বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে টানা ২৮ দিনের আন্দোলনের পর আজ রাত থেকে আমরণ অনশনে বসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (১২ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোরে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন,
“যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের প্রাণের দাবি মানা না হবে—অর্থাৎ উপাচার্য পদত্যাগ না করবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। আজ রাত থেকেই আমাদের একটি অংশ আমরণ অনশনে বসবে।”
এর আগে, টানা প্রায় এক মাস ধরে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ, অবস্থান কর্মসূচি এবং শাটডাউন চলতে থাকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমে চরম অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে ২৫টি বিভাগে পরীক্ষা চললেও ক্লাস কার্যত বন্ধ রয়েছে। প্রশাসনিক কার্যক্রমও ভেঙে পড়েছে।
আজকের অবস্থান কর্মসূচি থেকে আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দেন, আগামীকাল (মঙ্গলবার) দুপুর ১টা ৫৯ মিনিটের মধ্যে উপাচার্য অপসারণ না হলে “দক্ষিণবঙ্গ অচল” কর্মসূচিতে যাবেন তারা।
এই সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের প্রভাষক মুস্তাকিম বিল্লাহ বলেন,
“শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে আমরা একাত্মতা জানাই। তাদের এই ন্যায্য আন্দোলনের পাশে শিক্ষকরা আছেন।”
কোস্টাল স্টাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহযোগী অধ্যাপক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন,
“ভিসির স্বৈরাচারী আচরণের কারণে কেউই নিরাপদ বোধ করছে না। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বাঁচাতে হলে তাকে অবশ্যই অপসারণ করতে হবে। আমরা শিক্ষকরাও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সঙ্গে আছি।”
শিক্ষার্থীরা জানান, শুধুমাত্র উপাচার্যের স্বাক্ষর না থাকার কারণে বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষা বিলম্বিত হচ্ছে। আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তারা। লাইব্রেরি, মেডিকেল ও পরিবহন সেবা সচল থাকলেও একাডেমিক কার্যক্রম পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো সত্ত্বেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে আন্দোলনের নতুন পর্বে অনশন এবং দক্ষিণবঙ্গ অচল করার ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছেন তারা।