বগুড়ায় জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের একটি বিশেষ অভিযানে ৮৫০ পিস ইয়াবাসহ ৩ পুলিশ সদস্য এবং এক আনসার সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত এ অভিযানে অবৈধ মাদক বাণিজ্যে জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে ডিবি টিম।
জানা যায়, বগুড়া শহরের সাতমাথাস্থ হোটেল একাত্তরের সামনে ইয়াবার একটি চালান বেচা-কেনার উদ্দেশ্যে কয়েকজন ব্যক্তি অবস্থান করছে—এমন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ অভিযানে নামে। এসআই (নিরস্ত্র) মোঃ আব্দুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে আনসার সদস্য মোঃ আবু সুফিয়ানের নিকট থেকে ৭০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, তার সঙ্গে আরও তিনজন পুলিশ সদস্য জড়িত।
পরবর্তীতে তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতার হওয়ার আগমুহূর্তে তারা আরও ১৫০ পিস ইয়াবা একজন ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। সংগ্রহ করা ফোন নম্বরের সূত্র ধরে ডিবি পুলিশ পুনরায় অভিযান চালিয়ে ওই ক্রেতাকে গ্রেফতার করে এবং তার কাছ থেকেও ১৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। আশ্চর্যজনকভাবে, ওই ব্যক্তিও এক পুলিশ সদস্য—বগুড়া পুলিশ লাইন্সে কর্মরত নায়েক-৩১৫ মোঃ আব্দুল আলীম।
জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে জানা যায়, জয়পুরহাট জেলার ট্রাফিক কনস্টেবল মোঃ সাখাওয়াত হোসেন, আরআরএফ রাজশাহীর কনস্টেবল মোঃ আব্দুল ওয়াহাব এবং আনসার সদস্য মোঃ আবু সুফিয়ান ইয়াবাগুলো বিক্রির উদ্দেশ্যে বগুড়ায় আসেন। তারা বগুড়ায় কর্মরত নায়েক আব্দুল আলীমের নিকট ১৫০ পিস ইয়াবা বিক্রি করেন। অবশিষ্ট ৭০০ পিস বিক্রির সময় ডিবি টিমের হাতে তারা গ্রেফতার হন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন:কনস্টেবল-৯১১ মোঃ আব্দুল ওয়াহাব
(বিপি-৮৬০৫১০৫৬৭০, আরআরএফ, রাজশাহী),
পিতা: মোঃ ফারাজুল ইসলাম,
সাং: বশিনা বাড়ী, বালুয়া হাট,
থানা: সোনাতলা, জেলা: বগুড়া।
ট্রাফিক কনস্টেবল-৭৭৫ মোঃ সাখাওয়াত হোসেন
(বিপি-৮৮০৭১২২৬০১, জয়পুরহাট জেলা),
পিতা: মোঃ আশরাফ আলী,
সাং: নিজ বলাইল,
থানা: সারিয়াকান্দি, জেলা: বগুড়া।
নায়েক মোঃ আব্দুল আলীম
(বিপি-৯২১২১৫০৭৫৭, পুলিশ লাইন্স, বগুড়া),
পিতা: মৃত কাজী দেলোয়ার হোসেন,
সাং: পাড়কুল গোয়াহাট্টা,
থানা: উল্লাপাড়া, জেলা: সিরাজগঞ্জ।
আনসার সদস্য নং-৪৬০১৫ মোঃ আবু সুফিয়ান
পিতা: মৃত আব্দুল খালেক,
সাং: নিজ বলাইল,
থানা: সারিয়াকান্দি, জেলা: বগুড়া।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদেরকে সর্বোচ্চ গোপনীয়তা বজায় রেখে আজ শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
বিষয়টি জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরে এনে যথাযথ তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
প্রতিবেদক: আসিফ মাহবুব