ঈদুল আযহার নামাজ ও কুরবানির সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর- জানুন

- প্রকাশঃ ০৩:৩৫:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫
- / 8
বাংলাদেশে আগামীকাল শনিবার, ৭ জুন ২০২৫, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হতে যাচ্ছে পবিত্র ঈদুল আযহা। ইতোমধ্যেই ঈদ উদযাপনের সরকারি ঘোষণা এসেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে।
২৮ মে বুধবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির বৈঠক। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. এ. এফ. এম. খালিদ হোসেন। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাঁদ দেখার সংবাদ যাচাই-বাছাই করে কমিটি জানায় বাংলাদেশের আকাশে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে। সে অনুযায়ী ২৯ মে থেকে জিলহজ মাস গণনা শুরু হয় এবং ১০ জিলহজ অর্থাৎ ৭ জুন শনিবার ঈদুল আজহা পালিত হবে।
ঈদুল আযহার দিনটি মুসলিম উম্মাহর জন্য আত্মত্যাগ, তাকওয়া ও আত্মসমর্পণের অনন্য শিক্ষা বহন করে। মহান আল্লাহর আদেশ পালন করতে গিয়ে হজরত ইব্রাহিম (আ.) তাঁর প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে কুরবানি দিতে প্রস্তুত হয়েছিলেন। সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মরণে মুসলিমরা প্রতিবছর ঈদুল আজহার দিনে পশু কুরবানি করে থাকেন।
ঈদের দিন মুসলমানদের সকাল শুরু হয় বিশেষ নামাজ আদায়ের মাধ্যমে। ফজরের পর সূর্য কিছুটা উপরে উঠলে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়, যা জোহরের আগেই শেষ করতে হয়। এই নামাজ দুই রাকাতের হয়ে থাকে, কিন্তু এতে রয়েছে অতিরিক্ত ছয়টি তাকবির প্রতি রাকাতে তিনটি করে। নামাজ শেষে ইমাম খুতবা প্রদান করেন, যা মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করা সুন্নত।
রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈদের নামাজের আগে কুরবানি করেছে, সে যেন পুনরায় কুরবানি করে। (সহিহ বুখারি)
নামাজের পর শুরু হয় কুরবানির আনুষ্ঠানিকতা। সামর্থ্য অনুযায়ী মুসলমানরা গরু, ছাগল বা উট কুরবানি করেন আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে। কুরবানিকৃত পশুর গোশত তিনভাগে ভাগ করা সুন্নত একভাগ আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের জন্য, একভাগ গরিব-দুঃস্থদের জন্য, একভাগ নিজের পরিবারের জন্য।
আল-কুরআনে বলা হয়েছে: তাদের গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না; বরং তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া। (সুরা হজ: ৩৭)
রাসুল (সা.) বলেন তোমরা কুরবানির গোশত খাও, সংরক্ষণ করো এবং গরিবদের খাওয়াও। (সহিহ মুসলিম)
ইসলামি শরিয়তের আলোকে কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করে তার অর্থ ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যয় করা নিষিদ্ধ। বরং সেটি মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা বা ধর্মীয় কল্যাণমূলক খাতে দান করা উত্তম।
ধর্মীয় বিশিষ্টজনরা বলেন, ঈদুল আজহার প্রকৃত শিক্ষা হলো ত্যাগ ও তাকওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। ঈদ উদযাপনের এ দিন ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে আল্লাহর নৈকট্য লাভের চেষ্টা করেন। বাহ্যিক কুরবানির চেয়ে অন্তরের খাঁটি আত্মসমর্পণ এখানে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
আগামীকাল ঈদের দিনে দেশের প্রতিটি মসজিদ, ঈদগাহ ও গ্রাম-গঞ্জে অনুষ্ঠিত হবে ঈদের নামাজ ও কুরবানির আনুষ্ঠানিকতা। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা আশা করছেন, এই মহান ইবাদত যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় শৃঙ্খলার সঙ্গে পালিত হবে।