খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্যকে (প্রোভিসি) দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাতে তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এ সিদ্ধান্তের খবরে ক্যাম্পাসজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। অনশনরত শিক্ষার্থীরা জুস খেয়ে অনশন ভঙ্গ করেন এবং রাত ১টা ১৫ মিনিটে ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সেখানে এসে শেষ হয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, এই বিজয় শুধু কুয়েটের নয়, বরং সারাদেশের ছাত্রসমাজের। তারা উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান, যারা এই আন্দোলনে নৈতিকভাবে পাশে ছিলেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, “এই বিজয় সকল স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে এক ঐতিহাসিক জবাব।” তারা আরও হুঁশিয়ার করেন, “ভবিষ্যতে কেউ যদি কুয়েটে রাজনীতি ঢোকানোর চেষ্টা করে, তবে তার পরিণতি হবে সদ্য পদচ্যুত ভিসির মতো।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম ব্যাচের পক্ষ থেকে আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার জন্য জুনিয়র ব্যাচগুলোকে ধন্যবাদ জানানো হয়। আন্দোলনকারীরা জানান, এটি কেবল প্রথম বিজয়; আরও পাঁচ দফা দাবির বাস্তবায়ন এখন তাদের পরবর্তী লক্ষ্য। এজন্য তারা নতুন প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি রাখার ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য, ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্রদল-যুবদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। ২২ এপ্রিল থেকে ২৯ জন শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেন। সরকারের সিদ্ধান্তে অবশেষে সেই অনশন প্রত্যাহার করে তারা বিজয়ের স্বাদ উপভোগ করেন।