বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা তাদের অপ্রতিরোধ্য ফর্ম অব্যাহত রেখেছে দক্ষিণ আমেরিকার বাছাইপর্বেও। সান্তিয়াগোর জাতীয় জুলিও মার্টিনেজ প্রাডানোস স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে চিলিকে ১-০ গোলে হারিয়ে লিওনেল স্কালোনির দল টেবিলের শীর্ষস্থান আরও মজবুত করেছে। ম্যাচের একমাত্র এবং জয়সূচক গোলটি করেন তরুণ ফরোয়ার্ড জুলিয়ান আলভারেজ।
বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় শুরু হওয়া ম্যাচে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে নামে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ১৬তম মিনিটে থিয়াগো আলমাদার নিখুঁত পাস থেকে বল পেয়ে চমৎকার দক্ষতায় চিলির রক্ষণ ভেদ করে দ্বিতীয় পোস্টে এক দুর্দান্ত শটে গোল করেন জুলিয়ান আলভারেজ। ভক্তরা সামাজিক মাধ্যমে গোলটিকে “গোলাজো” আখ্যা দিয়ে উদযাপন করেন।
প্রথমার্ধজুড়ে আর্জেন্টিনা বল পজিশনে নিয়ন্ত্রণ রাখলেও চিলি হাল ছাড়েনি। দ্বিতীয়ার্ধে তারা কয়েকটি গোলের সুযোগ তৈরি করে, বিশেষ করে সেট-পিস থেকে। কিন্তু আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো “দিবু” মার্তিনেজ নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দেন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সেভের মাধ্যমে।
চিলির বিপক্ষে এই ম্যাচে দিবু মার্তিনেজ ছিলেন আর্জেন্টিনার রক্ষণের অটল প্রহরী। অন্তত দুটি নিশ্চিত গোল রুখে দিয়ে তিনি ম্যাচের ফল নির্ধারণে রাখেন অসামান্য ভূমিকা। তার সময়োচিত প্রতিক্রিয়া এবং গোললাইন সেভ আর্জেন্টিনার জন্য জয়ের ভিত্তি তৈরি করে।
এই ম্যাচে আর্জেন্টিনার হয়ে অভিষেক ঘটে আরেক তরুণ খেলোয়াড় ফ্রাঙ্কো মাস্তান্তুয়োনোর। মাত্র ১৭ বছর বয়সে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে অংশ নিয়ে তিনি দেশের ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে রেকর্ড গড়েন। তার অভিষেক ভবিষ্যতের জন্য আর্জেন্টিনার স্কোয়াডে নতুন প্রজন্মের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।
বর্তমানে লা লিগার ক্লাব অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে খেলা জুলিয়ান আলভারেজ এই ম্যাচে নিজের ক্লাস প্রমাণ করেছেন। ২৪ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকার ২০২২ বিশ্বকাপ ও দুটি কোপা আমেরিকা জয়ে দলের অংশ ছিলেন। তার গোল আর্জেন্টিনার জয়ের পাশাপাশি দলের আক্রমণভাগে তার গুরুত্ব আবারও প্রতিফলিত করেছে।
ম্যাচ শেষে আলভারেজ বলেন:
“এই জয় আমাদের প্রাপ্য ছিল। আমরা একটি কঠিন মাঠে খেলেছি, কিন্তু দল হিসেবে আমরা একসঙ্গে লড়াই করেছি। আমরা ফাইনালের মতো প্রতিটি ম্যাচ খেলতে চাই।”
কোচ লিওনেল স্কালোনি ম্যাচে তার প্রিয় ৪-৩-৩ ফরমেশনে দল নামান। অভিজ্ঞ ও তরুণদের সুনিপুণ সমন্বয়ে গঠিত আর্জেন্টিনা দল ম্যাচের প্রতিটি বিভাগে সমতা বজায় রাখে।
• মাঝমাঠে থিয়াগো আলমাদা ও রদ্রিগো ডি পলের সৃজনশীলতা আক্রমণে গতি আনে।
• ডিফেন্সে ক্রিস্তিয়ান রোমেরো এবং লিসান্দ্রো মার্তিনেজ চিলির ফরোয়ার্ডদের কার্যত নিষ্ক্রিয় করে দেন।
এই জয়ের মাধ্যমে কনমেবল অঞ্চলের বাছাইপর্বে আরও এগিয়ে গেল আর্জেন্টিনা। এখনও পর্যন্ত অপরাজিত থাকা স্কালোনির দল তাদের শীর্ষস্থান অক্ষুণ্ন রাখল এবং পরবর্তী ম্যাচগুলোর জন্য আত্মবিশ্বাসে ভরপুর থাকল।