নিজেকে ‘জনতার মেয়র’ দাবি করে আসা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন কোরবানির ঈদে ঢাকা শহরের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “উত্তরে মেয়র না আসা পর্যন্ত প্রশাসন ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করব।”
শুক্রবার সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে ইশরাক লেখেন, জনতার মেয়র হিসেবে আমার দায়িত্ব কোরবানির ঈদের আগে যেন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় যথাযথ প্রস্তুতি থাকে। আমি ঢাকাবাসীকে নিশ্চিত করছি, উত্তরে মেয়র না আসা পর্যন্ত আমি প্রশাসন ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সহযোগিতা করব। দক্ষিণে সাবেক কাউন্সিলর ও বিগত নির্বাচনের প্রার্থীদের সমন্বয়ে জোনভিত্তিক মনিটরিং টিম অনুমোদন দেব। বিকেলের মধ্যেই (১৬ ঘণ্টায়) একটি স্বস্তিদায়ক পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, দক্ষিণ সিটিতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের দিন তিনি নিজেও থাকবেন।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস মেয়র নির্বাচিত হন। ঐ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন প্রায় ২ লাখ ৩৬ হাজার ভোট পেলেও তাপসের (৪ লাখ+) চেয়ে পিছিয়ে পড়েন।
নির্বাচনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ৩ মার্চ ২০২০ তারিখে আদালতে মামলা করেন ইশরাক। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ার পর, ২০২৫ সালের ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ফল বাতিল করে ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেন। আদালত নির্বাচন কমিশনকে ১০ দিনের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেয়। নির্দেশনা অনুযায়ী ২৭ এপ্রিল গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।
গেজেট প্রকাশের দিনই ইশরাককে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়ানোর নির্দেশনা চেয়ে আইনজীবী রফিকুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ নির্বাচন কমিশনকে নোটিশ পাঠান। এরপর ১৪ মে গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন মামুনুর রশিদ।
তবে ২২ মে বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ রিটটি খারিজ করে দেন। সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে সাত পৃষ্ঠার আদেশ প্রকাশ হয়।
এর ফলে ইশরাকের আইনজীবীরা বলেন, শপথ নিতে এখন আর কোনো বাধা নেই। তবে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী কাজী আকবর আলী বলেছেন, আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শপথ পড়ানো ঠিক হবে না।
