সুনামগঞ্জের ছাতকে ঘুষ কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কে এম মাহবুব রহমান এক সপ্তাহ ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। এতে বন্ধ হয়ে গেছে টিআর, কাবিখা, কাবিটা ও এডিপির ২২৭টি প্রকল্পের কার্যক্রম।
গত ১৭ মে থেকে ছুটি না নিয়েই তিনি উধাও। অভিযোগ রয়েছে, সরকারি খরচ দেখিয়ে প্রকল্প কমিটিগুলোর কাছ থেকে হাতিয়ে নেওয়া ঘুষের টাকায় উপজেলা ছেড়েছেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ছাতকে পিআইও হিসেবে যোগ দেন মাহবুব রহমান। অভিযোগ অনুযায়ী, যোগদানের পর থেকেই ইউপি চেয়ারম্যানদের নিয়ে গড়েছেন সিন্ডিকেট। কাজ না করেই সরকারি অর্থ আত্মসাতের নানা তথ্যও উঠে এসেছে
তার বিরুদ্ধে একাধিক গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও দীর্ঘদিন কোনো বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, ঘুষের টাকায় করেছেন সম্পদের পাহাড়, জনপ্রতিনিধিদেরও দিয়েছেন অংশ।
এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ট্রেনিংয়ে ছিলেন তিনি। তার অনুপস্থিতিতে দায়িত্বে থাকা দোয়ারাবাজারের পিআইও লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধেও ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। এ নিয়ে দুই পিআইওর মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়।
১৬ মে সন্ধ্যায় ছাতকে এক বৈঠকে মাহবুব রহমানকে ঘুষ গ্রহণ না করার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। পরদিন তিনি অফিস না করে ছুটি চেয়ে একটি আবেদন অফিসের টেবিলে রেখে গোপনে উপজেলা ত্যাগ করেন।
অভিযোগ রয়েছে, তার অনিয়ম ঢাকতে অফিস সহকারী নাজমুল ইসলামকে বিলাইছড়ি উপজেলায় বদলির চিঠি পাঠানো হয়। নাজমুল ইসলাম জানান, গত এক বছর ধরে তিনি পিআইওর ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছেন।
মুক্তিরগাঁও গ্রামের রনি ও নয়ালম্বাহাটি এলাকার বাহাউদ্দিন জানান, তাদের কাছ থেকে সরকারি খরচ দেখিয়ে পিআইও যথাক্রমে ২৪ হাজার ৫০০ ও ১২ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন।
পিআইও মাহবুব রহমানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন কেটে দেন। দোয়ারাবাজারের পিআইও লুৎফুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিবেদক:তুর্য দাস