ঢাকা ০৪:০১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
লিওনেল মেসির আজ জন্মদিন

অমরত্বের পর থাকে উপভোগ: মেসির জন্মদিনে ফিরে দেখা একজন মানব-জাদুকরের যাত্রা

প্রজন্ম কথা ডেস্ক
  • প্রকাশঃ ১০:৪৯:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
  • / 8

শুভ জন্মদিন লিও । ছবি: সংগৃহীত

৩৮ বছর আগের এক সকালে জন্মেছিলেন তিনি। জন্মের সময় কেউ জানত না, ফুটবলের ইতিহাসে তাঁর নাম লেখা থাকবে সবচেয়ে উজ্জ্বল অক্ষরে। আজ ২৪ জুন, লিওনেল মেসির জন্মদিন। কিন্তু এটাকে শুধু জন্মদিন বললে বোধ হয় তাঁর প্রতি অবিচারই করা হয়। কারণ, মেসির জন্মের দিনটা যেন বিশ্ব ফুটবলের অলৌকিক কাব্যের সূচনা দিন।

মেসির জীবন শুরু হয়েছিল একটি স্যুটকেস, একটি ন্যাপকিন পেপারে লেখা চুক্তি, কিংবা একটি বাইসাইকেল ঘিরে গড়া কিছু ছোট ছোট স্মৃতি দিয়ে। তখন সেগুলো ছিল বিচ্ছিন্ন, সাধারণ মুহূর্ত একটা বালকের স্বপ্নের অসম্পূর্ণ খণ্ডচিত্র। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো জোড়া লেগে হয়ে উঠেছে এক মহাকাব্যিক গল্প, যে গল্পে মানুষ হয়ে জন্ম নেওয়া কেউ একজন পরিণত হন ঈশ্বরতুল্য এক শিল্পীতে।

আজ মেসির ৩৮তম জন্মদিনে আমরা ফিরে তাকাই সেই রূপকথার পথে, যেখানে আর্জেন্টিনার ছোট শহর রোজারিও থেকে শুরু করে কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামের আলো ঝলমলে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে অগণিত সোনালি মুহূর্ত। আমরা দেখি একটা পায়ের বাঁক, একটা পাস, কিংবা জালের ছিদ্র করে ঢুকে পড়া বল কীভাবে কোটি হৃদয়ের স্পন্দনে রূপ নেয়।

মেসি আজ অবসরের ধারে। তাঁর চাহিদা ফুরিয়েছে, তাঁর কাছে ফুটবল এখন শুধুই উপভোগ। যেন জীবনের শেষ পাতাগুলোয় নির্লিপ্তভাবে ভেসে চলছেন, রোজারিওর পারানা নদীর ধারে ছোটবেলার জাহাজগুলোর মতো করে। একসময় যারা বলত “মেসির দেশপ্রেম নেই”, তারাই আজ চোখের জল ফেলেছে বিশ্বকাপ ট্রফির ছোঁয়ায়।

যে ব্যর্থতা একসময় তাঁকে বিদায় বলতে বাধ্য করেছিল, সেই ব্যর্থতাই পরিণত হয়েছে তাঁর বিজয়ের ভিত্তি। তিনি ফিরেছিলেন, কারণ বাকি ছিল অসমাপ্ত একটি গল্প। আর সে গল্প পূর্ণতা পেয়েছে চোখ ভিজিয়ে, বুক ধড়ফড় করিয়ে, গোটা বিশ্বের উল্লাসে।

আজকের জন্মদিনে মেসি হয়তো নিজে অত কিছু ভাবছেন না। হয়তো মনে মনে বলছেন, “আমি সব পেয়ে গেছি।” কিন্তু আমাদের চাওয়া তো এখনো শেষ হয়নি। আমরা চাই, তিনি থাকুন আরও কিছুদিন। আরও কিছু মুহূর্তে আমাদের ক্লান্ত, ক্লিশে জীবনটায় ঝলক বয়ে আনুন।

২০২৬ সালে শেষবারের মতো ফুটবল বিশ্বকাপে নাম লেখাবেন হয়তো। সেটাই হবে শেষবার জন্মদিনে সক্রিয় মেসিকে দেখা। হয়তো সে দিন আরও একটি ট্রফি, কিংবা কেবল একটি শেষবারের হাঁটা নীরব, গোধূলির মতো শান্ত। কিন্তু মেসির গল্প শেষ হবে না সেদিনও। কারণ এই গল্পটা যে কেবল একজন ফুটবলারের নয়—এটা একজন মানুষের দেবদূত হয়ে ওঠার গল্প।

জন্মদিনে তাঁকে ঘিরে আমরা শুধু বলি এমন মানবজনম আর কি হবে।

শেষ কথা:
এই রচনার প্রতিটি শব্দে মেসি শুধু ফুটবলারের রূপেই নন, বরং একজন শিল্পী, একজন যোদ্ধা, একজন প্রেমিক, একজন অভিবাসী, একজন মানুষ হয়ে উপস্থিত যাঁর গল্প চিরকাল বেঁচে থাকবে আমাদের মনে, আমাদের হৃদয়ে, এবং প্রজন্মের পর প্রজন্মের স্বপ্নে।

শুভ জন্মদিন, লিওনেল আন্দ্রেস মেসি।
তুমি অনন্ত।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”

শেয়ার করুন

লিওনেল মেসির আজ জন্মদিন

অমরত্বের পর থাকে উপভোগ: মেসির জন্মদিনে ফিরে দেখা একজন মানব-জাদুকরের যাত্রা

প্রকাশঃ ১০:৪৯:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

৩৮ বছর আগের এক সকালে জন্মেছিলেন তিনি। জন্মের সময় কেউ জানত না, ফুটবলের ইতিহাসে তাঁর নাম লেখা থাকবে সবচেয়ে উজ্জ্বল অক্ষরে। আজ ২৪ জুন, লিওনেল মেসির জন্মদিন। কিন্তু এটাকে শুধু জন্মদিন বললে বোধ হয় তাঁর প্রতি অবিচারই করা হয়। কারণ, মেসির জন্মের দিনটা যেন বিশ্ব ফুটবলের অলৌকিক কাব্যের সূচনা দিন।

মেসির জীবন শুরু হয়েছিল একটি স্যুটকেস, একটি ন্যাপকিন পেপারে লেখা চুক্তি, কিংবা একটি বাইসাইকেল ঘিরে গড়া কিছু ছোট ছোট স্মৃতি দিয়ে। তখন সেগুলো ছিল বিচ্ছিন্ন, সাধারণ মুহূর্ত একটা বালকের স্বপ্নের অসম্পূর্ণ খণ্ডচিত্র। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো জোড়া লেগে হয়ে উঠেছে এক মহাকাব্যিক গল্প, যে গল্পে মানুষ হয়ে জন্ম নেওয়া কেউ একজন পরিণত হন ঈশ্বরতুল্য এক শিল্পীতে।

আজ মেসির ৩৮তম জন্মদিনে আমরা ফিরে তাকাই সেই রূপকথার পথে, যেখানে আর্জেন্টিনার ছোট শহর রোজারিও থেকে শুরু করে কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামের আলো ঝলমলে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে অগণিত সোনালি মুহূর্ত। আমরা দেখি একটা পায়ের বাঁক, একটা পাস, কিংবা জালের ছিদ্র করে ঢুকে পড়া বল কীভাবে কোটি হৃদয়ের স্পন্দনে রূপ নেয়।

মেসি আজ অবসরের ধারে। তাঁর চাহিদা ফুরিয়েছে, তাঁর কাছে ফুটবল এখন শুধুই উপভোগ। যেন জীবনের শেষ পাতাগুলোয় নির্লিপ্তভাবে ভেসে চলছেন, রোজারিওর পারানা নদীর ধারে ছোটবেলার জাহাজগুলোর মতো করে। একসময় যারা বলত “মেসির দেশপ্রেম নেই”, তারাই আজ চোখের জল ফেলেছে বিশ্বকাপ ট্রফির ছোঁয়ায়।

যে ব্যর্থতা একসময় তাঁকে বিদায় বলতে বাধ্য করেছিল, সেই ব্যর্থতাই পরিণত হয়েছে তাঁর বিজয়ের ভিত্তি। তিনি ফিরেছিলেন, কারণ বাকি ছিল অসমাপ্ত একটি গল্প। আর সে গল্প পূর্ণতা পেয়েছে চোখ ভিজিয়ে, বুক ধড়ফড় করিয়ে, গোটা বিশ্বের উল্লাসে।

আজকের জন্মদিনে মেসি হয়তো নিজে অত কিছু ভাবছেন না। হয়তো মনে মনে বলছেন, “আমি সব পেয়ে গেছি।” কিন্তু আমাদের চাওয়া তো এখনো শেষ হয়নি। আমরা চাই, তিনি থাকুন আরও কিছুদিন। আরও কিছু মুহূর্তে আমাদের ক্লান্ত, ক্লিশে জীবনটায় ঝলক বয়ে আনুন।

২০২৬ সালে শেষবারের মতো ফুটবল বিশ্বকাপে নাম লেখাবেন হয়তো। সেটাই হবে শেষবার জন্মদিনে সক্রিয় মেসিকে দেখা। হয়তো সে দিন আরও একটি ট্রফি, কিংবা কেবল একটি শেষবারের হাঁটা নীরব, গোধূলির মতো শান্ত। কিন্তু মেসির গল্প শেষ হবে না সেদিনও। কারণ এই গল্পটা যে কেবল একজন ফুটবলারের নয়—এটা একজন মানুষের দেবদূত হয়ে ওঠার গল্প।

জন্মদিনে তাঁকে ঘিরে আমরা শুধু বলি এমন মানবজনম আর কি হবে।

শেষ কথা:
এই রচনার প্রতিটি শব্দে মেসি শুধু ফুটবলারের রূপেই নন, বরং একজন শিল্পী, একজন যোদ্ধা, একজন প্রেমিক, একজন অভিবাসী, একজন মানুষ হয়ে উপস্থিত যাঁর গল্প চিরকাল বেঁচে থাকবে আমাদের মনে, আমাদের হৃদয়ে, এবং প্রজন্মের পর প্রজন্মের স্বপ্নে।

শুভ জন্মদিন, লিওনেল আন্দ্রেস মেসি।
তুমি অনন্ত।

সর্বশেষ খবর পেতে অনুসরণ করুন- “প্রজন্ম কথা”