বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলন, অচলাবস্থার শঙ্কা

ক্যাম্পাস

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) ক্যাম্পাস উপাচার্য অধ্যাপক ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে। আজ সোমবার (৫ মে) দুপুর ১২টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ডফ্লোর অবস্থান কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের এক দফা এক দাবি আন্দোলনের সূচনা করেন। আন্দোলনকারী  শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি শেষে এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাসে প্রদক্ষিণ করা হয় । এর আগে, শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে উত্থাপিত চার দফা দাবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত হওয়ায়, গতকাল উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এক দফা আন্দোলনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল উপাচার্য আলোচনার আশ্বাস দিলেও, পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত যৌক্তিক দাবি পূরণে গড়িমসি দেখালে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং তাদের পদত্যাগের দাবিতে অনড় থাকে। ম্যানেজমেন্ট বিভাগের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বিপ্লব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিক্ষার্থীবান্ধব নন। তিনি নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে কোনো প্রকার মনোযোগ না দিয়ে বরং ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসনে ব্যস্ত রয়েছেন। এছাড়াও তার স্বেচ্ছাচারিতা ও অপেশাদার মনোভাবের কারণে আমাদের বোন জেবুন্নেসা হক জিমি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েও কোনো আর্থিক সহযোগিতা পায়নি। দুর্যোগের সময়ে আমরা কখনোই উপাচার্য শুচিতা শরমিনকে পাশে পাইনি। অতএব, আমরা অনতিবিলম্বে তার পদত্যাগ দাবি করছি। যদি তিনি সসম্মানে পদত্যাগ না করেন, তাহলে আমরা আরও বৃহত্তর কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলন চালিয়ে যেতে বাধ্য হব।

আরেক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী নাজমুল ঢালী বলেন, চলমান আন্দোলন সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি যৌক্তিক আন্দোলন। এই আন্দোলনের যৌক্তিকতা হলো, এই উপাচার্য দীর্ঘ নয় মাস দায়িত্ব পালন করার পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নূণ্যতম কোনো উন্নয়নে অবদান রাখতে পারেননি। উপাচার্য আন্দোলনকারীদের সাথে আলোচনায় বসতে চাইলেও আমরা সেই আলোচনায় আগ্রহী নই, কারণ ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে যে তিনি আমাদের জন্য অযোগ্য। সুতরাং, আমরা এই অযোগ্য উপাচার্যকে দ্রুত সময়ের মধ্যে পদত্যাগের আহ্বান জানাচ্ছি।

আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি সম্পর্কে শিক্ষার্থী মোশাররফ করিম জানান, তাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আগামীকাল সকাল ১১টায় প্রশাসনের শাটডাউন কর্মসূচির আওতায় জরুরি সেবা (মেডিকেল, লাইব্রেরি, ক্লাস, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র) ব্যতীত সকল দপ্তরে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। নতুন উপাচার্য এসে তালা খুলে পুনরায় কার্যক্রম শুরু করবেন বলে তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের এই লাগাতার আন্দোলন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক অচলাবস্থার সৃষ্টি করেছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ববি প্রতিনিধি: আবদুল্লাহ আল শাহিদ খান

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন-“প্রজন্ম কথা”