বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বর্তমানে এক জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির সম্মুখীন। নেতৃত্বের সংকট, তরুণদের সমর্থন হ্রাস এবং দুর্নীতির অভিযোগ দলটির ভবিষ্যৎ গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘদিন দেশের বাইরে অবস্থান এবং খালেদা জিয়ার অসুস্থতা দলের নেতৃত্বে শূন্যতা সৃষ্টি করেছে। এছাড়া, দলের অভ্যন্তরে বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে, যা দলের ঐক্য ও কার্যকারিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।
সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, ১৮-২৮ বছর বয়সী ভোটারদের মধ্যে বিএনপির সমর্থন মাত্র ১০%, যেখানে একটি নতুন ছাত্রনেতৃত্বাধীন দল ৩৫% সমর্থন পেয়েছে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে বিএনপি তরুণদের আকাঙ্ক্ষা ও মতাদর্শের সঙ্গে তাল মেলাতে ব্যর্থ হচ্ছে।
দলের কিছু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি এবং সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ উঠেছে। যদিও দলটি এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, তবে বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপের অভাব রয়েছে।
বিএনপির ভবিষ্যৎ অনেকাংশে নির্ভর করবে তাদের কৌশলগত পরিবর্তন, নেতৃত্বের পুনর্গঠন এবং তরুণদের আকৃষ্ট করার সক্ষমতার উপর। যদি দলটি আধুনিক রাজনৈতিক চাহিদা অনুযায়ী নিজেদের পুনর্গঠন করতে পারে, তবে তারা আগামী পাঁচ বছরে গ্রহণযোগ্যতা ধরে রাখতে বা বাড়াতে সক্ষম হতে পারে। অন্যথায়, নতুন রাজনৈতিক শক্তি ও তরুণদের সমর্থন হারানোর ফলে তাদের গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পেতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বিএনপির জন্য সময়োপযোগী সংস্কার ও নেতৃত্বের পুনর্গঠন অপরিহার্য। তরুণদের আকৃষ্ট করতে এবং দলের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করতে হলে, দলটিকে আধুনিক রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণ করতে হবে এবং অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র নিশ্চিত করতে হবে। নচেৎ, আগামী পাঁচ বছরে দলের গ্রহণযোগ্যতা আরও হ্রাস পেতে পারে।
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিএনপির সামনে চ্যালেঞ্জ অনেক। তবে, সঠিক কৌশল গ্রহণ ও নেতৃত্বের পুনর্গঠনের মাধ্যমে দলটি আবারও জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারে। এজন্য প্রয়োজন সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ও কার্যকর পদক্ষেপ।