বর্ষীয়ান অভিনেতা ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ইলিয়াস কাঞ্চন নতুন রাজনৈতিক দল ‘পিপলস পার্টি বাংলাদেশ’ (People’s Party Bangladesh) গঠনের ঘোষণা দিয়েছেন। আজ রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত এক আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দলটির আত্মপ্রকাশ ঘটে।
সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর দলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ও মুখপাত্র এবং সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী গোলাম সারোয়ার মিলন শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে ২৭ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয় এবং জানানো হয়, খুব শিগগিরই নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা হবে।
দলের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ইলিয়াস কাঞ্চন, যিনি এর আগে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনের মাধ্যমে দীর্ঘ তিন দশক ধরে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন। দলের মহাসচিবের দায়িত্ব পেয়েছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ।
নিরাপদ সড়কের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে আমি ৩২ বছর ধরে কাজ করেছি- কোনো সরকারি সহায়তা ছাড়া। আজ আমি উপলব্ধি করেছি, রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া পরিবর্তন সম্ভব নয়, বলেন ইলিয়াস কাঞ্চন।
তিনি আরও বলেন, নিরপেক্ষতা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে একটি কল্যাণরাষ্ট্র গড়াই আমাদের মূল লক্ষ্য।
দলটি ‘ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ’ গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। শওকত মাহমুদ বলেন, আমরা গণতন্ত্র রক্ষা, ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণ এবং সকল বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে এই দল গঠন করেছি।
তিনি জানান, মুক্তিযুদ্ধ, ৭ নভেম্বরের বিপ্লব, ৯০’র গণ-আন্দোলন এবং সাম্প্রতিক ২০২৪ সালের জুলাই মাসের গণ-জাগরণ দলটির প্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।
শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণআন্দোলনের যে আশা, সেটিই আমাদের ভবিষ্যতের ভিত্তি। সমতা, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়ের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ গড়াই আমাদের লক্ষ্য, বলেন শওকত মাহমুদ।
দলের শীর্ষ নেতারা জানান, দুই থেকে তিন বছর ধরে আলোচনার মাধ্যমে জনগণের মতামত গ্রহণের পরই দল গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দলের সংবিধান, প্রতীক, পতাকা ও লোগো নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।শওকত মাহমুদ, যিনি বিএনপির সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান ছিলেন এবং ২০২৩ সালের মার্চে ‘দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের’ অভিযোগে বহিষ্কৃত হন, নতুন দল গঠনকে কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থের অংশ হিসেবে দেখার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের নির্বাচনে অনেককেই বাধ্য হয়ে অংশ নিতে হয়েছে। আমিও গোয়েন্দা সংস্থার হাতে হয়রানির শিকার হয়েছি— আমার বিরুদ্ধে ৭০টির বেশি মামলা দেওয়া হয়েছে, এমনকি একটি মামলার রায় ঘোষণার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল।