শিক্ষার্থী আন্দোলনের মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটায় ভর্তি স্থগিত

- প্রকাশঃ ০১:৪২:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
- / 45
অবনতি শিক্ষার্থী আন্দোলন, উপাচার্য-শিক্ষকরা অবরুদ্ধ, সন্ধ্যা থেকেই উত্তাল ক্যাম্পাস | ছবি: প্রজন্ম কথা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) পোষ্য কোটায় ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদারের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নিয়ে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে।” পাশাপাশি, আগামীকাল রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য।
এর আগে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে কিছু শিক্ষার্থী আন্দোলন শুরু করে। বৃহস্পতিবার রাত থেকে ৭–৮ জন শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেন। আন্দোলনের সময় অসুস্থ হয় দুজন। প্রশাসনের নিরুৎসাহে শিক্ষার্থীরা উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল ইসলাম মাসউদ, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান ও জনসংযোগ প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদারসহ কয়েকজনকে অবরুদ্ধ করে রাখে। এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয় এবং আহত হন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, একজন উপ-রেজিস্টার, রাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়ার শুভ ও সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মারসহ ৭–৮ জন।
হাতাহাতির একপর্যায়ে উপ-উপাচার্য জুবেরী ভবনের দ্বিতীয় তলায় চলে গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে সেখানে অবরুদ্ধ করে রাখে। এ সময় ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দীন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত হন। পরে সাধারণ শিক্ষার্থীরা, ইসলামী ছাত্রশিবির ও বাম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মী এবং রাকসুর পদপ্রার্থীরা জুবেরী ভবনের ভিতরে জড়ো হয়ে স্লোগান দেন। কিছু শিক্ষার্থী দ্বিতীয় তলায় উঠে কয়েকটি ঘরের জানালা ভাঙচুর করেন।
রাত ১০টার দিকে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল আলীম এক ঘোষণায় জানান, আগামী রবিবার শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করবেন। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে উত্তাল হয় শিক্ষার্থীরা। ১৭টি হল থেকে একযোগে বের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে আন্দোলন শুরু হয়। পরিশেষে রাত ১টায় প্রশাসন বাধ্য হয়ে পোষ্য কোটার ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে।
বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই ঘটনার পর উত্তেজনা কমাতে প্রশাসন ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে জরুরি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।