ঢাকা ০৯:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজশাহী কলেজ ছাত্রাবাসে ল্যাপটপ চুরি : তিনদিনেও প্রশাসনের নিরবতা, বাড়ছে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

  • প্রকাশঃ ০১:১৩:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫
  • / 7

রাজশাহী, মে ২০২৫রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসে ল্যাপটপ চুরির ঘটনায় তিনদিন পেরিয়ে গেলেও কলেজ প্রশাসন হোস্টেল কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজে মুখোশধারী চোরের উপস্থিতি স্পষ্টভাবে ধরা পড়লেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুধু “প্রক্রিয়া চলছে” ধরনের আশ্বাসই মিলেছে।

গত মে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে মুসলিম ছাত্রাবাসের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ভবনের (সি-ব্লক) ১০৬ নম্বর কক্ষ থেকে মনোবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রায়হান সরকারের ল্যাপটপ চুরি হয়। সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, একজন মুখোশ পরা ব্যক্তি রুমে ঢুকে ল্যাপটপ নিয়ে পালিয়ে যায়।

রায়হান সরকার বলেন, আমি প্রতিদিনের মতো ল্যাপটপ রেখে ঘুমিয়ে পড়ি। সকালে উঠে দেখি ল্যাপটপ নেই। ফুটেজ দেখে বোঝা যায়, চোর ভোরে ঢুকেছে। কিন্তু প্রশাসন কিছুই করেনি, শুধু দেখেই গেছে।

উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগেই একই ভবনে আবু রায়হান নামের আরেক শিক্ষার্থীর ল্যাপটপ চুরি হয়েছিল। কিন্তু সে ঘটনার পরও কোনো তদন্ত বা নিরাপত্তা জোরদারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বারবার চুরির ঘটনা প্রশাসনের গাফিলতির প্রমাণ বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।

রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. যহুর আলী বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে পুলিশের কাছে ডায়েরি করা হয়েছে, আমরা পরামর্শ দিচ্ছি।”

ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, প্রশাসনের ভূমিকা যেন দায়সারা পাশ কাটানোর চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।

হোস্টেল প্রশাসনের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক আবু জাফর মো. মনিরুল ইসলাম জানান, চুরির পরপরই ডায়েরি করা হয়েছে এবং পুলিশ তদন্ত করছে।  তবে তিনি দায় শিক্ষার্থীদের দিকেই চাপিয়ে দেন, আমরা চাইলে গেট বন্ধ রাখতে পারি, কিন্তু ছাত্ররা সেটা মানে না।

রাজশাহী কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান মাসুম বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ থাকার পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ল্যাপটপ, মোবাইল, টাকা চুরি এখন নিয়মিত ঘটনা। প্রশাসন শুধু আশ্বাস দিয়ে দায় সারছে।

ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ আবির বলেন, আজ অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করেছি, কিন্তু তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। আগামীকাল পর্যন্ত সময় দিয়েছি, এরপর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

এদিকে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ জানান, সিসিটিভি ফুটেজে একজন মুখোশধারীকে দেখা গেছে। তাকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

এই পরিস্থিতিতে ছাত্ররা বলছেন, প্রশাসনের ব্যর্থতা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বিশেষ করে যারা ল্যাপটপের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং কিংবা অনলাইন ক্লাসে যুক্ত, তাদের জন্য এমন ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া কঠিন।

প্রতিবেদক: মো. আসিফ হোসেন

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা”

প্রাসঙ্গিক

শেয়ার করুন

রাজশাহী কলেজ ছাত্রাবাসে ল্যাপটপ চুরি : তিনদিনেও প্রশাসনের নিরবতা, বাড়ছে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

প্রকাশঃ ০১:১৩:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ মে ২০২৫

রাজশাহী, মে ২০২৫রাজশাহী কলেজের মুসলিম ছাত্রাবাসে ল্যাপটপ চুরির ঘটনায় তিনদিন পেরিয়ে গেলেও কলেজ প্রশাসন হোস্টেল কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজে মুখোশধারী চোরের উপস্থিতি স্পষ্টভাবে ধরা পড়লেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুধু “প্রক্রিয়া চলছে” ধরনের আশ্বাসই মিলেছে।

গত মে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে মুসলিম ছাত্রাবাসের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন ভবনের (সি-ব্লক) ১০৬ নম্বর কক্ষ থেকে মনোবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রায়হান সরকারের ল্যাপটপ চুরি হয়। সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, একজন মুখোশ পরা ব্যক্তি রুমে ঢুকে ল্যাপটপ নিয়ে পালিয়ে যায়।

রায়হান সরকার বলেন, আমি প্রতিদিনের মতো ল্যাপটপ রেখে ঘুমিয়ে পড়ি। সকালে উঠে দেখি ল্যাপটপ নেই। ফুটেজ দেখে বোঝা যায়, চোর ভোরে ঢুকেছে। কিন্তু প্রশাসন কিছুই করেনি, শুধু দেখেই গেছে।

উল্লেখ্য, কয়েক মাস আগেই একই ভবনে আবু রায়হান নামের আরেক শিক্ষার্থীর ল্যাপটপ চুরি হয়েছিল। কিন্তু সে ঘটনার পরও কোনো তদন্ত বা নিরাপত্তা জোরদারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বারবার চুরির ঘটনা প্রশাসনের গাফিলতির প্রমাণ বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।

রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. যহুর আলী বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। তবে পুলিশের কাছে ডায়েরি করা হয়েছে, আমরা পরামর্শ দিচ্ছি।”

ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, প্রশাসনের ভূমিকা যেন দায়সারা পাশ কাটানোর চেষ্টা ছাড়া আর কিছু নয়।

হোস্টেল প্রশাসনের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক আবু জাফর মো. মনিরুল ইসলাম জানান, চুরির পরপরই ডায়েরি করা হয়েছে এবং পুলিশ তদন্ত করছে।  তবে তিনি দায় শিক্ষার্থীদের দিকেই চাপিয়ে দেন, আমরা চাইলে গেট বন্ধ রাখতে পারি, কিন্তু ছাত্ররা সেটা মানে না।

রাজশাহী কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান মাসুম বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ থাকার পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ল্যাপটপ, মোবাইল, টাকা চুরি এখন নিয়মিত ঘটনা। প্রশাসন শুধু আশ্বাস দিয়ে দায় সারছে।

ছাত্রদলের আহ্বায়ক খালিদ বিন ওয়ালিদ আবির বলেন, আজ অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করেছি, কিন্তু তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। আগামীকাল পর্যন্ত সময় দিয়েছি, এরপর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

এদিকে বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাক আহমেদ জানান, সিসিটিভি ফুটেজে একজন মুখোশধারীকে দেখা গেছে। তাকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।

এই পরিস্থিতিতে ছাত্ররা বলছেন, প্রশাসনের ব্যর্থতা এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে তারা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। বিশেষ করে যারা ল্যাপটপের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং কিংবা অনলাইন ক্লাসে যুক্ত, তাদের জন্য এমন ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া কঠিন।

প্রতিবেদক: মো. আসিফ হোসেন

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা”