মিটফোর্ডে ব্যবসায়ী হত্যার প্রতিবাদে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

- প্রকাশঃ ০২:৪৭:৩১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
- / 2
রাজধানীর সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সামনে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকাণ্ড এবং সারাদেশে চলমান হত্যা, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্রোহী হলের নিচ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ‘জুলাই ৩৬ স্কয়ার’ হয়ে শিউলিমালা হল, পুরাতন প্রশাসনিক ভবন, নজরুল ভাস্কর্য ও লাইব্রেরির সামনে দিয়ে আবার বিদ্রোহী হলের সামনে এসে প্রতিবাদী বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয়।
মিছিলে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা স্লোগানে স্লোগানে উত্তাল করে তোলেন পুরো ক্যাম্পাস। তারা বলেন, “সন্ত্রাসীদের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও”; “সন্ত্রাসীরা উল্লাস করে, ইন্টারিম কী করে?”; “আমার ভাই মরল কেন? ইন্টারিম জবাব দে”; “খুন ধর্ষণ নিপীড়ন, রুখে ফেলো জনগণ”; “জবাব জবাব জবাব দে, নইলে গদি ছেড়ে দে”; “দিয়েছি তো রক্ত, আরও দিব রক্ত”; “রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়”
বিক্ষোভ শেষে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা সারা দেশে চলমান সন্ত্রাস, খুন, ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে দ্রুত ও নিরপেক্ষ বিচার দাবি জানান।
সমাবেশে আইন ও বিচার বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রাজু শেখ বলেন, “সংগ্রামী ছাত্র-জনতা, আমি আপনাদের স্বাগত জানাই প্রস্তর যুগে। বিএনপির হাত ধরে বাংলাদেশ আবার প্রস্তর যুগে ফিরেছে, যার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা দেখছি, বিএনপির সন্ত্রাসীরা ধরা পড়লে তাদের বিরুদ্ধে নাটকীয়ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই নাটক আর চলতে পারে না। ইন্টারিম সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আপনারা গাছ লাগানোর জন্য নয়, সন্ত্রাস নির্মূল করতে ক্ষমতায় এসেছেন। যদি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার না হয়, তাহলে আপনারা সম্মানের সঙ্গে বিদায় নিন। আমরা এক ফ্যাসিস্টকে বিদায় দিয়েছি, আরেকজনকে বিদায় জানাতে দ্বিধা করব না। বিচার না হলে আমরা লংমার্চের মতো বৃহত্তর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।”
ফোকলোর বিভাগের শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য সরকার বলেন, “এই মর্মান্তিক খুনের প্রতিবাদে আমাদের রাস্তায় নামতে হতো না যদি আগের ঘটনার সঠিক তদন্ত হতো এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করত। এটি নিছক একটি খুন নয়, এটি রাষ্ট্রীয় হত্যাকাণ্ড। এর দায় ইন্টারিম সরকারকে নিতেই হবে। তদন্তে যেন কোনো দলীয় রং না থাকে। এই ধরণের বর্বরতা ও ট্রমা আমরা আর দেখতে চাই না। আমরা চাই দৃষ্টান্তমূলক বিচার, যাতে সমাজে কেউ আর এমন কাজ করার সাহস না পায়।”
উল্লেখ্য, গত ৯ জুলাই পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে মধ্যযুগীয় কায়দায় পিটিয়ে ও মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয়। ১১ জুলাই সেই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় উঠে। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানায়।