পায়রা নদীতে আবারও মৃত ডলফিন, পরিবেশ সংকটে শঙ্কা পরিবেশবাদীদের

বাংলাদেশ

বরগুনার তালতলী উপজেলার পায়রা নদীতে আবারও মৃত অবস্থায় একটি ডলফিনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২ মে) দুপুর ১টার দিকে নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের শুভসন্ধ্যা সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন নদীতীরে স্থানীয় জেলেরা প্রথমে ডলফিনটির মরদেহ দেখতে পান। পরবর্তীতে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’-এর তালতলী সমন্বয়ক আরিফুর রহমানের সহায়তায় প্রাণীটিকে উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারকৃত ডলফিনটির শরীরে গভীর আঁচড়, রক্তাক্ত লেজ এবং কাটাছেঁড়ার দাগ স্পষ্ট ছিল। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মাছ ধরার ট্রলারের প্রপেলারের আঘাতেই এর মৃত্যু হয়েছে।

পরিবেশবাদী আরিফুর রহমান বলেন, এই ঘটনা শুধুই একটি প্রাণীর মৃত্যু নয়, বরং এটি সামুদ্রিক পরিবেশের ওপর এক ভয়াবহ হুমকির বার্তা বহন করছে। নদীতে ট্রলারের অনিয়ন্ত্রিত চলাচল, অতিরিক্ত মাছ ধরা ও পানিদূষণ ডলফিনসহ অন্যান্য সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্যকে চরম ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।

এ বিষয়ে তালতলী বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান জানান, ডলফিনটির মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স অনুষদের শিক্ষক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, ডলফিনের মৃত্যু শুধু ট্রলারের ধাক্কা নয়, বরং এটি নদী ও সামুদ্রিক পরিবেশের অবনতির প্রতিচ্ছবি। পানির গুণগতমানের ক্রমাবনতি, শিল্পবর্জ্য, প্লাস্টিক, তেল এবং রাসায়নিক উপাদান মিশে নদীকে প্রাণহীন করে তুলছে। এই দূষিত পরিবেশে ডলফিনের মতো সংবেদনশীল প্রাণী টিকে থাকতে পারছে না।

তিনি আরও বলেন, এই মৃত্যুগুলো নিছক দুর্ঘটনা নয়—এটি প্রশাসনিক উদাসীনতা এবং ব্যর্থতার ফল। এখনই যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে উপকূলীয় অঞ্চলের সামগ্রিক প্রাণবৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়বে।

উল্লেখ্য, গত কয়েক মাসে তালতলীসহ পার্শ্ববর্তী নদ-নদীতে একাধিকবার মৃত ডলফিন ভেসে ওঠার ঘটনা ঘটেছে। পরিবেশবাদীরা বারবার ট্রলার নিয়ন্ত্রণ, দূষণ রোধ, নদী ব্যবস্থাপনায় নজরদারি বৃদ্ধি ও সচেতনতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছেন।

দুমকি উপজেলা প্রতিনিধি: জাহিদুল ইসলাম

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা”