বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি এবং নতুন সাব-ভ্যারিয়েন্ট শনাক্তের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশেও বাড়ানো হয়েছে সতর্কতা। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ রোধে ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১১ দফা নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বুধবার (১১ জুন) দুপুরে রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে এই নির্দেশনাগুলো ঘোষণা করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের মাধ্যমে নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। এজন্য দেশের বিমান, স্থল ও নৌবন্দরে আইএইচআর ডেস্কে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
সাধারণ নাগরিকদের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১১ দফা নির্দেশনা:
১. ভিড় এড়িয়ে চলা এবং ঘরের বাইরে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করা
২. শ্বাসতন্ত্র সংক্রমণ প্রতিরোধে নিয়মিত মাস্ক ব্যবহার
৩. হাঁচি-কাশির সময় বাহু বা টিস্যু দিয়ে মুখ ঢেকে নেওয়া
৪. ব্যবহৃত টিস্যু ঢাকনাযুক্ত বিনে ফেলা
৫. নিয়মিত সাবান-পানি অথবা স্যানিটাইজার দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া
6. চোখ, নাক, মুখে অপরিষ্কার হাত না লাগানো
৭. আক্রান্ত ব্যক্তিদের থেকে অন্তত ৩ ফুট শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা
৮. উপসর্গ দেখা দিলে ঘরে অবস্থান করে বিশ্রামে থাকা
৯. উপসর্গধারী ব্যক্তিকে ও তার আশপাশে থাকা ব্যক্তিদের মাস্ক পরিধানে উৎসাহিত করা
১০. সেবাদানকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ও মাস্ক ব্যবহার
১১. উপসর্গ দেখা দিলে নিকটস্থ হাসপাতাল, আইইডিসিআর (০১৪০১-১৯৬২৯৩) বা স্বাস্থ্য বাতায়ন (১৬২৬৩)-এ যোগাযোগ
মহাপরিচালক ডা. জাফর জানান, করোনা মোকাবিলায় সরকার পূর্ণ প্রস্তুতি রেখেছে। এর আওতায় টেস্টিং, টিকাদান, চিকিৎসা, ওষুধ, অক্সিজেন সরবরাহ, আইসিইউ সুবিধা ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সরবরাহ নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। KN95 মাস্ক, PPE, ফেইস শিল্ডসহ পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী মজুত রয়েছে এবং কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতেও প্রস্তুতি জোরদার করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, জনসচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাস্থ্যখাতের প্রস্তুতি বজায় রাখা জরুরি। করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে অবহেলার সুযোগ নেই। প্রয়োজন পড়লে আবারও টিকাদান ও পরীক্ষামূলক নজরদারি বাড়াতে হবে।
করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় বা তৃতীয় ঢেউয়ের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সরকার এবার আগেভাগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে তৎপর হয়েছে। নতুন নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশব্যাপী সচেতনতা তৈরি ও সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখার প্রত্যাশা করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
প্রতিবেদক:রুশাইদ আহমেদ