ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামে শসা চুরিকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা। সংঘর্ষে উভয়পক্ষের শতাধিক নারী-পুরুষ আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (১০ জুন) সকাল ৮টার দিকে প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী চলে এই সহিংসতা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শ্রীঘর গ্রামের সরকার গোষ্ঠীর জুয়েল তার জমিতে শসা চাষ করেন। সম্প্রতি সেই জমি থেকে শসা চুরির অভিযোগ ওঠে বড়হাটি এলাকার মীর জালালের ছেলে হৃদয় ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনা কেন্দ্র করে সোমবার রাতে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির একপর্যায়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
পরদিন সকালেই উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র—লাঠি, বল্লম ও টেঁটা—নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে অন্তত শতাধিক মানুষ আহত হন। এর মধ্যে ৮১ জনকে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়, আর বাকিদের আশেপাশের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, অন্তত ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খায়রুল আলম বলেন, তুচ্ছ একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ধরনের সহিংসতা অনাকাঙ্ক্ষিত। পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, শসা চুরির ঘটনার সূত্রপাত হয় দুদিন আগে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মাতব্বরদের উপস্থিতিতে মীমাংসার চেষ্টা হলেও তা ব্যর্থ হয়। এরপর মঙ্গলবার ভোর থেকেই দুই পক্ষ সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেয় এবং সকাল ৮টার দিকে তা শুরু হয়।
এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। সম্ভাব্য পুনরায় সংঘর্ষ এড়াতে পুলিশি টহল ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে উভয়পক্ষের অন্তত ৫-৬ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
