে। ভারত চতুর্থ শটে গোল করে সমতা ফেরায় ৩-৩-এ। পঞ্চম ও শেষ শটে শাহীন আহমেদের শট ঠেকিয়ে দেন ভারতের গোলরক্ষক। এরপর ভারতের শেষ শট গোল হয়ে গেলে ৪-৩ ব্যবধানে ম্যাচ নিজেদের করে নেয় তারা।
টাইব্রেকারের আগে ম্যাচটিও ছিল রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনায় ভরা। ম্যাচের শুরুতেই বাংলাদেশের গোলরক্ষক মাহিন পোস্ট ছেড়ে এগিয়ে আসেন, আর সেই সুযোগে ভারতীয় ফরোয়ার্ড লব শটে বল জালে জড়ান। ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় ভারত।
প্রথমার্ধে ভারতীয় আক্রমণ সামাল দিতে হিমশিম খায় বাংলাদেশ। এক পর্যায়ে বাংলাদেশের একটি আক্রমণ পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ৪২তম মিনিটে কর্নার থেকে বল জালে পাঠালেও রেফারির বাঁশিতে গোল বাতিল হয়ে যায়। রিপ্লেতে স্পষ্ট কোনো ফাউলের চিত্র ধরা না পড়ায় সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেন খেলোয়াড়রা।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলায় ফেরার প্রাণান্ত চেষ্টা চালায় বাংলাদেশ। ৬২তম মিনিটে কর্নার থেকে গোলের জটলার মধ্যে বল পান জয় আহমেদ। তার শট প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে ভারতের জালে ঢুকে যায়। সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। পুরো টুর্নামেন্টে এটি ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম গোল।
শেষ দিকে ভারত একাধিকবার আক্রমণে যায়, ইনজুরি টাইমে প্রায় গোল করেই ফেলেছিল তারা। তবে বাংলাদেশের রক্ষণের দৃঢ়তায় গোললাইন সেভে রক্ষা পায় দল। শেষ বাঁশি বাজার পর ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।
তীব্র স্নায়ুচাপে ভরা সেই টাইব্রেকারে শেষ হাসি হাসে ভারত, শিরোপা উঠেছে তাদের হাতেই। তবে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের লড়াকু মনোভাব, প্রতিরোধ আর সম্ভাবনার ঝলক পুরো টুর্নামেন্ট জুড়েই ছাপ রেখে গেছে।