পদ পেতে স্ত্রীকে তালাক, অর্থ আত্মসাৎ ও নির্যাতনের অভিযোগ ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে

অপরাধ বাংলাদেশ রাজনীতি

ছাত্রদলের এক নেতার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পদ পাওয়ার উদ্দেশ্যে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পাশাপাশি অর্থ ও স্বর্ণালংকার আত্মসাৎ এবং শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি বাংলা কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব ফয়সাল রেজার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলেছেন তার স্ত্রী শিখা।

সোমবার (২১ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন শিখা। তিনি দাবি করেন, ফয়সাল তাকে পরিকল্পিতভাবে বিয়ে করে প্রতারণা করেছেন এবং বিয়ের পর তাকে নানাভাবে হয়রানি করেছেন।

শিখা জানান, ২০২৩ সালের ২৮ মার্চ তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তারা একসঙ্গে বসবাস শুরু করেন। শিখার অভিযোগ, বেকার ফয়সাল সংসারের কোনো খরচ চালাতেন না। উল্টো, তিনি শিখার কাছ থেকে টাকা নিয়ে তার পরিবার ও মালয়েশিয়া প্রবাসী ভাইদের কাছে পাঠাতেন। এমনকি এক পর্যায়ে ফয়সাল তার ভাইদের জন্য তিন লাখ টাকাও দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শিখাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হতো।

শিখার দাবি, ফয়সাল তার কাছ থেকে বারবার অর্থ গ্রহণ করেছেন নানা অজুহাতে। ব্যবসার কথা বলে, বন্ধুবান্ধব ও পরিবারকে সাহায্য করার কথা বলে তার কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হতো। এমনকি ছাত্রদলের পদ পেতে বিবাহিত পরিচয় গোপন করে গোপনে তাকে তালাকও দেন ফয়সাল।

শিখা বলেন, সে খারাপ উদ্দেশ্যে বিয়ে করেছে। কিছুদিন তার বোনের বাসায় ছিল, সেখান থেকে বের করে দিলে আমার কাছে ফিরে আসে। টাকা পেলেই আবার চলে যায়। সে একসময় বলে দেয়, সংসার করবে না।

শিখা অভিযোগ করেন, ফয়সাল তার রিয়েল এস্টেট কোম্পানির অফিস থেকে পাঁচ লাখ টাকা চুরি করেছেন। এছাড়া আলমারি ভেঙে তার স্বর্ণালংকারও আত্মসাৎ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ঈদের সময় ৫০ হাজার টাকা এবং এরপর ২৫ হাজার টাকা নিয়ে মার্কেটে যায়। তখন এক মেয়ে আমাকে বলে, ফয়সাল তার পরিবার নিয়ে তার বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। আমি তখন বুঝি, সে আমাকে ফাঁকি দিয়েছে।


আরও পড়ুন

নারায়ণগঞ্জে ‘মার্চ ফর ড. ইউনূস’ কর্মসূচি


ফয়সাল ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক থাকাকালে শিখা অভিযোগ দেন ছাত্রদলের পার্টি অফিসে। অভিযোগপত্র ও কাবিননামা জমা দেওয়ার পর ফয়সাল দলবল নিয়ে শিখার অফিসে হামলা চালান বলে অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়া গোপনে তালাক দিয়ে পরে সেই তালাকপত্র প্রত্যাহার করেন ফয়সাল।

শিখা বলেন, এই ঘটনার পর সরকারি বাংলা কলেজে আন্দোলনও হয়, কারণ বিবাহিত কেউ ছাত্রদলের নেতৃত্বে থাকতে পারে না। এখন ফয়সাল ও তার সহযোগীরা আমাকে হুমকি দিচ্ছে। তারা তালাক দিতে চাপ দিচ্ছে।

সংবাদ সম্মেলনে শিখা নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। একইসঙ্গে তিনি ফয়সালের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ছাত্র রাজনীতিতে এমন ব্যক্তির অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।