জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ ৪ শতাধিক নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল

বাংলাদেশ

মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদসহ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী চার শতাধিক রাজনৈতিক নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল করেছে সরকার।

মঙ্গলবার (৩ জুন) রাতে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসেলেটিভ ও সংসদ বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। এতে এসব নেতাদের ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে পুনঃসংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।

‘জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) অধ্যাদেশ-২০২৫’ অনুযায়ী, স্বীকৃতি পর্যালোচনায় দেখা গেছে, তালিকাভুক্ত অনেকেই সরাসরি সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি কিংবা নির্ধারিত মুক্তিযুদ্ধকালীন কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন না। এ কারণে তারা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে আর বিবেচিত হবেন না।

শুধু প্রবাসী সরকারের সদস্যরাই নন, বরং মোট পাঁচটি শ্রেণির ব্যক্তির স্বীকৃতি বাতিল করে ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা’ পরিচয়ে পুনঃবিন্যাস করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ মুক্তিযোদ্ধা মহলে দেখা দিয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়া। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মহাসচিব বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা এসেছে। তাকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ দেওয়া জাতির ইতিহাস বিকৃতির শামিল।

একইসাথে তিনি এই সিদ্ধান্তকে “রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” বলেও উল্লেখ করেন। তবে আইন মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, তালিকা বিশুদ্ধ করার জন্যই এই পদক্ষেপ। কেউ আপত্তি করলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপিলের সুযোগ থাকবে। এদিকে, বাদপড়া কয়েকজন রাজনীতিক ও সংগঠন উচ্চ আদালতে রিট করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। একাধিক সূত্র বলছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আইনি লড়াই শুরু হতে পারে।

ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, “বঙ্গবন্ধু ছিলেন স্বাধীনতার রূপকার। তার মতো একজন নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল মানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে খাটো করা। তবে কেউ কেউ এটিকে প্রশাসনিক সংস্কারের অংশ হিসেবে দেখছেন, যেখানে ‘প্রত্যক্ষ’ ও ‘পরোক্ষ’ অবদানের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্ট করার চেষ্টা করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা