১৪৪ ধারা জারি থাকলেও সে নির্দেশ অমান্য করেই ছাত্রদল নেতা রাকিব সরাসরি পরীক্ষাকক্ষে প্রবেশ । ছবি:  প্রজন্ম কথা

নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়া ডিগ্রি কলেজে এইচএসসি পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে পরীক্ষাকক্ষে অবৈধ প্রবেশের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ভাইরাল হওয়া এক ছবিতে দেখা যায়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের বনপাড়া পৌর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব (রাকিব সরদার নামে পরিচিত) পরীক্ষাকক্ষে প্রবেশ করে ঘুরে দেখছেন, যা আইন ও নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

পরীক্ষাকেন্দ্র এলাকায় এই সময় ১৪৪ ধারা জারি থাকলেও সে নির্দেশ অমান্য করেই রাকিব সরাসরি পরীক্ষাকক্ষে প্রবেশ করেন। পরীক্ষার পরিবেশে হস্তক্ষেপ এবং কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি এধরনের উদাসীন আচরণে সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাকিবের পিতা সরদার রফিকুল ইসলাম বনপাড়া পৌর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ছিলেন। অনেকেই মনে করছেন, রাজনৈতিক পরিচয় ও প্রভাব খাটিয়েই তিনি এই অবৈধ প্রবেশের সুযোগ নিয়েছেন। একজন অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “যখন প্রশ্নপত্র ফাঁস, জালিয়াতির মতো অভিযোগে পরীক্ষার স্বচ্ছতা নিয়ে এমনিতেই প্রশ্ন উঠছে, তখন এরকম ঘটনা শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও কলুষিত করে তোলে।”

ঘটনার পরপরই পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিবকে শোকজ করা হয়েছে এবং স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৪৪ ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আইনানুগভাবে তদন্ত করে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে।

এদিকে নাটোর জেলা ছাত্রদলের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বনপাড়া শহর ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব সরদারকে সাংগঠনিক পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

শিক্ষা বিশ্লেষক ও সচেতন নাগরিকদের মতে, “এধরনের কর্মকাণ্ড শিক্ষার পরিবেশ ধ্বংস করে এবং তরুণ সমাজের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছে দেয়। প্রয়োজন সঠিক তদন্ত, কঠোর শাস্তি ও দৃষ্টান্ত স্থাপন।”

এই ঘটনা আবারও মনে করিয়ে দেয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা ও নিরপেক্ষতা রক্ষায় প্রশাসনিক তৎপরতা ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের বাইরে থেকে নিয়মনীতি কার্যকর করাই এখন সময়ের দাবি।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”