সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় কোনো প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াই সফলভাবে শতভাগ বোরো ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ৪০০ কোটি টাকার ধান কৃষকের গোলায় উঠেছে, যা এক বাম্পার ফলনেরই প্রমাণ।
শুক্রবার (১৬ মে) জুমার নামাজের পর উপজেলার মইয়ার হাওরের ভবানীপুর এলাকায় ফসল কর্তন সমাপনী উৎসবের আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ। উৎসবে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরকত উল্লাহ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উপজেলা প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু হোরায়রা সাদ মাস্টার, প্রেসক্লাব সভাপতি তাজউদ্দিন আহমদ, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আফজাল হোসাইন, জমিয়তের সেক্রেটারি মাওলানা মতিউর রহমান, খেলাফত মজলিসের সেক্রেটারি মাওলানা সাজাওযার হোসেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী সবুজ কুমার শীল ও পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী সতীশ গোস্বামী।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় কৃষক, কৃষাণী ও সাধারণ জনগণ বিপুল উৎসাহে অংশ নেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ জানান, “গত ১৪ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কর্তনের সূচনা হয়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় মাত্র ২০ দিনের মধ্যেই উপজেলার বৃহত্তর নলুয়ার হাওরসহ ১২টি হাওরের ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। এ বছর মোট ২০ হাজার ৪২৩ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে এবং উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৭ মেট্রিক টন ধান।”
তিনি আরও বলেন, “এই উৎপাদিত ধানের বাজারমূল্য প্রায় ৪০০ কোটি টাকা, যা জগন্নাথপুরের কৃষকদের জন্য এক ঐতিহাসিক অর্জন। এবারের বাম্পার ফলন শুধু খাদ্যনিরাপত্তাই নয়, বরং এলাকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও বড় ভূমিকা রাখবে।”
এবারের সফল ফসল মৌসুমে কৃষকরা যেমন সন্তুষ্ট, তেমনি প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর তৎপরতা ও পরিকল্পনারও প্রশংসা করছেন এলাকাবাসী। হাওর অঞ্চলের এই সাফল্য সারাদেশের কৃষিখাতের জন্যও একটি উদাহরণ হয়ে উঠছে।
প্রতিবেদন: তুর্য দাস