শেখ মুজিব ও জাতীয় চার নেতাসহ মুজিবনগর সরকারের সকলেই মুক্তিযোদ্ধা: উপদেষ্টা ফারুক ই আজম

বাংলাদেশ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা এবং মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।

বুধবার (৪ জুন) সকালে যমুনা টেলিভিশনে টেলিফোনে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, মুজিবনগর সরকারে যারা ছিলেন, তারা সবাই মুক্তিযোদ্ধা। যারা সশস্ত্রভাবে যুদ্ধ করেছেন, যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন তাঁরা সবাই বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত।

তিনি জানান, সম্প্রতি কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত “বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় নেতাদের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বাতিল” সংক্রান্ত খবর বিভ্রান্তিকর ও ভিত্তিহীন। বঙ্গবন্ধু, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, মনসুর আলী, কামরুজ্জামান এই নেতারা মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ পড়েননি, বলেন উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।

ফারুক ই আজম বলেন, জামুকা আইনের সাম্প্রতিক সংশোধনে শুধুমাত্র মুজিবনগর সরকারের অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কর্মী এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী কূটনীতিকদের ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে শ্রেণিবিন্যাস করা হয়েছে। সহযোগী মানেই কম মর্যাদার নয়। তাঁরা মূল মুক্তিযোদ্ধাদের মতোই সম্মান ও সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

তিনি আরও বলেন, ১৯৭২ সালের মূল সংজ্ঞা অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। ২০১৮ ও ২০২২ সালে সংজ্ঞা পরিবর্তনের কারণে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল, তা নিরসনের উদ্দেশ্যেই নতুন অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।

নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের দু’টি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে বীর মুক্তিযোদ্ধা: সরাসরি যুদ্ধ ও যুদ্ধ পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন যাঁরা। মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী: প্রশাসনিক, কূটনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহায়তা প্রদানকারীরা।

উপদেষ্টা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে গৌরবময় অধ্যায় জাতির ইতিহাসে আর নেই। যারা রাষ্ট্র পরিচালনায় ছিলেন, তাদের বাদ দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।

সংবাদমাধ্যমগুলো যেন যাচাই-বাছাই ছাড়া বিভ্রান্তিকর খবর না ছাপে এই আহ্বান জানান ফারুক ই আজম। মুজিবনগর সরকারের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ও মন্ত্রীরা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী। তাঁদের স্বীকৃতি বাতিল হয়েছেএমন খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর।

এদিকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে তা সমাধানে সরকারের পক্ষ থেকে আরও স্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রয়োজন ছিল। তবে ফারুক ই আজমের বক্তব্য বিভ্রান্তি দূর করতে ভূমিকা রাখবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।